নীতিশকে যে টোপ দিয়েও ভাগাতে পারেনি ইন্ডিয়া জোট
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো রাজনৈতিক দল। ফলে এবার জোটবদ্ধভাবে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ। তবে জোটের অন্যতম শরীক ও কিংমেকার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে নিজেদের দলে ভেড়াতে প্রলোভন দেখিয়েও বাগে আনতে পারেনি বিরোধী জোট ইন্ডিয়া।  শনিবার (০৮ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) এক নেতা দাবি করেছেন, ইন্ডিয়া জোট নীতিশকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব করেছিল। শনিবার (০৮ জুন) তিনি এমন দাবি করেন। তবে তার এ দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছে কংগ্রেস।  ইন্ডিয়া টুডে টিভির ‘আজ তক’ অনুষ্ঠানে জেডিইউ নেতা কেসি ট্যাগি বলেন, ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে নীতিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। তাকে এমন ব্যক্তিরা এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন যারা এর আগে তাকে ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তবে তিনি এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলেও জানান ওই নেতা।  ট্যাগির এমন বক্তব্যের বিষয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ভেনুগোপাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নীতিশকে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো তথ্য জানা নেই। তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কিছু জানি না। যিনি বলেছেন, তিনিই কেবল তার এ দাবি সম্পর্কে জানেন।  ইন্ডিয়া টুডে টিভির পক্ষ থেকে জেডিইউর ওই নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে ইন্ডিয়া জোটের কোন নেতাকে নীতিশকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি। বরং বিষয়টি এড়িয়ে যান জেডিইউ নেতা।  নীতিশ কুমার অতীতে অনেকবার দল পরিবর্তন করেছেন। এমনকি ২০২৩ সালে বিরোধীদের নিয়ে গঠিত ইন্ডিয়া জোট গঠনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পরে অবশ্য তিনি এ জোট থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর যোগ দেন এনডিএ জোটে। এবার ভারতের সরকার গঠন করতে যাওয়া জোটটির সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয় পেতে যাচ্ছে দলটি। উল্লেখ্য, গত শনিবার (০১ জুন) সাত দফায় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এরপর মঙ্গলবার (০৪ জুন) দেশটির নির্বাচন কমিশন ফল ঘোষণা করে। এতে একক কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৮২ আসন এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩০৩টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। তবে এবারের নির্বাচনে দলটি পেয়েছে ২৪০টি আসন। দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ২৭২ আসন। ফলে সরকার গঠনে জোটের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে দলটির। এনডিএ জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক হলো অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল টিডিপি এবং বিহারের নীতিশ কুমারের দল জেডিইউ। এ নির্বাচনে পিডিপির দখলে রয়েছে ১৩ আসন আর জেডিইউ পেয়েছে ১২টি আসন। ভারতের সংবিধান অনুসারে, দেশটিতে মোট ৫৪৫টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২ আসন। এ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি পেয়েছে ২৪০ আসন। আর তাদের শরিক দলগুলো পেয়েছে ৫২ আসন। সব মিলিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে ২৯২ আসন। অন্যদিকে অপর জোট ইন্ডিয়া পেয়েছে ২৩৪ আসন। এছাড়া অন্যান্য দল মিলে পেয়েছে ১৭টি আসন।  
০৯ জুন, ২০২৪

ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালাবে ইন্ডিয়া জোট
লোকসভা ভোটে ভালো ফল করলেও বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সরকার গঠনের জন্য উপযুক্ত আসন নেই। তাই আপাতত ঐক্যবদ্ধ বিরোধী পক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাড়াহুড়ো নয়, এখন সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। গতকাল বুধবার নয়াদিল্লিতে জোটের কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের কৌশল নিয়ে বৈঠক শেষে এ ইঙ্গিত দেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী। এ ছাড়া ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত, সিপিএমের নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, আপ নেতা সঞ্জয় সিংহসহ জোটের অন্যান্য দলের নেতারা। এবারের ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সরকার গঠন করার মতো অবস্থা বিজেপির রয়েছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থনে মোদিই প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে এনডিএর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল বিরোধী হিসেবেই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ইন্ডিয়া। বুধবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের খাড়গে জানিয়েছেন, মোদির স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে ইন্ডিয়া। আরও বলেন, ‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত!’ বিশ্লেষকরা বলছেন, খাড়গের এই মন্তব্যেই ইন্ডিয়া জোটের মনোভাব স্পষ্ট, অর্থাৎ এখনই সরকার গঠনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা বৃথা। বরং সরকার গঠনের দাবি জানালে ‘ক্ষমতার লোভ’ বলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামতে পারেন মোদি-অমিত শাহ। এতে ‘ইন্ডিয়া’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই এখন সঠিক সময়ের অপেক্ষায় জোট। বৈঠক শেষে জোট শরিক আইইউএমএলের নেতা পিকে কুনহালিকুট্টি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় স্বস্তিতে নেই বিজেপি। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’ শিবসেনার নেতা সঞ্জয়ও বলেন, ‘জনগণ এই সরকার বদলে ফেলতে চেয়েছিল। সঠিক সময়েই সেই লক্ষ্য পূরণ হবে।’ বৈঠকের আগে চাচা রাম গোপাল যাদবকে সঙ্গে নিয়ে খাড়গের বাসভবনে পৌঁছেন উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব। কংগ্রেস নেতা কেসি ভেনুগোপাল, জেএমএমের সংসদ সদস্য ও ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের স্ত্রী কল্পনা সরেন, বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা এনকে প্রেমচন্দ্রও বৈঠকে অংশ নেন।
০৬ জুন, ২০২৪

১৪ টিভি উপস্থাপককে বয়কট করল ইন্ডিয়া জোট
ভারতের কয়েকজন টেলিভিশন উপস্থাপককে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সদ্যগঠিত জোট ‘ইন্ডিয়া’। সে অনুযায়ী এসব উপস্থাপকদের কোনো অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়া ব্লকের কোনো নেতা বা প্রতিনিধি যাবেন না।  গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এসব উপস্থাপকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জোটটি। এর আগে গত বুধবার জোটের প্রথম সমন্বয় কমিটিতে বৈরী গণমাধ্যম ও টকশো উপস্থাপকদের তালিকা তৈরি করার জন্য একটি উপকমিটি করা হয়।  কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এ নিয়ে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা এসব উপস্থাপকের বিরোধিতা করছি না। তাদের কাউকেই ঘৃণা করি না। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে বেশি ভালোবাসি। আমরা আমাদের ভারতকে ভালোবাসি।’  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজিরওয়ালের দল আম আদমি পার্টির (এএপি) ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল থেকে সেই উপস্থাপকদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।  তালিকায় রয়েছেন- আমান চোপড়া, প্রাচী পারাশর, রুবিকা লিয়াকত, চিত্র ত্রিপাঠী, সুধীর চৌধুরী, আমিশ দেবগন, অর্ণব গোস্বামী, নাবিকা কুমার, আনন্দ নরসিমাহ, গৌরব সাওয়ান্ত, অদিতি তিয়াগি, সুশান্ত সিনহা, অশোক শ্রীবাস্তব এবং শিব অরুর।  বিরোধীরা বরাবরই বলে আসছে, গণমাধ্যমের একাংশ তাদের সঙ্গে বৈরী আচরণ করছে। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার মিডিয়া কভারেজ নিয়ে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কারণ রাহুলের এই কর্মসূচির খবর ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে খব কম এসেছে। যদিও এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাহুল দেশব্যাপী ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন। 
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X