এয়ারবাস কেনার দিকে যাচ্ছে বিমান
ইউরোপভিত্তিক এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রতিষ্ঠানটি থেকে যাত্রীবাহী চারটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে। এরই মধ্যে এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব ইভ্যালুয়েশন কমিটি থেকে বিমান পরিচালনা বোর্ড নেগোসিয়েশন কমিটিতে রয়েছে। গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে বিমানের বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) আলোচনা থেকে এসব ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও বর্তমানে বিমানের বহরে থাকা ২১টি এয়ারক্রাফটের মধ্যে ১৬টিই মার্কিন এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির। বছরখানেক ধরেই রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমানের জন্য এয়ারবাস থেকে উড়োজাহাজ কেনার আলোচনা ছিল। এরপর ওই কোম্পানি থেকে বিক্রির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এরই মধ্যে বোয়িং কোম্পানির পক্ষ থেকেও এয়ারক্রাফট বিক্রির প্রস্তাব আসে বিমানের কাছে। দুটি প্রস্তাবনা যাচাই করে দেশের জন্য যেটি ভালো ও লাভজনক, সেটি কেনার কথা বলে আসছিলেন বিমান কর্মকর্তারা। গতকাল ‘এভিয়েশন ও ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম (এটিজেএফবি)’ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম। তিনি বলেন, এয়ারবাস ফ্লাইট কেনার জন্য দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রথমটাতে দুটি কার্গো ফ্লাইট বিক্রির কথা বলা হয়েছিল। আমাদের মনে হয়েছে, আপাতত আমাদের কার্গো বিমান কেনার দরকার নেই। তবে আমরা যাত্রীবাহী বিমান বহর বাড়ানোর ইচ্ছার কথা জানাই। তখন এয়ারবাস আমাদের চারটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট বিক্রির দ্বিতীয় প্রস্তাব পাঠায়। এ প্রস্তাব আগের প্রস্তাবের চেয়ে ভালো ছিল। তিনি বলেন, ‘এয়ারবাসের সেই প্রস্তাব ইভ্যালুয়েশন কমিটি থেকে বিমানের বোর্ডে যায়। বোর্ড এ বিষয়ে এগোনোর নির্দেশনা দিয়ে নেগোসিয়েশন কমিটিতে পাঠিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, আমরা এখন এয়ারবাসের অফারগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের বহরের সব বড় এয়ারক্রাফট বোয়িংয়ের। কিছু ডাইভার্সিটি, নতুন এয়ারক্রাফট থাকলে যাত্রীরাও পছন্দ করবে। বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, যে কোনো সময় যে কোনো কোম্পানির এয়ারক্রাফট খারাপ পারফর্ম করতে পারে, তখন যেন রিস্কে না পড়ি সে কারণে ডাইভার্সিফাইয়ের কথা ভাবছি। বোয়িং কোম্পানির পক্ষ থেকে এয়ারক্রাফট বিক্রির প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, বোয়িংও আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেটাও ইভ্যালুয়েট করব। বোয়িংয়ের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের ভালো সম্পর্ক। শুধু প্লেন কেনাবেচা সম্পর্ক নয়, তাদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট ভালো, ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ভালো। সব মিলিয়ে আমরা একসঙ্গে ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে যে এয়ারক্রাফটই কিনি না কেন, দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাবে ক্রেতা হিসেবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। মতবিনিময় সভায় বিমানের লাভ-লোকসানের আলোচনার বিষয়টিও সামনে আসে। সাংবাদিকরা বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জানতে চান, বিমান আসলে লাভে নাকি লোকসানে? বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমান গত ১০ বছরের ৮ বছরই লাভে ছিল। যে দুই বছর লোকসান হয়েছে, তার মধ্যে এক বছর করোনাভাইরাসের আধিক্য ছিল, আরেকবার আমাদের মোটা অঙ্কের পেমেন্ট পরিশোধ করতে হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, গত বছর ডলারের সমস্যা ছিল, বিশ্বে দুটি যুদ্ধ চলমান, এর মধ্যেও আমরা লাভ করেছি। বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান দিয়ে অডিট করা হয়েছে আমাদের লাভের বিষয়ে। আমরা বিমানে নিয়মিত নিয়োগ দিচ্ছি, বেতন দিচ্ছি, বোনাস দিচ্ছি, প্রোফিট বোনাস দিচ্ছি। লাভ না হলে এসব টাকা কোথা থেকে আসছে? ‘যারা বলে বিমান লাভে নেই, আমি একটা কথাই বলব, আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করুক’—বলেন বিদায়ী এমডি। বিমানে অল্প সময়ের মধ্যে এমডি ও সিইও পরিবর্তন হয়। প্রতিষ্ঠানটির জন্য দীর্ঘমেয়াদি এমডির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না? এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বিমানের হিউম্যান রিসোর্স মানসম্মত, টেকনিক্যাল রিসোর্স মানসম্মত। যে কোনো প্রতিষ্ঠানে সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাঁড় করানো গেলে এমনিতেই কাজ হবে। আমি এসব সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি। সিস্টেম ঠিক থাকলে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর প্রতিষ্ঠান নির্ভর করবে না। তিনি বলেন, বিমানে সরকারি অফিসের মনমানসিকতা প্র্যাক্টিস করলে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করবে না। এটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সবকিছু বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা করতে হবে। মতবিনিময় সভায় এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার, সহসভাপতি রাজীব ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরুল কাউসার ইমনসহ এটিজেএফবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
৩০ মে, ২০২৪

এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব মূল্যায়ন করছে বিমান
ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস বাংলাদেশের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা মূল্যায়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। প্রস্তাবটি মূল্যায়নে বিমানের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে সফররত এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এয়ারবাস গ্রুপের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াটার ভ্যান ওয়ার্শের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসডুপে ও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশের ফ্লিট সম্প্রসারণের জন্য আমরা নতুন উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এর অংশ হিসেবে এরই মধ্যে এয়ারবাস তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সেই প্রস্তাব মূল্যায়নে কমিটি গঠন হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বোয়িং কোম্পানিও তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এটিও যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করা হবে। বাংলাদেশ ও বিমানের জন্য যেটি ভালো হবে, সেটিই করা হবে। এভিয়েশন শিল্প মানে শুধুই উড়োজাহাজ বা বিমানবন্দর নয়, উল্লেখ করে প্রতিনিধিদলকে ফারুক খান বলেন, এর অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো দক্ষ মানবসম্পদ। আমরা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছি। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশে এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া এভিয়েশন শিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দিতে আমাদের কিছু প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এয়ারবাসের এখানে কাজের সুযোগ রয়েছে। বৈঠকে এয়ারবাসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। একটি টেকসই এভিয়েশন শিল্প নিশ্চিতে এয়ারবাস বাংলাদেশের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চায়। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এর ১৬টিই মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের তৈরি। ড্যাশ-৮ মডেলের পাঁচটি কানাডার ডি-হ্যাভিল্যান্ডের। গত বছর এয়ারবাস বাংলাদেশে উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দেয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি থেকে কার্গোসহ ১০টি উড়োজাহাজ কেনার আলোচনা শুরু হয়।
১৬ মে, ২০২৪

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস
বেসরকারি এয়ারলাইন্স সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে যুক্ত হয়েছে এয়ারবাস। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩৩০-৩০০ মডেলের এই এয়ারবাস। এভিয়েশন রীতি অনুযায়ী ওয়াটার ক্যানন স্যালুট প্রদানের মাধ্যমে সেটিকে অভ্যর্থনা জানান ইউএস-বাংলার কর্মকর্তারা। বৃহদাকার এ উড়োজাহাজের আসন সংখ্যা ৪৩৬টি। দেশের কোনো এয়ারলাইন্সে এই প্রথম কোনো এয়ারবাস যুক্ত হলো।  রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ দেশের বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে আমেরিকার কোম্পানি বোয়িংয়ের উড়োজাহাজের আধিক্য বেশি। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও আগামি কয়েক বছরে এয়ারবাস থেকে ১০ টি উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে কথাবার্তা চালাচ্ছে।  ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এয়ারবাসটি চীনের গুয়াংজু থেকে শুক্রবার বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সংযোজিত এয়ারক্রাফটকে গ্রহণ করেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ক্যাপ্টেন লুৎফর রহমান।  তিনি জানান, নতুন যুক্ত হওয়া এয়ারবাসের এয়ারক্রাফটটি ছাড়াও বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে বিভিন্ন মডেলের আরও ২২টি উড়োজাহাজ রয়েছে। এরমধ্যে  ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ১০টি এটিআর ৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট। শিগগিরই আরও একটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ যুক্ত হচ্ছে বহরে।  নতুন যুক্ত হওয়া এয়ারবাসটি দিয়ে ভবিষ্যতে সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম সহ লন্ডন ও রোম রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা জানিয়ে ইউএস-বাংলার এই কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে দুবাই, শারজাহ, মাস্কাট দোহা ও কুয়ালালামপুর রুটে এটি পরিচালিত হবে।  ইউএস-বাংলার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এয়ারবাস ছাড়াও গতকাল ভোরে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের অপর একটি উড়োজাহাজ যুক্ত হয় তাদের বহরে। বেসরকারি এই এয়ারলাইন্স সংস্থাটি বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সব রুটসহ নিয়মিত কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর ও গুয়াংজু রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। 
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে চায় এয়ারবাস
বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে চায় ইউরোপীয় বৃহৎ বিমান কোম্পানি এয়ারবাস। মূলত, আন্তঃইউরোপীয় কোম্পানিসমূহের একটি কনসোর্টিয়াম এই বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি শিগগিরই বাংলাদেশের জাতীয় এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ বিমানের বহরে ১০টি সুপরিসর বিমান যুক্ত করতে যাচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশি সাংবাদিকদের একটি দল ফ্রান্সের তুলুজ শহর এয়ারবাসের সদর দপ্তর পরিদর্শনকালে বাংলাদেশে এয়ারবাসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ মোরাদ বোরো-ফালা বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে বিমান চলাচল খাতে অভূতপূর্ব সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।’ এয়ারবাস প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতের বাজার এখনও পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করা হয়নি। তাই তাদের কোম্পানি এদেশে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ এ বিশ্বাস করি এবং আমরা এর অংশী হতে চাই।’  তিনি জানান, একটি আঞ্চলিক বিমান চলাচল কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ঢাকার স্বপ্নের সঙ্গে সংগতি রেখে, এয়ারবাস নতুন প্রজন্মের সুপরিসর বিমান ও দক্ষ বিমান ক্রু দিয়ে এয়ার ট্রান্সপোর্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায়। এ সময় ইউরোপে মহাকাশের রাজধানী হিসেবে বিবেচিত তুলুজে বাংলাদেশি সংবাদকর্মীদের ব্রিফিং করতে এয়ারবাসের মার্কেটিং ভাইস প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও দ্য কস্তা ও ওয়াইড-বডি মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জুয়ান ক্যামিলো রোদ্রিগেজ বোরো-ফালার সঙ্গে ছিলেন। তাদের ব্রিফিং এমন একটি সময়ে হয়েছে যখন দুটি মালবাহী বিমানসহ ১০টি সুপরিসর এ৩৫০ এয়ারক্রাফট বিক্রির বিষয়ে ইউরোপীয় বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানিটির সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা চলছে।  এয়ারবাস এ৩৫০ মডেলের প্রথম ফ্লাইটটি হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৪ জুন। গত ১০ বছরে এই ইউরোপীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি ৫৫২টি এ৩৫০ বিমান সরবরাহ করেছে, যেসব বিমান ১ হাজার ৭১ রুটে চলাচল করেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মাসে ঢাকা সফরে এসে এয়ারবাস বিমান ক্রয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশের আগ্রহের প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘ইউরোপীয় বিমান চলাচল শিল্পের ওপর আপনাদের আস্থা রাখার জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই এবং ১০টি এ৩৫০ এয়ারবাসের ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।’ উল্লেখ্য, বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালিত বিমান বাংলাদেশের বহরে ২১টি বিমান রয়েছে। যার বেশিরভাগই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারবাসের আর্কারাইভাল বোয়িং বিমান। বহরে থাকা বিমানগুলোর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০ কানাডার তৈরি বিমান। মোরাদ বলেন, ‘আজ আমরা বাংলাদেশকে যেভাবে দেখেছি, তা কেবল লেনদেনের মানসিকতা নিয়ে নয়, যে আমরা কিছু বিক্রি করব এবং দেশ ছেড়ে চলে যাব। বরং, এয়ারবাস বাংলাদেশে সুদক্ষ পাইলট ও রক্ষণাবেক্ষণ ক্রুদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী মানবসম্পদ গড়ে তুলতেও প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, এয়ারবাস ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মেধাবী কর্মী গড়ে তুলতে সহযোগিতা করছে। এয়ারবাস নির্বাহী কর্মকর্তারা আরও জানান, তাদের কোম্পানি এখন রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, ওভারহল (এমআরও) ডিজিটাল সমাধান ইনস্টল করতে ও বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে তার দক্ষতা এবং জ্ঞান প্রদান করতে প্রস্তুত। কোম্পানিটি এখন নিয়ন্ত্রণ, ফ্লাইট নিরাপত্তা, প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যাভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) ও সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সুবিধা দিতে চায়। মোরাদ বলেন, এয়ারবাস ইতোমধ্যেই বাংলাদেশি অপারেটরদের রক্ষণাবেক্ষণ ও ফ্লাইট পরিচালনার পাশাপাশি উন্নত এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সমাধানের জন্য সর্বোত্তম মানের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতার জন্য সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিমান ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের বিমান চলাচল বৃদ্ধি ও নতুন রুটের অন্বেষণ অনেকাংশে স্তব্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের নিজস্ব বিমানগুলো বর্তমানে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের ২৫ শতাংশেরও কম যাত্রী নিয়ে চলচল করছে, আর বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো অবশিষ্ট আন্তর্জাতিক যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছে। রোদ্রিগেজ বিভিন্ন দেশের জিডিপি আকার ও বিমান ভ্রমণকারীদের সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে বিমান চালনার সম্ভাবনার ওপর একটি তুলনামূলক গবেষণা উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, এয়ারবাসের গবেষণায় দেখা গেছে ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বিমান ভ্রমণকারী ২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হবে। রাষ্ট্রচালিত ও বেসরকারি এয়ারলাইন্সে এখন যৌথভাবে ১০টি সুপরিসরসহ ৩৬টি বিমান রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের জিডিপি মূল্য ৪১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর সারা বিশ্বে যেখানে ৭.৫ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। পাশাপাশি এয়ারবাস সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ভিয়েতনামে ৩৫টি সুপরিসর বিমানসহ মোট ১৮৭টি বিমান রয়েছে।  গ্লোবাল মার্কেট ফোরকাস্ট নামে আরেকটি এয়ারবাস সমীক্ষায় ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, ২০৪২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ১০৫টি ছোট পরিসর এবং ৫৫টি সুপরিসর বিমান প্রয়োজন, যা তার বর্ধিত বিমান ভ্রমণকারীদের চাহিদা মেটাতে পারে।  উল্লেখ্য, গত মে মাসে লন্ডনে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা ও বাণিজ্য বিভাগের প্রতিমন্ত্রী লর্ড ডমিনিক জনসন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মধ্যে বাংলাদেশের বিমান চলাচল খাতের উন্নয়নে একটি বিমান চলাচল ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি যৌথ ইশতেহার স্বাক্ষরিত হয়।  সূত্র: বাসস
২৩ অক্টোবর, ২০২৩

কমিশন পেতে এয়ারবাস কিনতে চায় সরকার - মির্জা ফখরুল
কমিশন পেতেই সরকার ফ্রান্স থেকে ১০টি এয়ারবাস কিনছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই যে দেখেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এলেন। খুব ভালো কথা, আমাদের বড় মেহমান। সেই মেহমানকে আপনারা নাচ-গান দিয়ে স্বাগত জানিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছেন। দেশের মানুষ এ করুণ অবস্থার মধ্যে খেতে না পেয়েও ভেবেছে যে, বোধহয় কিছু হচ্ছে; কিন্তু কী হলো? বলা হলো, ১০টা এয়ারবাস কেনা হবে। আসল লক্ষ্য—এ এয়ারবাসে ফিডব্যাক পাওয়া যায়। মানে হচ্ছে কমিশন। বোয়িংয়ে কমিশন পাওয়া যায় না। এ কারণে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে। আর কী? স্যাটেলাইট-২। আবার প্লান্ট তৈরি করা হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক তিন দিনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, তাইফুল ইসলাম টিপু, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-ড্যাবের ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. আব্দুস সালাম, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। পরে বিএনপি মহাসচিবসহ নেতারা পথচারী, যানবাহন চালক ও যাত্রীদের হাতে লিফলেট তুলে দেন। এ ছাড়া বিকেলে ঢাকা উত্তরে মিরপুর জোনে মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেটের কাছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় বিএনপি নেতা আমিনুল হক, তাবিথ আউয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সরকারের সমালোচনা করে সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষকে খেতে দিতে পারে না, অসুখ নিরাময় করতে পারে না, হাসপাতাল তৈরি করতে পারে না, স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারে না, ভোটের অধিকার দিতে পারে না। যে বিমান (বাংলাদেশ বিমান) ভেঙে পড়ছে, কোনো সার্ভিস ঠিকমতো দিতে পারে না, সেই বিমানের জন্য সরকার ১০টি এয়ারবাস কিনে দেবে। তাতে চুরি করার সুবিধা হবে এবং তারা ইমিডিয়েটলি বোধহয় কমিশনও কেটে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে ডেঙ্গু মশার চেয়েও ভয়াবহ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এখানে দুটি সিটি করপোরেশনে জোর করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তারা ডেঙ্গু মশা নিধনের নামে বাইরে থেকে যে ওষুধ কিনে আনেন, সেখানেও চুরি করেন। তাদের প্রধান লক্ষ্য একটাই—চুরি করা, দুর্নীতি করা।
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কমিশন খাওয়ার জন্যই এয়ারবাস কিনতে চায় সরকার : মির্জা ফখরুল 
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, না খেয়ে আছে মানুষ। এমন একটি মুহূর্তে নাচ-গান গেয়ে বিদেশিদের স্বাগত জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে না, হাসপাতাল তৈরি করতে পারছে না, মানুষের ভোটাধিকার দিচ্ছে না অথচ কমিশন খাওয়ার লক্ষ্যে ১০টি এয়ারবাস কেনা হচ্ছে। এখন আবার স্যাটেলাইট-২ কেনার পাঁয়তারা করতেছে। এই দানব সরকারকে সরাতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণপূর্বক এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ড্যাবের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।  সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিব নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয় থেকে জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। পরে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিএনপি কার্যালয় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।  ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের মেয়রদের অনির্বাচিত দাবি করে তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা ডেঙ্গু মশা নিধনের নামে যে ওষুধ সরবরাহ করেছে সেখানেও তারা চুরি করেছে, তাদের প্রধান লক্ষ্যই চুরি করা।  মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।   
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X