এনজিওর ঋণ শোধ করে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে নেওয়া ঋণের টাকা শোধ করে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করেছেন শহিদুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি। বাধ্য হয়ে শেষ সম্বল গরুটি বিক্রি করে তিনি এই ঋণের টাকা শোধ করেছেন বলে জানা গেছে। দুধ দিয়ে গোসল করার ঘটনাটি মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে নালিতাবাড়ী উপজেলার জাঙ্গালিয়াকান্দা গ্রামে ঘটে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। আরও পড়ুন: ৩৫ বছর ধরে সযত্নে তোজাম্মেলের রেডিও গোসল শেষে জীবনে আর কোনো দিন সমিতি বা এনজিও থেকে ঋণ নেবেন না বলে শপথ নিয়েছেন তিনি। শহিদুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার শহিদুলের। শহিদুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানান, সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় একটি এনজিও থেকে এক বছর আগে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। সাপ্তাহিক কিস্তিতে ঋণের টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও সংসারের টানাটানিতে তিনি নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এতে ওই এনজিও কর্মকর্তাদের চাপের মুখে পড়েন শহিদুল। বাধ্য হয়ে হাঁস-মুরগি বিক্রি করে কিস্তির টাকা দিচ্ছিলেন তিনি। এদিকে ঋণের চাপ ও অন্যদিকে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়মিত না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন শহিদুল। তাই ঋণ পরিশোধ করতে অনেকটা অসহায় হয়ে নিজের একমাত্র ষাঁড়-গরু বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরপর দুধ দিয়ে গোসল করে জীবনে কোনো দিন ঋণ বা সুদে টাকা ধার না নেওয়ার শপথ নেন শহিদুল। এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম একটি এনজিও থেকে। আমি গরিব মানুষ। সময়মতো কিস্তি দিতে পারি না। রাজমিস্ত্রির কাজ করি, এক দিন কাজ থাকলেও আরেক দিন কাজ থাকে না। তখন বেকার বসে থাকতে হয়। তাদের কিস্তির চাপে পড়ে শেষ সম্বল গরুটি বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করলাম। দুধ দিয়ে গোসল করে শপথ নিলাম, জীবনে আর কখনো কোনো জায়গা থেকে সুদে টাকা নেব না।’ জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই স্থানীয় হাবিবুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপকালে শহিদুল গরু বিক্রি ও এর নেপথ্যের কারণ জানান। ওই ব্যক্তি শহিদুল ও তাঁর গরুর ছবি দিয়ে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। পরে শহিদুলের বাড়িতে আশপাশের এলাকার মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করেন। উপস্থিত সবার সামনে এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করেন শহিদুল। 
২৬ জুলাই, ২০২৩
X