শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১
ব্যাংকের কথা এলে আতঙ্ক দেখা দেয়
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কথা এলে সবার মধ্যে আতঙ্ক চলে আসে। হরহামেশাই বড় কোম্পানিগুলোর সুদ মওকুফ করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারছে না। গতকাল মঙ্গলবার গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল-২০২৪’ সংসদে পাস হয়েছে। বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে সদস্যদের সমালোচনার কোনো জবাবই দেননি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রী বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। বিলে বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ হবে আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য। বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ বলেন, নিয়ম না মেনে চারটি প্রতিষ্ঠানের ৬ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক ধুঁকে ধুঁকে মরছে। বেসরকারি ব্যাংক এনবিএলের কী অবস্থা, তাও জানি। সুদ মওকুফের বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্য ধরে তিনি বলেন, খাত বিবরণ করে, খোঁড়া অজুহাত দিয়ে তাদের সুদ মওকুফের সুযোগ দেওয়া হয়। আর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক ধুঁকে ধুঁকে মরছে। এই লোকগুলোকে চিহ্নিত করতে না পারলে প্রধানমন্ত্রীর মহতি উদ্যোগ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটা বিতর্কিত ব্যক্তির নাম প্রতিদিন আলোচনা হচ্ছে দুর্নীতির কারণে। এক ব্যক্তি রাষ্ট্রের তিন-চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে একটি সরকারি ব্যাংক, এনবিআরের পরিচালক, আপিলাত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল ১৫ বছর আগে। কে তাকে সুপারিশ করল এনবিআরের পরিচালক বানাতে? কে তাকে করল ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের পরিচালক? শর্ষের মধ্যেই ভূত। এই ভূত প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ সরাতে পারবেন না। জাতীয় পার্টির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, পি কে হালদার টাকা নিয়ে ভারতে চলে গেছে। অনেক কোম্পানি আজ দেউলিয়া অবস্থায়। যারা লিজিং কোম্পানিতে টাকা রেখে নিঃস্ব, তারা ফেরত পাবে কি না, তা এই আইনে আছে কি না তা বোধগম্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। স্বতন্ত্র সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা ক্লাস বাদ দিয়ে আন্দোলন করছেন। তারা সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হতে চাচ্ছেন না। কারও ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া সমীচীন হবে না। সরকারকে বলব বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য। তিনি বলেন, আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের কথা এলে সবার মধ্যে আতঙ্ক চলে আসে।
০৩ জুলাই, ২০২৪

এবার রাজধানীতে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক
এবার রাজধানী ঢাকার মিরপুরে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) সকালে মিরপুর ১ নম্বর চিড়িয়াখানা রোডের একটি বাসায় রাসেল ভাইপার সদৃশ একটি সাপ মারা হয়। এ ঘটনার পরই ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।  জানা গেছে, শাহ আলী থানার এসআই শাহিদুল ইসলামের চিড়িয়াখানা রোডস্থ বাসার বাথরুমে একটি সাপ দেখা যায়। পরে সাপটি পিটিয়ে মারা হয়। এ সময় এসআই শাহিদুল থানায় ডিউটিতে ছিলেন। এ বিষয়ে এসআই শাহিদুল ইসলাম জানান, সকালে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রী ফোন করে বলে বাথরুমে একটি সাপের বাচ্চা দেখে পিটিয়ে মারা হয়েছে। আমি সাপের ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলি। সাপ দেখে মনে হলো এটি রাসেল ভাইপারের বাচ্চা। দেখতে হুবহু রাসেল ভাইপারের মতো। পরিচিত অনেকে দেখে নিশ্চিত হয়েছেন এটি রাসেল ভাইপার। সাপের ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর অনেকে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন। এখন সাপটি কোথায় আছে- জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা তো বাচ্চা সাপ। মারার পর সাপটি কাক নিয়ে গেছে।  এ বিষয়ে শাহ আলী থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, থানার এক কর্মকর্তার বাসায় একটি সাপ পাওয়া গেছে। সাপ দেখামাত্র ওই কর্মকর্তার স্ত্রী ও ছেলে মিলে সাপটিকে পিটিয়ে মেরেছেন। আমি সাপটির ছবি দেখেছি। তবে রাসেল ভাইপার কি না নিশ্চিত না।  স্থানীয় বাসিন্দা মনির সাংবাদিকদের জানান, মিরপুরে রাসেল ভাইপারের দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এখানে চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও তুরাগ নদী রয়েছে। 
০১ জুলাই, ২০২৪

ক্যাম্প আইসি সাজ্জাদ এলাকাবাসীর আতঙ্ক
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া, আবাইপুর ও নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাট ফাজিলপুরে রয়েছে পুলিশের একটি ক্যাম্প। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা; এই ক্যাম্পের আইসি এসআই সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে সহিংস ঘটনায় পক্ষপাতিত্ব ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের মানিক মোল্লা ও পরান শেখের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার কয়েকদিন পর গত ২০ জুন গোলাম শেখ নামে এক ব্যক্তিকে বগুড়া বাজারে একটি দোকান থেকে আটক করেন ক্যাম্প আইসি। তখন স্থানীয়রা আইসিকে জানান, সে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন আইসি সাজ্জাদ বলেন, সে জড়িত না থাকলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপর তাকে ক্যাম্পে নিয়ে জানতে চাই সে কার দল করে? সে জানায়, সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের দল করি। এই কথা শুনে আইসি রেগে বলেন, চেয়ারম্যান শিমুলের দল করতে পারো না? এরপর আইসি তাকে উপুড় করে মেঝেতে শুইয়ে লোহার রড দিয়ে তার পায়ের তালুতে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এতে সে গুরুতর আহত হয়। তারপর তাকে ছেড়ে দিলেও সে ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারে না। একই গ্রামের খালেক শেখের পুত্র সুইম শেখ জানান, রমজান মাসে কোনো কারণ ছাড়াই আইসি সাজ্জাদ তাকে ধরে নিয়ে যান। ক্যাম্পে নিয়ে তাকে বেদম প্রহার করেন। একের পর এক লাথি মারতে থাকেন। এতে তার পুরুষাঙ্গ ফেটে যায়। এরপর একটি মিথ্যা মামলায় তাকে চালান দেওয়া হয়। সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সমর্থক হওয়ায় তার ওপর নির্যাতন চালান আইসি। ইউনিয়নের রতনাট গ্রামের জামির শেখের ছেলে খাইরুল ইসলাম ২০১৪ সালের একটা মারামারি ঘটনার আসামি। তিনি জামিনে রয়েছেন। চাকরির কারণে তিনি হাজিরা মিস করলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু বিষয়টি তার জানা ছিল না। গত ৩০ মে রতনাট গ্রামের ব্রিজের ওপর থেকে তাকে ক্যাম্প পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে আইসি সাজ্জাদ তাকে হাজত থেকে বের করে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালান। এতে খাইরুল অজ্ঞান হয়ে যান। খাইরুল বলেন, তার বিরুদ্ধে যেহেতু পরোয়ানা রয়েছে, সেহেতু তাকে আটক করে চালান দেওয়ার কথা। কিন্তু কেন নির্যাতন করা হলো, তা তিনি জানতে চান। তিনি এর বিচার দাবি করেন। বড়বাড়ী বগুড়া গ্রামের মজিদ শেখের ছেলে শিমুল শেখ জানান, কোনো কারণ ছাড়াই ২০-২৫ দিন আগে তাকে ক্যাম্প আইসি ধরে নিয়ে যান। ক্যাম্পে নিয়ে চোখ-মুখ ও হাত বেঁধে তাকে বেধড়ক পেটান এবং বলতে থাকেন—তুই এখন থেকে নজরুলের দল বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান শিমুলের দল করবি। এরপর তাকে মিথ্যা মামলায় চালান দেন। তিনি আরও জানান, আইসি তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে আইসি সাজ্জাদ একজন ব্যক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এলাকার মানুষের ওপর নির্যাতন করছেন। ১১ নম্বর আবাইপুর ইউনিয়নের মেম্বার রবিউল ইসলাম লিটন বলেন, সম্প্রতি আমরা ফাজিলপুরের কাজিপাড়ায় মিটিং করে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মুক্তার মৃধার ছেলে কৃপালপুর গ্রামের সুমন মৃধার অনুসারী মিন্টু খাঁ ও দুলাল শেখ লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা রাজু নামে এক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় ফাজিলপুর ক্যাম্পে অভিযোগ করেও রাজু কোনো বিচার বা প্রতিকার পাননি। এলাকাবাসী জানান, ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. আজিম-উল-আহসানের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিযন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু ফাজিলপুর ক্যাম্প আইসি সাজ্জাদ নিজ স্বার্থে এই তিন ইউনিয়নের মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন। তিনি পুলিশের বড় কর্তাদের এলাকার বিষয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। জানতে চাইলে হাট ফাজিলপুর কাম্পের আইসি এসআই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আসামি বা আটককৃতদের আইনের মধ্যে থেকেই শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। রড দিয়ে মারা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের কাছে রড থাকে না। রড থাকে রাজনৈতিক কর্মীদের কাছে। কিছু লোক নিজের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে। ক্যাম্প আইসি এসআই সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ সুপার মো. আজিম-উল-আহসান বলেন, জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা বা সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলে সে বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা এ-সংক্রান্ত লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তার ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৮ জুন, ২০২৪

রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্ক নয় রয়েছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম
রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। দেশে অ্যান্টিভেনমের সংকট নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ‘রাসেলস ভাইপার: ফেরার ভার্সেস ফ্যাক্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সাপে কাটা রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য এমপিদের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছি। এতে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর। বক্তারা বলেন, দেশের ২৭ জেলায় বহুল আলোচিত রাসেলস ভাইপার সাপ পাওয়া গেছে। এ সাপ নিয়ে অনেক বেশি গুজব ছড়ানো হয়েছে। রাসেলস ভাইপার সাপ কখনো তেড়ে এসে মানুষকে কামড়ায় না। সে বিপদের পড়লে কিংবা ঝুঁকি দেখলেই আত্মরক্ষার্থেই শুধু কামড় দেয়। বর্তমানে দেশে এর অ্যান্টিভেনম রয়েছে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর অ্যান্টিভেনম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
২৮ জুন, ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় দেখা মিলল রাসেল ভাইপারের
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সীমান্তবর্তী এলাকার ঘাড় কাটি মাঠে বিষধর রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে। স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে সাপটি মেরে ফেললেও উপজেলার সর্বত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এর আগেও একাধিক রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে। তবে উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লেক্সে নেই এন্টি ভেনোম। অ্যান্টিভেনম না থাকায় বিরূপ প্রতি‌ক্রিয়া দেখা দিয়েছে জনসাধারণের মাঝে। জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার মেদিনীপুর গ্রামের চ্যাংখালী ঘাড়-কাটি মাঠে মোবারক তরফদার ও তার ভাইপো আতর আলী তরফদার পাট নিড়ানির কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য জমির আইলে খেজুর গাছের নিকট বসেন। আইলের পাশে একটি রাসেল ভাইপারের দেখা মেলে। পরে সাপটিকে মেরে ফেলেন স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে উপজেলার সীমান্তবর্তী মেদিনীপুর, বেনীপুরসহ এ এলাকায় বসবাস করা মানুষ এ সাপের আতঙ্কে রয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, এর আগেও বিষধর রাসেল ভাইপারের দেখা মিলছে। জীবননগর বন বিভাগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শোনার পর আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা সাপটি মেরে পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেছে। সচক্ষে না দেখে আমি নিশ্চিত করতে পারছি না তবে স্থানীয়রা জানান ওটাই রাসেল ভাইপার। জীবননগর উপ‌জেলা স্বাস্থ্য ও প‌রিবার প‌রিকল্পনা অফিসার সাফাউল্লাহ নেওয়াজ জানান, হাসপাতালে বর্তমানে এখন কোনো অ্যান্টিভেনম নেই। বেশ অনেক দিন আগেই চাহিদা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের প্রতিনিধি ঢাকাতে অবস্থান করছে আশা করি আমরা শিগগিরই হাতে পাব।
২৬ জুন, ২০২৪

এবার সিরাজগঞ্জে মিলল রাসেল ভাইপারের বাচ্চা, এলাকায় আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে গত তিন দিনে তিনটি রাসেল ভাইপার সাপের বাচ্চা ধরা পড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার জামতৈল গ্রামের সরকারি হাজী কোরপ আলী মেমোরিয়াল কলেজ সংলগ্ন বুদ্ধুর মোড়ে সাপের বাচ্চা ধরা পড়ে। স্থানীয়রা জানায়, গত দুই দিন আগে যে দুটি বাচ্চা মারা হয়েছে তখন এটা ভালোভাবে খেয়াল করিনি। আজকে এর গঠন এবং চলাফেরা দেখে মনে হচ্ছে রাসেল ভাইপার হবে। বিষধর এই সাপের বাচ্চা বের হওয়ায় এলাকায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেহেতু এটি বাচ্চা তাহলে অবশ্যই বাচ্চার মা এবং আরও রাসেল ভাইপারের বাচ্চা এলাকায় আছে বলে সবাই ধারণা করছে। দীর্ঘদিন ধরে বুদ্ধর মোড়ে দোকানদারি করা বুদ্ধ বলেন, আমরা প্রথমে এটাকে সাধারণ সাপ হিসেবেই মনে করেছি। গত পরশুদিনও একটা বাচ্চাকে মেরে ফেলেছি। আজকে সন্ধ্যার পরেই দেখি বাচ্চাটা দোকানের সামনেই নড়াচড়া করছে। তখন রাজা, জীবন, রাজ্জাক, মিঠু দেখে তারা বলে এটা রাসেল ভাইপার। পরে তারা সাপের বাচ্চাটিকে আটকায়। ইউএনও শাহিন সুলতানা বলেন, এখন পর্যন্ত যে আতঙ্কিত এলাকাগুলোর নাম রয়েছে তার ভেতরে আমাদের এলাকার নাম ছিল না। আমাদের সবাইকে এখন আরও সতর্কভাবে চলাফেরা করতে হবে।
২৫ জুন, ২০২৪

সম্পাদকীয় / আতঙ্ক নয়, দরকার সতর্কতা
সম্প্রতি দেশের বহুল আলোচিত বিষয়ের একটি চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে সাপটির উপস্থিতি, মানুষের ওপর আক্রমণ অথবা সাপটিকে মারার ঘটনা ঘটছে, এটা সত্য। তবে দুঃখজনক ও ভয়ানক সত্য হচ্ছে, এ নিয়ে অসত্য, অযৌক্তিক ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়া। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ছড়ানো হচ্ছে নানা গুজব। আর এসব গুজবে বিভ্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে সচেতন মানুষকেও। সাপটি সম্পর্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। এর ফলে দেশের কিছু অঞ্চলে কৃষিকাজের জন্য কৃষিশ্রমিকের অনাগ্রহের কথাও শোনা যাচ্ছে। আবার সাপটিকে দেখামাত্রই মেরে ফেলতে হবে—এমন প্রবণতা বাড়ছে। এ প্রবণতা পুরো বাস্তুসংস্থানের জন্যই ক্ষতিকর, যার বাইরে নয় মানুষও। রোববার কালবেলায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, রাসেলস ভাইপার কামড়ালেই মৃত্যু নিশ্চিত, এটি অকারণে মানুষের দিকে তেড়ে আসে, সাপটি কামড়ালে কোনো চিকিৎসা নেই—এসব তথ্য সঠিক নয়। বরং সাপটি সাধারণত নিশাচর বা রাতে চলাচল করতে পছন্দ করে। মানুষের বাড়িঘর এলাকায় সাধারণত এরা থাকে না। থাকার জন্য ঝোপঝাড়, ফসলের গোলা কিংবা জমির বড় গর্ত এদের পছন্দ। বাস্তুতন্ত্রের বিনাশের কারণে বর্তমানে রাসেলস ভাইপারের অস্তিত্ব বেশি করে চোখে পড়ছে। সাপটি মানুষকে অযথা কামড়ায় না। আত্মরক্ষার্থে কামড় দিয়ে থাকে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে প্রচলিত অ্যান্টিভেনমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সতর্কতার বিকল্প নেই। সাপটির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূলত বাস্তুতন্ত্র বিনাশকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত চন্দ্রবোড়া সাপের দংশনের গড় ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন বা তারও কিছু বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে মানুষ। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, রাসেলস ভাইপার মোটেও দেশের সবচেয়ে বিষধর কিংবা প্রাণঘাতী সাপ নয়। বরং দেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ে যত লোক মারা যায়, তার অর্ধেকই মারা যায় পাতি কেউটে সাপের কামড়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সাপটি দেশের অন্যান্য বিষধর সাপের চেয়ে নিরীহ ও কম আতঙ্কের। চলতি বছর রাসেলস ভাইপারের কামড়ে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বছর সারা দেশে চার লাখ সাপে কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাড়ে সাত হাজার মানুষ মারা গেছে; যাদের বেশিরভাগই কোবরা ও কেউটে প্রজাতির সাপের কামড়ের শিকার হন। প্রকৃতির ওপর মানুষের বৈরী আচরণ দিন দিন বাড়ছে। এর খেসারতও দিতে হচ্ছে নানাভাবে। আজ সারা পৃথিবীতে জলবায়ুর পরিবর্তন এ গ্রহকেই করে তুলেছে বিপদাপন্ন। সম্প্রতি দেশে রাসেলস ভাইপারের বৃদ্ধিও অন্যান্য শিকারি প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ারই ফল। অর্থাৎ যেসব প্রাণী এ সাপটি খেয়ে বেঁচে থাকে এবং বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য রক্ষা করে, সেসব প্রাণীকে আমরা নানাভাবে নিধন করেছি; কারণে-অকারণে এদের হত্যা ও আবাসস্থল ধ্বংস করেছি। আমরা মনে করি, মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাস্তুসংস্থান রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজন প্রকৃতিতে সব প্রাণীর একটি স্বাভাবিক সহাবস্থান। আর মানুষ যেহেতু সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী, এ দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি বর্তায় তার ওপরই। আমাদের প্রত্যাশা, মানুষ কোনো গুজবে কান না দিয়ে সচেতন ও সতর্ক হবে। যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে যে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব এবং সরকারি হাসপাতালগুলোয় যে এর চিকিৎসা সহজলভ্য—এসব বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচেতনতামূলক প্রচারণা হাতে নেওয়া হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সচেতন নাগরিকদের হতে হবে দায়িত্বশীল।
২৪ জুন, ২০২৪

সিলেটে সাপের কামড়ে আহত ১২, রাসেল ভাইপার আতঙ্ক
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ নিয়ে ইতোমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতিতে গত এক সপ্তাহে সাপের কামড়ে ১২ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলাতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। সাপের উপদ্রবও এই তিন উপজেলাতে বেশি বলে জানা গেছে। তবে সিলেটে এখন পর্যন্ত রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন- এমন রোগী পাওয়া যায়নি। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুন থেকে শনিবার (২২ জুন) দুপুর পর্যন্ত ১২ জন রোগী বিভিন্ন প্রজাতির সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১১ জন রোগীই বিষহীন সাপের কামড়ে আক্রান্ত। তাদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জৈন্তাপুর থেকে একজনকে কোবরা সাপের কামড়ে গুরুতর আহতাবস্থায় ২০ তারিখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে আইসিউতে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে রাসেল ভাইপারের খবর নিমিষেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায়, বন্যার্ত এলাকাগুলোতে আতঙ্কে জেঁকে বসেছে। অনেকের ঘরের ভিতরেই পানি রয়ে গেছে, অনেকের ঘর থেকে পানি কেবল নামতে শুরু করেছে, অনেকের গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহে পানিতে নামতে হচ্ছে। পানিবন্দি অবস্থায় এই আতঙ্ক তাদের কাছে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী কালবেলাকে বলেন, সিলেটে রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত কোনো রোগী এখন পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে আসে নাই। আমাদের সিলেটে রাসেল ভাইপার নাই। এখন পর্যন্ত এই বন্যা পরিস্থিতিতে ১২ জন রোগী আমাদের এখানে এসেছেন। ১১ জনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপর একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়, তিনি আইসিউতে রয়েছেন। আমরা আশা করি, তিনিও সুস্থ হয়ে ফিরবেন। সাপ নিয়ে আতঙ্কিত হতে নিষেধ করে ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী কালবেলার মাধ্যমে বন্যার্ত এলাকাসহ গ্রামগঞ্জের সবার উদ্দেশ্যে বলেন, সাপে কামড় দিলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। আমাদের ওসমানী মেডিকেলসহ সিলেটের সবকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাপে কামড় রোগীর চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সাপে কামড় দেওয়া রোগীকে দেশীয় কোনো চিকিৎসা দিতে গিয়ে বিলম্বিত না করে, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে আসুন।
২২ জুন, ২০২৪

রাসেল ভাইপার সাপে কামড়ালে যা করবেন
ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে। তাই, সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।  নির্দেশনামূলক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, মানুষের সঙ্গে এই সাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই সাপ সাধারণত নিচুভূমির ঘাস, বন, ঝোপ-জঙ্গল, উন্মুক্ত বন, কৃষি এলাকায় বাস করে এবং মানুষের বসতি এড়িয়ে চলে। সাপটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সঙ্গে সহজে মিশে যেতে পারে। মানুষ খেয়াল না করে সাপের খুব কাছে গেলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে। রাসেল ভাইপার সাপের কামড় খেলে করণীয় # যেখানে কামড় খেয়েছেন, শরীরের সেই জায়গাটি নড়াচড়া করা যাবে না। এই সাপ পায়ে দংশন করলে বসে যেতে হবে, হাঁটা যাবে না। হাতে দংশনে হাত নড়াচড়া করা যাবে না। হাত-পায়ের গিরা নাড়াচাড়ায় মাংসপেশীর সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া করতে পারে। # আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে হবে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে। # শরীরে ঘড়ি বা অলঙ্কার বা তাবিজ, তাগা ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন। # আক্রান্ত স্থানে কাটবেন না, সুঁই ফোটাবেন না, কিংবা কোনো রকম প্রলেপ লাগাবেন না বা অন্য কিছু প্রয়োগ করা উচিত নয়। # সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না। # যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান। # আতঙ্কিত হবেন না, রাসেল ভাইপারের বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম আছে এবং সব জায়গায় হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাপের কামড় এড়াতে করণীয় # যেসব এলাকায় রাসেল ভাইপার দেখা গিয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। # লম্বা ঘাস, ঝোপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। # গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না। # সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট ও লম্বা প্যান্ট পরুন। # রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন। # বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখুন। # পতিত গাছ, জ্বালানি লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন। # সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। এবং # প্রয়োজনে জাতীয় হেল্প লাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন। রাসেল ভাইপারের প্রাদুর্ভাব কমাতে করণীয় বেজি, গুঁইসাপ, বাগডাশ, গন্ধগোকুল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল, তিলা নাগ ঈগল, সারস, মদন টাক এবং কিছু প্রজাতির সাপ রাসেল ভাইপার খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ সকল বন্যপ্রাণীকে মানুষের নির্বিচারে হত্যার কারণে প্রকৃতিতে রাসেল ভাইপার বেড়ে যাচ্ছে। তাই বন্যপ্রাণী দেখলেই অকারণে তা হত্যা ও এদের আবাসস্থল ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকুন। স্মরণ রাখা প্রয়োজন, রাসেল ভাইপার বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণী। রাসেল ভাইপার ইঁদুর খেয়ে যেমন ফসল রক্ষা করে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সাপের বিষ হতে অনেক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি হয়। সাপ মারা দণ্ডনীয় অপরাধ, সাপ মারা হতে বিরত থাকুন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ বন বিভাগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। স্থানীয়ভাবে সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও সচেতন সমাজের প্রতি অনুরোধ জানানো হলো। পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট প্রদান করা হবে।
২২ জুন, ২০২৪

রাসেল ভাইপার আতঙ্কে মহেশপুর সীমান্তবাসী
ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা ঝিনাইদহের মহেশপুরের সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় কৃষকরা রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্কে রয়েছেন। কয়েক মাস আগে সীমান্তবর্তী শ্যামকুড় ইউনিয়নের ভবনগর এলাকার সবজি ক্ষেতে বিষধর এই সাপের দেখা মেলে। এরপর থেকেই সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষকরা আতঙ্কের মধ্যে চাষাবাদ করছেন। এ ছাড়া সাপ আতঙ্কে রয়েছেন ভারত সীমান্তবর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের মানুষ। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, গত দেড় বছরে অন্তত চারবার মহেশপুর সীমান্ত এলাকায় বিষধর রাসেল ভাইপার দেখা গেছে। বন বিভাগের সহায়তায় দুটি সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। তখন থেকে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ সাপ সম্পর্কে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করতে আমরা বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। এ বিষয়ে জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা খন্দকার গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলেছে। মহেশপুরের ভবনগর গ্রাম থেকে মাস দুয়েক আগে একটি বিশাল আকৃতির এই বিষধর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, মাঝে মাঝে সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরে এ সাপ দেখা যায়। তাই স্থানীয়দের সতর্ক করতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছি। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা বলেন, রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া অন্যতম বিষধর সাপ। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সাপ দেখা যাচ্ছে এবং সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। যেহেতু মহেশপুর উপজেলা ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা সে কারণে সাধারণ মানুষকে এই বিষধর সাপ সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কোনো সাপের কামড়ে কেউ আক্রান্ত হলে কোনো ঝাড়ফুঁক বা ওঝা-বৈদ্যর কাছে না গিয়ে জেলা-উপজেলা হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
২২ জুন, ২০২৪
X