সরকারের জন্য হুমকি দুর্নীতি ও ঋণখেলাপি
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে আইএমএফের প্রভাব থাকায় পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনায় তেমন দিকনির্দেশনা দেখা যায়নি। অর্থ পাচার, দুর্নীতি ও ঋণখেলাপির চক্র রোধ করা না গেলে এটি সরকারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সাবেক গভর্নর বলেন, বড় বড় ঋণখেলাপির ঋণের সুদ মাফ করা হচ্ছে। এদের ঋণের সুদ মওকুফ করা খুবই আপত্তিকর। সরকারি ব্যাংকগুলো যে ৫০ হাজার কোটি টাকা সুদ মওকুফ করেছে, তা খেলাপি ঋণ হিসেবে গণ্য করা উচিত। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ১০ শতাংশের কাছাকাছি। বাজেট বক্তব্যে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে বললেও তা অর্জিত হবে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা মজুত ও সরবরাহের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় খাদ্যাভাবে ১৯৭৪ সালে বহু লোকের মৃত্যু হয়। তাই মজুত ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। ফরাসউদ্দিন বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে যে ৯৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, এটা মারাত্মক ক্ষতিকর অস্ত্র হতে পারে। সরকার দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ায় জোর দেওয়া উচিত। ‘এবারের বাজেট টেকসই উন্নয়নে সহায়ক হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন শিক্ষক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক জাকির হোসেন, দৌলত আক্তার মালা, উম্মান নাহার আজমী ও সুশান্ত সিনহা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
০৬ জুলাই, ২০২৪

ঋণখেলাপি ২ দম্পতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
চট্টগ্রামে ঋণখেলাপি দুই দম্পতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সোমবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। পরোয়ানাভুক্ত দুই দম্পতি হলেন, মেসার্স এম. এ. অটোমোবাইলসের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী জুনুফার রায়হান এবং নিশাত শিপিং সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ ও তার স্ত্রী ফাতেমা জাফর। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত তাদের সবাইকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। জানা গেছে, নগরীতে যমুনা ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে মেসার্স এম এস অটোমোবাইলসের নেওয়া ৬ কোটি ৮৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৫ টাকা আদায়ে ২০১৭ সালে অর্থঋণ মামলাটি হয়। বর্তমানে এটি  সুদ-আসলে ১১ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ মামলার দুই আসামি মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী জুনুফার রায়হান নগরের পূর্ব নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। এদিকে ২০১৭ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ১৩ কোটি ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৫০ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করায় ২০১৯ সালে নিশাত শিপিং সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে অর্থঋণের মামলা হয়। এ মামলায় সুদ-আসলে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৬ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার ৯০৯ টাকা। ২০২১ সালে ১৪ ডিসেম্বর তাদের ৯ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয় ব্যাংক। তবে বিপুল পরিমাণ টাকা এখনো আদায় করেননি তারা। নিশাত শিপিং সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ ও তার স্ত্রী ফাতেমা জাফর নগরের মেহেদিবাগ এলাকার বাসিন্দা। 
০২ জুলাই, ২০২৪

ঋণখেলাপি মামলায় চার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ট্রাস্ট ব্যাংকের করা ১৮৮ কোটি ঋণখেলাপি মামলায় রতনপুর স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিল (আরএসআরএম) গ্রুপের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমানসহ চার মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।  বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়া চারজন হলেন- আরএসআরএমের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান, গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান, পরিচালক মারজানুর রহমান ও মো. আলাউদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, আদালতের আদেশক্রমে বিবাদীগণ আদালতে হাজির না হওয়ায় আরএসআরএম এর মালিকদের বিরুদ্ধে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের নামে নেওয়া ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩০৭ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য চার মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ট্রাস্ট ব্যাংক সিডিএ এভিনিউ শাখার ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রেদওয়ানুল হক। ঋণের বিপরীতে এই গ্রুপের কোনো স্থাবর সম্পত্তি সহায়ক জামানত হিসেবে ট্রাস্ট ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই। ট্রাস্ট রিসিট এবং পার্সোনাল গ্যারান্টিতে বিপুল পরিমাণ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।  ঋণগুলো ২০১৫ সালে পুর্নগঠন এবং ২০১৯ সালে পুনঃতপশিল করা হয়। তবু তারা টাকা পরিশোধ করেনি।  গত বছরের ১৬ জুলাই মাকসুদুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। ৩১ জুলাই তারা আদালতে হাজির হন। ২৭ নভেম্বর মিজানুর রহমান ও মাকসুদুর রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য সিংগাপুর যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন। এ বছরের ১৪ জানুয়ারি ওই দরখাস্তের শুনানির জন্য আবেদন করলে আদালত ১৭ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করে। সেদিনও তারা উপস্থিত হননি।  সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আগের দরখাস্ত শুনানির জন্য তারা আবারও আবেদন করে। তাদের উপস্থিতিতে ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। এদিনেও আদালতে উপস্থিত না হয়ে তারা আবারও সময়ের আবেদন করেন। এবার আবেদন নামঞ্জুর করে আরএসআরএমের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান, গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান, পরিচালক মারজানুর রহমান ও মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, মাকসুদুর রহমান এবং মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে খেলাপি ঋণের ১০টি মামলা চলমান আছে। এসব মামলায় বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দাবি প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এসব মামলায় চারজনের বিরুদ্ধে ডিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সাত ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ঋণখেলাপি মামলায় চট্টগ্রামের সাত ব্যবসায়ীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে ৭৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগ রয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যবসায়ীরা হলেন, এএফসি হেলথ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল খান, পরিচালক মো. আফজল, মো. জিয়া উদ্দিন, সাইদুল আমিন, মো. শামসুদ্দোহা তাপস, এস.এম. সাইফুর রহমান এবং মাহবুব আরব মজুমদার।  বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম কালবেলাকে বলেন, আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন- ইস্টার্ন ব্যাংক নগরের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি সাত ব্যবসায়ী। ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি ওয়ান ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই। ব্যবসায়ীদের পারসোনাল গ্যারান্টিতে ব্যাংক ঋণ দেয়।  এছাড়া ঋণ দুইবার পুন তপশিল করা হলেও ব্যবসায়ীরা তা পরিশোধ করেননি। এ অবস্থায় তারা দেশ ত্যাগ করতে পারেন না। দেশত্যাগ করলে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। এ জন্য আদালত সাতজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ পুলিশ সুপারকে (ইমিগ্রেশন) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩১ জানুয়ারি, ২০২৪
X