ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী
ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গত মাসে ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরি বাছাইয়ে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে। তবে শেষ মুহূর্তে গত বুধবার ছয় প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। খবর তাসনিম নিউজের। ইরানের জাতীয় নির্বাচন সদর দপ্তর গতকাল এক বিবৃতিতে জানায়, ছয় প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। তাদের একজন হলেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমির হোসেন গাজিজাদেহ হাশেমি। তিনি বুধবার রাতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। অন্যজন হলেন আলি রেজা জাকানি। জাকানি গতকাল বৃহস্পতিবার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। বাকি চার প্রার্থী হলেন—মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ, সাইদ জালিলি, মাসুদ পেজেশকিয়ান ও মোস্তফা পুরমোহাম্মদি। তাদের মধ্যে রাইসির উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে মোহাম্মদ বাকের কালিবাফের নাম। এর আগে ২০০৫, ২০১৩ ও ২০১৭ সালেও কালিবাফ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন। তবে শেষবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে তিনি রাইসিকে সমর্থন দেন। রাজনীতিতে আসার আগে কালিবাফ ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাকে রেভল্যুশনারি গার্ডের বিমানবাহিনীর প্রধান করেছিলেন। আর ২০০০ সালে পুলিশপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। বাকের কালিবাফের নাম ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৯৯৯ সালের ছাত্র আন্দোলন কঠোর হাতে দমনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে ৫৮ হাজার ৬৪০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরে ১০০টি দেশে প্রবাসী ভোটারদের জন্য ৩৪০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সরকারও তাদের মাটিতে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।
২৮ জুন, ২০২৪

ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল বড় পরিবর্তনের আশা নেই
ইরানে আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিমান দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর কারণে নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন। তেহরানের মিত্র ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও চিরশত্রু ইসরায়েলের মধ্যে চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে আঞ্চলিক টান টান উত্তেজনার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ আগাম নির্বাচন। আন্তর্জাতিক অবরোধের কারণে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ায় এক ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার করছে দেশটি। সব দিক দিয়ে প্রতিকূলে পরিস্থিতিতে পড়া ইরানের এ নির্বাচনের দিকেই এখন সবার চোখ। তবে যিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন না কেন, ইরানের শাসনব্যবস্থায় বড় কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখছেন না বিশ্লেষকরা। কারণ, ছয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিরই অনুগত। গ্রন্থনা : ওয়াহেদুজ্জামান সরকার ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে সংস্কারপন্থিসহ ছয় প্রার্থীর মধ্যে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করতে আগামীকাল শুক্রবার ভোট দেবেন দেশটির জনগণ। ইরানে ২০২৫ সালের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু গত মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় অতিরক্ষণশীল ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। গত এপ্রিলে ইরান তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিয়ে হামলা চালায় ইসরায়েলে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাত সদস্য নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালায় ইরানের ইস্পাহান শহরের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে। ইরানের স্বঘোষিত শত্রু ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে ইরানের এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দেশটির অভিভাবক পরিষদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাঁচজন কট্টরপন্থি ও একজন অল্প পরিচিত মধ্যপন্থি প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগ্রহী ৮০ জনের মধ্য থেকে এ ছয়জনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ছয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন—পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ, অতিরক্ষণশীল সাবেক পারমাণবিক কর্মসূচির মধ্যস্থতাকারী সাঈদ জালিলি, সংস্কারপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান, তেহরানের রক্ষণশীল মেয়র আলিরেজা জাকানি, সমালোচক মোস্তফা পুরমোহাম্মদ ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমির হোসেন গাজি জাদেহ-হাশেমি। তবে মূল লড়াই বাকের কালিবাফ ও আলি জারিজানির মধ্যে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এ নির্বাচনে প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেননি। কিন্তু মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে কট্টর পশ্চিমাবিরোধী খামেনি বলেন, ‘যিনি মনে করেন আমেরিকার আনুকূল্য ছাড়া কিছুই করা সম্ভব না, তিনি এ দেশকে সামলাতে পারবেন না।’ তার উপদেষ্টা ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এমন একজন প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করুন, যার মতামত সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। জনগণের উচিত এমন একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেওয়া, যিনি নিজেকে সেকেন্ড ইন কমান্ড মনে করবেন। প্রেসিডেন্টের উচিত হবে না বিভেদ সৃষ্টি করা।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের শাসনব্যবস্থার যে সার্বিক দিক, তা প্রেসিডেন্ট দ্বারা চালিত হয় না, বরং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এবং তার অধীনে থাকা শক্তিশালী সংস্থাগুলো এটি নিয়ন্ত্রণ করে। সে কারণে আয়াতুল্লাহ খামেনি না চাইলে রাষ্ট্রীয় ও পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের খুব একটা সম্ভাবনা নেই। বেশিরভাগ বিশ্লেষকের বিশ্বাস, ইরানের পারমাণবিক গবেষণা বিষয়ে নতুন করে চিন্তা করা বা ইরানের দ্বারা ইসরায়েলের স্বীকৃতি এসব পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন আনার ক্ষমতা শুধু এককভাবে নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে থাকবে না। কারণ এসব বিষয়ে সবসময় সর্বোচ্চ নেতা তার প্রভাব ও কর্তৃত্ব বজায় রাখবেন। একইভাবে খামেনির অনুমতি ছাড়া কোনো প্রেসিডেন্ট নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব বা এরকম কোনো রাষ্ট্রীয় বিষয়েও পরিবর্তন আনতে পারবেন বলে মনে হয় না। তার ওপর গার্ডিয়ান কাউন্সিল অনুমোদিত চূড়ান্ত যে তালিকা দেখা যাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগেরই আসলে এসব পরিবর্তনের পক্ষে থাকার সম্ভাবনাও খুব কম। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ সাফিরি বলেন, ‘নতুন প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্তই নেবেন, সেটাই আসবে আসলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে। সংবিধান যে দায়িত্ব অর্পণ করে প্রেসিডেন্টকে, গত চার দশকে আসলে প্রেসিডেন্টের সেসব কাজ সীমিত হয়ে এসেছে। আয়াতুল্লাহ খামেনি গত ৩৫ বছর ধরে যেভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো সাজিয়েছেন, তাতে আসলে তিনি মারা যাওয়ার পরও, যিনিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসুন, এসব প্রতিষ্ঠান খামেনির আদর্শ অনুযায়ী দেশকে পরিচালিত করবে। এটা অনেকটা পূর্বাঞ্চলের কমিউনিস্ট দলগুলোর মতোই হবে।’
২৭ জুন, ২০২৪

ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার কথা ভাবছেন আহমাদিনেজাদ
ইরানের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। আহমাদিনেজাদ সমর্থকদের পরিচালিত দোলাত বাহার টেলিগ্রাম চ্যানেল গত শনিবার একটি ভিডিও পোস্ট করে। সেই ভিডিওতে এ ধরনের ইঙ্গিত দেন ইরানের সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। খবর ইরান ইন্টারন্যাশনালের। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার পর দেশটি গত সপ্তাহে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৮ জুন দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত শনিবার সমর্থকরা যে ভিডিও পোস্ট করেন তাতে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেন ‘আমি আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছি। কারণ আমি আত্মবিশ্বাসী যে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পরিবর্তন হচ্ছে। শুধু ইরানে নয়, সারা বিশ্বেই দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে এবং আমি আশাবাদী যে, আমরা শিগগির একটি দারুণ পরিবর্তন দেখতে পাব।’ এদিকে ইরানের পার্লামেন্টে আহমাদিনেজাদ সমর্থকরা এরই মধ্যে তার সম্ভাব্য প্রার্থিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, তিনি (মাহমুদ আহমাদিনেজাদ) দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ইরানিয়ান লেবার নিউজ এজেন্সির (আইএলএনএ) সঙ্গে কথা বলার সময় পার্লামেন্টে তাবরিজের প্রতিনিধি আহমাদ আলিরেজা বেইগি বলেন, ‘মাহমুদ আহমাদিনেজাদ যদি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তবে তিনি জিতবেন।’
২৮ মে, ২০২৪
X