বিয়ের দাবিতে রায়হানের বাড়িতে কিশোরী
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিক রায়হান মল্লিকের বাড়িতে অনশন করেছে প্রেমিকা দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। বুধবার (১৯ জুন) উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সারেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বরিয়া গ্রামের আনিস মল্লিকের ছেলে রায়হান মল্লিকের সঙ্গে একই গ্রামের প্রেমিকা ওই শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এরই জেরে গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে প্রেমিকার মা বাসায় না থাকার সুযোগে প্রেমিক রায়হান বাসায় ঢুকে প্রেমিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে বাড়ির লোকজনের বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া দিলে রায়হান পালিয়ে যায়। এ ঘটনা মুহূর্তেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার প্রেমিকা প্রেমিক রায়হানের বাড়িতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ের দাবিতে অনশন করে। কিন্তু রায়হানের পরিবার ওই প্রেমিকা ও রায়হানের সম্পর্ক মেনে নেবে না বলে জানান। এমনকি প্রেমিকাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং বাসার গেটে তালা মেরে রাখে। পরে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে রায়হানের বাসার সামনেই বসে থাকে। মিতু জানান, রায়হান যদি তাকে বিয়ে না করে তাহলে সে আত্মহত্যা করবে। এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক রায়হান বাড়ি থেকে পালিয়ে আছে। এ বিষয়ে প্রেমিক রাহানের পরিবারের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। বাকেরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০ জুন, ২০২৪

মায়ের কাছে যেতে গিয়ে কার্নিশে আটকা কিশোরী
রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভবনের কার্নিশে আটকে পড়া এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বুধবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোনকলে তথ্য পেয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর পরিদর্শক (মিডিয়া) আনোয়ার সাত্তার জানান, চৌদ্দ বছর বয়সী মেয়েটির বাবা মারা গেছেন। মায়ের বিয়ে হয়েছে অন্যত্র। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের একটি ভবনে দাদির সঙ্গে থাকত সে। মায়ের কাছে যেতে চাইছিল অনেকদিন ধরে; কিন্তু দাদি যেতে দেননি। এ নিয়ে অভিমান ছিল। ঘটনার দিন সকালে আটতলা ভবনের সাততলা থেকে কার্নিশ বেয়ে নেমে মায়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে সে; কিন্তু কার্নিশে আটকে পড়ে। একজন এ অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে কল করেন। কলটি রিসিভ করেন ৯৯৯-এর কলটেকার এএসআই লোকমান হোসেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বারিধারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং ভাটারা থানায় জানান। সংবাদ পেয়ে বারিধারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের এবং ভাটারা থানা পুলিশের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সে সময় সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, থানা পুলিশ ও কলারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন ৯৯৯ ডেসপাচার ফায়ার ফাইটার মেহেদী হাসান। এরপর সাততলার একটি ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে জানালার গ্রিল কেটে কিশোরীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।
২০ জুন, ২০২৪

৯৯৯ নম্বরে ফোন, কার্নিশে আটকে পড়া কিশোরী উদ্ধার
রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভবনের কার্নিশ আটকে পড়া এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। বুধবার (১৯ জুন) জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯- এ এক প্রত্যক্ষদর্শীর ফোন কলে তথ্য পেয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।  বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯- এর পরিদর্শক (মিডিয়া) আনোয়ার সাত্তার। তিনি জানান, চৌদ্দ বছর বয়সী কিশোরীর বাবা মারা গেছেন। মায়ের বিয়ে হয়ে গেছে অন্যত্র। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের একটি ভবনে সে দাদির সঙ্গে থাকত। মায়ের কাছে যেতে চাইছিল সে অনেক দিন ধরে কিন্তু দাদি যেতে দেয়নি। এ নিয়ে দাদির ওপর অভিমান করে সে। বুধবার সকালে আটতলা ভবনের সাততলা থেকে কার্নিশ বেয়ে নেমে মায়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে কার্নিশে আটকে পড়ে। এ অবস্থায় একজন প্রত্যক্ষদর্শী ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে এক কিশোরীর কার্নিশে আটকে পড়ার তথ্য জানায়। কলটি রিসিভ করেছিলেন ৯৯৯ কলটেকার এএসআই লোকমান হোসেন। এএসআই লোকমান তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বারিধারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এবং ভাটারা থানায় দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানায়।    সংবাদ পেয়ে বারিধারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্ধারকারী দল ও ভাটারা থানা পুলিশের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, থানা পুলিশ ও কলারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলেন ৯৯৯ ডিসপাচার ফায়ার ফাইটার মেহেদী হাসান। অবশেষে আটতলা ভবনের সাততলার ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে জানালার গ্রিল কেটে কার্নিশ থেকে কিশোরীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। 
১৯ জুন, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭ বছরের এক কিশোরী। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে ভুক্তভোগী ওই কিশোরী নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা করে। এর আগে বুধবার (১৫ মে) গভীর রাতে উপজেলার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আড়াইহাজার থানার ওসি আহসান উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার ঘটনা সূত্রে জান যায়, আড়াইহাজার উপজেলার চামুরকান্দি এলাকায় ভুক্তভোগী ওই কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। ঘটনার দিন রাত আড়াইটার দিকে কিশোরীসহ তার মা ঘুমন্ত অবস্থায় অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৬ জন লোক দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় অভিযুক্তরা দেশি অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ঘর থেকে মুখ চেপে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তারা ওই কিশোরীর মাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো এবং হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। এ ব্যাপারে ওসি আহসান উল্লাহ জানান, পূর্ব কোনো শক্রতা থেকে এই ঘটনা ঘটাতে পারে। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছে। ভুক্তভোগী কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
১৭ মে, ২০২৪

অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিল কিশোরী
এসএসসি পরীক্ষায় অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে নোয়াখালীর এক কিশোরী। রোববার (১২ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের কালিতারা বাজার সংলগ্ন আলী আজম বেপারির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।   মৃত তানজিনা আক্তার ঝুমি (১৬) নোয়াখালী পৌরসভার সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের মেয়ে। সে স্থানীয় কালিতারা মুসলিম গার্লস একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফখরুদ্দিন মাহমুদ বলেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে তানজিনার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সে গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় দুপুর সোয়া ১টার দিকে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বসতঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ওই সময় তার মা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত ছিল। পরে তিনি ঘরে এসে মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।  সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় গণস্বাক্ষর নিয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

জালিয়াতি করে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
জামালপুরের ইসলামপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কো-অর্ডিনেটরদের সম্মানী ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে।  জানা যায়, গত ২০২০ সালে মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধিনে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ মোট ১৩টি ক্লাব স্থাপন করা হয়। পরে ক্লাবগুলো তদারকির জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের একজন করে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের জন্য প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা সম্মানী ভাতা বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। উপজেলা মহিলাবিষয়ক অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে কো-অর্ডিনেটরদের জন্য বরাদ্দকৃত ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্বে থাকা সংরক্ষিত ইউপি সদস্যদের মাঝে বিতরণ দেখানো হয়। তবে সেই টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন দায়িত্ব থাকা কো-অর্ডিনেটররা। পাথর্শী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, আমি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের দায়িত্বে আছি এটা শুনেছি। ইতোপূর্বে আমি কোনো টাকা পয়সা পায়নি। রোববার (৫ মে) আমার স্বামীর কাছে রশিদ নামে একজন ৬ হাজার টাকা দিয়েছে। তার নামে ১২ হাজার টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নামে কত টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এটা আমি জানি না। চরগোয়ালিনি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত সদস্য রুসনাই বেগম বলেন, আমাকে চলতি মাসের ১ তারিখে ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে। আমার নামে কত বরাদ্দ সেটা আমি জানি না। টাকা দেওয়ার কথা ছিল গত দেড় বছর আগে। রেজিস্ট্রার আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাৎ করেছিল, আর সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের মাধ্যমে আট দিন আগে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা পেয়েছি। অবশিষ্ট টাকা পেতে আজ অফিসে এসেছি। সরকারি কর্মকর্তারা যদি স্বাক্ষর জাল করে জনপ্রতিনিধিদের টাকা আত্মসাৎ করে, তবে সাধারণ মানুষ এদের কাছ থেকে কতটুকু নিরাপদ সহযোগিতা কামনা করতে পারে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। এ সময় কথা হয় বর্তমান সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মুনজুরা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি কয়েক দিন মহিলাবিষয়ক অফিসে গেছি এই টাকার জন্য। তারা বলছে বরাদ্দ আসেনি এলে পাবেন। গত দুদিন আগে আমাকে ইসলামপুর বাজারে ডেকে নিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে। আমার নামে ১২ হাজার টাকা বিতরণ দেখানো হয়েছে এটা আমি জানি না। বিতরণকৃত টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কামরুন্নাহার বলেন, আমি আমার অফিস স্টাফকে টাকা বিতরণের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। বিতরণ করে আমাকে রেজিস্ট্রার দিয়েছে আমি তাতে স্বাক্ষর করেছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটররা টাকা পেয়েছে কি না জানি না। তবে তাদের ডেকে বিষয়টি শুনব। এ ব্যাপারে ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। এরকম অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৬ মে, ২০২৪

কিশোরী উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মন্দিরে আগুন
গ্রামজুড়ে সুনসান নীরবতা। হৈ-হুল্লোড় তো দূরের কথা, কোথাও নেই সাধারণ ভিড় বা জটলা। বোরো ফসল তোলার জন্য নেই বৈশাখের নিয়মিত কর্মচাঞ্চল্য। তার পরিবর্তে গ্রামের সর্বত্র টহল দিচ্ছেন পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যেন অঘোষিত এক যুদ্ধাবস্থা। কোনো কোনো বাড়ির উঠানে খাঁচায় বন্দি হাঁস-মুরগি আর গোয়ালে গরু রেখে উধাও হয়ে গেছেন বাসিন্দারা। তাই চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে নির্বোধ প্রাণীগুলো। অনেক বাড়ির সব ঘরেই ঝুলছে তালা। কোনো কোনো বাড়িতে দু-একজন নারীর দেখা মিললেও ঘরের ভেতর বন্দি হয়ে আছেন তারা। যেন নিঃশ্বাসও ফেলছেন নিঃশব্দে। সব মিলিয়ে চারদিকে থমথমে, গুমোট পরিবেশ। ফরিদপুরের মধুখালী থানার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী এলাকায় সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রামটির কৃষ্ণনগর এলাকায় পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই বারোয়ারী কালীমন্দির। এই বিদ্যালয় আর মন্দির ঘিরেই গত ১৮ এপ্রিল ঘটে গেছে মর্মান্তিক এক ঘটনা। মন্দিরের কালী প্রতিমায় আগুন দেওয়াকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যা করা হয় নির্মাণ শ্রমিক সহোদরকে। সে সময় আহত হন আরও দুজন। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার পর জল গড়িয়েছে বহুদূর। দুই ভাইকে পেটানোর কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। ভিডিওতে স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে দেখা যায় ওই শ্রমিকদের প্রথম আঘাত করতে। এরপরই উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দিতে শুরু করে। তাতেই মারা যান দুই ভাই আসাদুল ও আশরাফুল। কীভাবে মন্দিরের কালী প্রতিমায় আগুন লাগল, এই অপকর্মে কারা জড়িত— এ প্রশ্ন এখন সবার। সেইসঙ্গে এত অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে সেখানে হাজারো গ্রামবাসী জড়ো হলেন, তা নিয়েও রয়েছে বিস্তর আলোচনা। এসব প্রশ্নের উত্তর মেলানোর চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। আর শ্রমিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার শঙ্কা ও পাল্টা হামলার ভয়ে গ্রাম ছেড়েছেন পঞ্চপল্লীর পুরুষরা। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম কালবেলাকে জানান, মধুখালী থানায় মন্দিরে আগুন, দুই নির্মাণ শ্রমিককে হত্যা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৩ জন। তবে আগুন দেওয়া, হামলার নেপথ্যে কারা আছে, সেসব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তদন্ত চলছে। কী ঘটেছিল ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায়: কৃষ্ণনগর এলাকায় পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর বারোয়ারী কালীমন্দিরের মধ্যে ব্যবধান মাত্র একটি বটগাছের। বিদ্যালয়টিতে বেশ কিছুদিন ধরে শৌচাগার নির্মাণে কাজ করছিলেন সাত-আটজন শ্রমিক। তাদের বাড়ি অন্য গ্রামে হওয়ায় রাতেও স্কুলের একটি কক্ষেই ঘুমাতেন। সরেজমিন স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে এই মন্দিরের দেখাশোনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে মন্দিরের পাশেই থাকা প্রভাস মণ্ডলের পরিবার। যুগযুগ ধরে সেই পরিবারের নারীরাই এই মন্দিরে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রদীপ দেন। বর্তমানে মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাতেন প্রভাসের স্ত্রী। এ ছাড়া মাঝে মাঝে তাদের কলেজ পড়ুয়া মেয়েও মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাতে যেতেন। ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায়ও গিয়েছিলেন প্রভাসের কন্যা। মন্দিরে যাওয়ার পথে শ্রমিকদের মধ্যে কেউ ওই কিশোরীকে উদ্দেশ করে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এ নিয়ে কিশোরীর মা-বাবার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান অভিযুক্ত শ্রমিকরা। এর কিছুক্ষণ পর তপতী ও প্রভাস মন্দিরে গিয়ে দেখতে পান, এক শ্রমিক লাইটার দিয়ে কালী প্রতিমার শাড়িতে আগুন দিয়ে মন্দির থেকে নামছে। এ সময় তারা চিৎকার করতে করতে নিজেরাই আগুন নেভান। স্থানীয়রা জানান, তাদের চিৎকারে আশপাশের বাড়ির ১০-১২ জন নারী-পুরুষ এসে জড়ো হন। সে সময় শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজন প্রতিমায় আগুন লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করছিলেন। তবে দু-একজন আবার ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলছিলেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে শ্রমিকরা রড নিয়ে আসা নছিমন গাড়িতে করে পালানোর প্রস্তুতি নেন। কিন্তু নছিমন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা যেতে পারেননি। এরই মধ্যে গ্রামের মানুষ এবং স্থানীয় চৌকিদার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। চৌকিদার ফোনে স্থানীয় ইউপি মেম্বার অজিত কুমার বিশ্বাসকে ঘটনা জানালে তিনিও সেখানে আসেন। মোবাইল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তখন আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে আতঙ্কে অভিযুক্ত শ্রমিকদের বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে বন্ধ করে রাখেন ইউপি সদস্য অজিত। পরে আরেক ইউপি সদস্য লিংকন বিশ্বাসও ঘটনাস্থলে হাজির হন। উত্তেজিত জনতা এক পর্যায়ে ‘ধর ধর’ বলে ইটপাটকেল, রড, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে কক্ষের দরজা-জানালা ভাঙতে শুরু করে। উত্তেজনা বাড়তে থাকলে অজিত কুমার চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপনকে ফোন করে ডেকে আনেন। চেয়ারম্যান এসেই সোজা কক্ষের ভেতরে যান। এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রমিকদের জেরা করার একপর্যায়ে তাদের মারধর করে মন্দিরে আগুন দেওয়ার কারণ জানতে চাইছেন ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি মার শুরু করার পরই মূলত পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। এককথায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উত্তেজিত জনতা মেম্বার এবং চেয়ারম্যানের কথা পাত্তা না দিয়ে শ্রমিকদের মারধর শুরু করেন। এ সময় চেয়ারম্যান শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে থানায় ফোন করেন। খবর পেয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু উত্তেজিত জনতা তাদেরও অবরুদ্ধ করে। পরে ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে আসেন। রাত ১১টার পর রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে স্থানীয় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। ততক্ষণে ঘটনাস্থলেই মারা যান নির্মাণ শ্রমিক দুই ভাই। এ ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘কোনো মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে কি না, সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান আঘাত করার পরই এই গণহামলার ঘটনা ঘটেছে। ইউপি মেম্বার এবং চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই ঘটনা সম্পর্কে জানা যাবে। তাদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান চলছে।’ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ল ঘটনা: গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল ঘটনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টার দিকে। প্রথমে কয়েকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে কয়েকজন মোবাইলে পোড়া মূর্তির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ছড়িয়ে যায়। আশপাশের সব গ্রামের লোকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় খুব সহজেই বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া দিনের কাজ শেষে কয়েক গ্রামের মানুষ স্থানীয় বাজারে আড্ডা দেয়। কৃষ্ণনগর এলাকার যেসব লোকজন বাজারে উপস্থিত ছিলেন, তাদের মাধ্যমে অন্য গ্রামের লোকজনের মধ্যেও বিষয়টি জানাজানি হয়। এভাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজার হাজার লোক ওই মন্দিরের সামনে চলে আসেন। শান্তির গ্রামে আতঙ্কের ছায়া: সাত বছর বয়সে পঞ্চপল্লী গ্রামে বধূ হয়ে এসেছিলেন সেঁজুতি বিশ্বাস। তার বয়স এখন সত্তরের বেশি। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘এত বছরে এই গ্রামে কখনো এমন ঘটনা দেখিনি। এখানে সবাই কৃষিকাজ করে চলি। দিন এনে দিন খাই। এই স্কুলে অনেক মানুষ কাজ করতে এসেছে। হিন্দু হোক আর মুসলিম হোক—কারও সঙ্গে আমাদের কিছু হয়নি। তারা আমাদের ঘরে খেয়েছে, জল নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেটা ১০ দিন ধরে বাড়িতে নেই। কই আছে জানি না। শুনেছি, ফিরলেই নাকি পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। ঘরের খাবারও শেষ। হাতে একটা টাকাও নেই। আমরা তো কিছু করিনি, আমাদের কেন এমন হবে?’ এমন আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছেন গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারগুলো। পুলিশের পাহারায় থাকা গ্রামে প্রবেশ করছেন না কেউ। একাধিক নারীর ভাষ্য, ‘বাড়ির পুরুষরা আমাদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেও ভয় পায়। কে যে কই আছে, জানি না। এই অবস্থা কি কোনোদিন শেষ হবে না?’ কথা হয় পঞ্চপল্লী গ্রামের অদূরে কয়েকটি মুসলিম পরিবারের সঙ্গে। তারা বলেন, ‘কখন যে কী হয় বুঝতে পারছি না। শুনেছি, আরও হামলা হতে পারে। এসব হামলা করে লাভ কী। মারা তো যাবে মানুষই!’ পঞ্চপল্লী গ্রামে নিরাপত্তার দায়িত্বে আসা পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের একজন এসআই জানান, ‘উপরমহল থেকে নির্দেশ আছে যেন কোনোভাবেই কোনো সহিংস ঘটনা না ঘটে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে উত্তেজনা সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত টহল চলবে। যেন বাইরে থেকে কোনোভাবেই এখানে হামলা না হয়। এজন্য ফরিদপুর সদর থেকে মধুখালী পর্যন্ত মোড়ে মোড়ে পুলিশ পাহারায় আছে।’ সার্বিক বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার কালবেলাকে বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত নাকি আকস্মিক ঘটনা, তা তদন্ত শেষ না হলে বলা যাবে না। এরই মধ্যে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ আসামিদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আমি বলতে চাই, তারা যেন আত্মসমর্পণ করেন। যদি তারা সেটা না করেন, তাহলে তাদের ধরিয়ে দিতে কেউ তথ্য দিলে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। কোনো আসামি যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন বিমানবন্দর, পোর্ট, বন্দরগুলোকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।’ মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক কালবেলাকে বলেন, ‘নির্মাণ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা কে বা কারা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং চেয়ারম্যানের শতভাগ ব্যর্থতা রয়েছে। আমি এবং মধুখালী থানার ওসি ঘটনাস্থলে যাওয়া পর্যন্ত তিনি বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এ ছাড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি নিজেই শুরুতে শ্রমিকদের মারধর করছেন। এ ছাড়া আগুন দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিকরা যে জড়িত, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ মেলেনি।’ মধুখালী থানার ওসি মিরাজ হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারেও চেষ্টা চলছে।’
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

যুব মহিলা লীগ নেত্রীর বাসা থেকে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারের পর নিজ জিম্মায় নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি রাজিয়া সুলতানা মনি ও তার স্বামী ছানি বন্দুকছির বিরুদ্ধে।  অভিযুক্ত রাজিয়া আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচরে রাজিয়ার বাড়ির একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে নড়িয়া থানা পুলিশ।  এর আগে গত ১৯ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার ফতেজঙ্গপুর ইউনিয়নের খড়করা এলাকায় ভুক্তভোগী কিশোরীর নানা বাড়ির সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে একই এলাকার আলমগীর চৌকিদারের ছেলে দিপু চৌকিদার (২০)। ওইদিন রাতেই কিশোরীর মা বাদী হয়ে দিপুকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  পরে খড়করা এলাকা থেকে কিশোরীটিকে উদ্ধার করে রাত ৩টার দিকে কিশোরীর নিকটাত্মীয় রাজিয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরদিন কিশোরীটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করেন অভিযুক্ত নেত্রী। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরীর মা ও বাবা নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্যর শরণাপন্ন হলে তিনি নড়িয়া থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে দুপুর ২টার দিকে রাজিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে কিশোরীটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, আমার মেয়ে অপহরণ হওয়ার পর পুলিশ উদ্ধার করে। রাত হয়ে যাওয়ায় আমার আত্মীয় রাজিয়া সুলতানা মনির বাসায় মেয়েকে নিয়ে যাই। কিন্তু সে আমার মেয়েকে নিয়ে আটকে রাখে। রাজিয়া নির্বাচন করবে। যারা আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে তারা রাজিয়া সুলতানার কর্মী। তাই আমার মেয়েকে আটকে রেখে আবার তাদের কাছে দিতে চেয়েছিল। রাজিয়া সুলতানার স্বামী ছানি বন্দুকছি মুঠোফোনে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। ঐ মেয়েটি তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটির মা সম্পর্কে আমার স্ত্রীর খালাত বোন হওয়ায় আমি এবং আমার স্ত্রী পুলিশ নিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিরাপত্তাজনিত কারণে আমার বাড়িতে রাখি। নড়িয়া থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কিশোরীটিকে প্রথমবার উদ্ধার করে কিশোরীর মা ও যু্ব মহিলা লীগ নেত্রী রাজিয়া সুলতানা মনির জিম্মায় দেওয়া হয়। কিন্তু আজ মেয়েটির মা এসে রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে আমরা তার বাড়ি থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় কিশোরীটিকে উদ্ধার করি। পরে থানায় জিডি নিয়ে কিশোরীটিকে পুনরায় তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

বিটিএসের টানে ঘর ছাড়ল নারায়ণগঞ্জের কিশোরী
কোরিয়ান ব্যান্ডদল বিটিএসের টানে ঘর ছেড়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এক কিশোরী। ওই কিশোরী মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় বান্ধবীদের প্ররোচনায় বিটিএস সম্পর্কে আসক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়েটির বাবা।  সম্প্রতি একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে ওই কিশোরী। এ ঘটনায় নিখোঁজ মেয়েকে খুঁজে পেতে তার বাবা শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আজম। এর আগে গত বুধবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের শিয়াচর এলাকার বাসা থেকে পালিয়ে যায় বিটিএস ভক্ত ওই কিশোরী। নিখোঁজ মেয়ের বাবা জানান, আমার মেয়ে বান্ধবীদের কাছ থেকে বিটিএস সম্পর্কে জানতে পারে বলে ‍শুনেছি। আমরা যখন কাজে যেতাম তখন সে বাসায় একা অবস্থায় মোবাইলে গেমস খেলতো এবং ইউটিউবে গান ও বিভিন্ন মুভি দেখতো। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমার মেয়ে অনলাইন কিছু গ্রুপে জয়েন করে। সব সময় এটা নিয়েই ব্যস্ত থাকতো। এ কারণে প্রায় সময় আমরা শাসন করতাম। কিন্তু সে আমাদের কথা শুনতো না।  তিনি বলেন, আমার মেয়ে গত বছর স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। গত বুধবার আমার মেয়ে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারপর থেকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না আমরা। কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় নিখোঁজের জন্য জিডি করেছি। আমার মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বিটিএস এর কিছু ছবি রেখে গেছে।  তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে শাসন করলে প্রায়ই সময় সে বলতো আমি কোরিয়া চলে যাবো। শুনেছি গাজীপুরের বিটিএস গ্রুপের কয়েকজনের প্রলোভনে পড়েছে সে। আমার মেয়ের এখনো কোনো খোঁজ পাইনি। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ধার করলে হয়তো মেয়েকে ফিরে পাবো। বিটিএস গ্রুপের নামে কোনো অসামাজিক গ্রুপে জড়িয়ে গেল কিনা সেই চিন্তায় আছি। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আজম জানান, একটি মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে তার বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখছি। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মেয়েটিকে বের করার ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

কিশোরী ধর্ষণে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার
সিলেটে কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার রাতে গোলাপগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আব্দুস সালাম ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। গতকাল র‌্যাব-৯ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক মো. মোমিনুল হক। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরীর মা মামলা করার পর আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে র‌্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোলাপগঞ্জে অভিযান চালিয়ে সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান। সালামের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪
X