সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১
কুলাউড়ায় ফের বন্যার পানি বাড়ছে, আতঙ্কিত বানভাসীরা
ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে হাকালুকি হাওর, মনু ও জুড়ী নদীর পানি ফের বাড়ছে। এতে নতুন করে আতঙ্কিত হচ্ছেন বন্যা দুর্গত এলাকার হাজার হাজার মানুষ। গত ১৬ দিন ধরে বন্যার পানিতে সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও উপজেলা প্রশাসনিক অফিসসহ আশেপাশের আবাসিক এলাকা নিমজ্জিত থাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও সরকারি দাপ্তরিক কার্যক্রমে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। পানিবন্দি থেকে চিকিৎসা সেবা ও উপজেলা প্রশাসনিক কাজ-কর্ম করছেন বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা। এতে সরকারি অফিস ও হাসপাতালের সেবা গ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার ও শনিবারে বৃষ্টিপাত হলেও মৌলভীবাজারে নদ নদীর পানি কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার (২ জুলাই) থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে হাকালুকি হাওরসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন নদ নদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে। ১৭ জুন থেকে এখনও হাকালুকি হাওরের বন্যার পানিতে কুলাউড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে ডুবে আছে। ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার ৬৩ জন মানুষ ও উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এখানকার মানুষের বাসাবাড়িসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এতে করে এখনও স্বাভাবিক হয়নি এ উপজেলার মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা। বন্যার শুরু থেকে জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতারা ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন। বন্যার পানি কিছুটা নামতে শুরু করলে হাওর, নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষ নিজ ভিটে ফিরতে শুরু করেন। কিন্তু গত দুইদিন ধরে ফের পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরছেন বানবাসী লোকজন। এলাকাবাসী জানায়, হাকালুকি হাওর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। জেলার নদী তীরবর্তী বন্যাকবলিত অন্যান্য এলাকায় কিছুটা উন্নতি হলেও অনেকটাই অপরিবর্তিত রয়েছে হাকালুকি হাওর তীরবর্তী এলাকা। চলমান পরিস্থিতিতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই, গবাদিপশুর খাবার ও বাসস্থান সংকটে চরম দুর্ভোগে বানভাসিরা। এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ মোহাম্মদ আবু জাফর রাজু, জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ প্রমুখ। ভূকশিমইল গ্রামের আলী আহমদ জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষ খাদ্য সংকটের সঙ্গে বিশুদ্ধ পানির সমস্যায় ভুগছেন। এতে পানিবাহিত রোগজীবাণুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে হাওর এলাকায়। কুলাউড়া পৌর এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সজিব আহমদ জানান, বন্যার পানি কিছুটা কমায় আমার ঘর থেকে পানি অনেকটা নেমে গিয়েছিল। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পানি আগের মতো বেড়েছে। তাই আবার আমি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছি। ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, হাকালুকি হাওর এখন তার উত্তাল রূপ দেখাচ্ছে। ভয়াবহ ঢেউ তীরবর্তী এ এলাকাগুলোর রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি করছে। মানুষের কাঁচা বাড়িঘরও ভাঙছে। হাওর পাড়ের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ইউনিয়নের অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত তিনহাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। গভীর নলকূপগুলো ডুবে যাওয়ায় ইউনিয়নে বিশুদ্ধ পানি তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসিদের এমন বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াতে তিনি সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী বলেন, বন্যায় যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ প্লাবিত থাকায় আমরা নিজেরা পানিবন্দি থেকে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। কুলাউড়ায় ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা ১১৬টি। ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সরকারিভাবে নগদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৬২০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ জানান, পৌরসভার ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও খাবার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
০৩ জুলাই, ২০২৪

মেয়র প্রার্থী রফিকের ভাইয়ের সন্ত্রাসে আতঙ্কিত ভোটাররা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন ঘিরে গোটা এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বর্তমান মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিকের সমর্থকরা ভোটারদের নানা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘু ও দরিদ্র ভোটারদের ডেকে ডেকে তার পক্ষের লোকজন হুমকি দিচ্ছেন, রফিকের ‘জগ মার্কায়’ ভোট না দিলে এলাকায় থাকা যাবে না, পরিণতি হবে ভয়াবহ। তার পক্ষে এলাকায় অস্ত্রধারীরা মহড়া দিচ্ছে বলেও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটাররা তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কি না বা সুষ্ঠু ভোট হবে কি না, তা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আগামী ২৬ জুন কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে রফিকুল ইসলাম রফিক ছাড়াও মেয়র পদে দেওয়ান আবুল বাদশা মোবাইল ফোন প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি ওই পৌরসভার সাবেক মেয়র। স্থানীয়রা বলছেন, শুরুর দিকে ভোটের মাঠ শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, পরিস্থিতি ততই উত্তপ্ত হচ্ছে। এরই মধ্যে বর্তমান মেয়র রফিকের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম শফি ও মেয়রের আরেক সহযোগী আমিনুল হক খোকন ও তাদের অনুসারীদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন ভোটাররা। তারা এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। কাঞ্চন এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক শফিক ও খোকনের বিরুদ্ধে হত্যা, দস্যুতাসহ নানা অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। ভোটাররা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নানা তথ্য মিললেও আতঙ্কে কেউ নিজের নাম-পরিচয় জানাতে চাচ্ছেন না। কাঞ্চন পৌর এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, শফিক ও খোকনকে অস্ত্র ও টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে ক্যাসিনো জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত মেয়র রফিকের আরেক ভাই বিদেশে পলাতক তারিকুল ইসলাম মোঘল। এই ভাইয়ের বিরুদ্ধেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। মোঘলের টাকায় এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে কাঞ্চন এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন ভোটারের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মহড়া দিচ্ছে। অপরিচিত মুখ দলবেঁধে রফিকের পক্ষে এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করছে। একজন প্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা কালবেলাকে বলেন, কেউ ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী বা তার লোকজন ভোটারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঞ্চন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রফিকের পুরো পরিবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। দীর্ঘ বছর ধরে এই পরিবারের লোকজন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালালেও এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। রফিক ও তার ভাইয়েরা এলাকার নিরীহ মানুষের জমিজমা, ভিটেমাটি দখলের পর তা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ওই এলাকার স্থানীয় তারইল, রানীপুরা, কালাদী, চরপাড়া, দীঘলিয়াসহ আশপাশের এলাকার লোকজন বলছেন, এক সময় রফিকের পরিবারের কিছুই ছিল না। তার বাবা মরহুম হারুন তাঁত কারখানায় একজন সাধারণ শ্রমিক ছিলেন। বাবার দেখানো পথে রফিকও তাঁত কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি শ্রমিক নেতা মোক্তার দেওয়ানকে প্রকাশ্য দিনদুপুরে কুপিয়ে হত্যা করে আলোচনায় আসেন। এরপর নিজেই হয়ে যান শ্রমিক নেতা। রফিকের উত্থানের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন বলেন, শ্রমিক নেতা হওয়ার পর বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে ভাড়ায় লোক পাঠাতেন রফিক। এতে বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। নেতাদের আশীর্বাদে তিনি কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সভাপতির পদটি বাগিয়ে নেন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে নিজস্ব একটি বলয় গড়ে তোলেন। বখাটেদের নিয়ে গড়ে তোলেন একটি গ্রুপ, যাদের কাজই ছিল বিভিন্ন এলাকায় টহল দিয়ে নিরীহ মানুষদের তুলে এনে নিজের টর্চার সেলে আটকে ভয়ভীতি এবং নির্যাতন চালানো। অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিক নেতা মোক্তারকে হত্যার পর ২০১০ সালে রফিক-শফিকের বাহিনী কাঞ্চন টোল প্লাজার সামনে ডাকাতি করতে গিয়ে এক ট্রাক ড্রাইভারকে গুলি করে হত্যা করে। ২০১২ সালে শফিক-খোকনের নেতৃত্বে কাঞ্চন পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুন্নাহার নীলার ছেলে ও ছাত্রলীগ নেতা রাসেলকে বাড়ির ভেতরে মায়ের সামনে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের পৌর নির্বাচনেও কাঞ্চন পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী ছিলেন রফিকুল ইসলাম রফিক। ভোটের দিন পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের তারইল এলাকায় প্রতিপক্ষ প্রার্থীর এক কর্মীকে ভোটকেন্দ্রের সামনেই হত্যা করে শফিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা। যদিও ওই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। তবে স্থানীয় নেতাদের শেল্টারে তার দাপট কমেনি তাতেও। ২০১৯ সালে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এর পরপরই বেড়ে যায় রফিক, মোঘল ও শফিক বাহিনীর অপকর্ম। তারা নিজ বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে সংখ্যালঘুদের জমি দখল, পণ্যবাহী ট্রাক আর শীতলক্ষ্যা নদীতে চলাচলরত জাহাজ ও বালুবাহী বাল্কহেডে চাঁদাবাজি, নদীর মাটি কাটা, কৃষকের জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি, বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠান আর বালু ভরাটের ড্রেজারে চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্রের ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা কালবেলাকে বলেন, ভোটারদের মনোভাব বুঝতে পেরে নির্বাচনকে বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে রফিকের ভাই শফিক ও খোকন বাহিনী। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পৌর এলাকায় মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে। এরই মধ্যে ভোট দিতে অস্বীকার করায় পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রানীপুরা এলাকায় মোক্তার হোসেন নামে এক ভোটারের ওপর হামলা চালায়। ৮নং ওয়ার্ডের কলাতলী এলাকায় অন্য মেয়র প্রার্থী বাদশার ভাতিজা দেওয়ান বাবুলসহ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এসব অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফিক কালবেলার কাছে দাবি করেন, তার কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ নেই। তার ভাইয়েরাও সন্ত্রাসী কাজে যুক্ত নয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
২২ জুন, ২০২৪

অজি পেসারের কথায় আতঙ্কিত হন ইংলিশরা
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুটি দেশের মধ্যে আরেকটু হলেই যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলার জস হ্যাজলউড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার করা মন্তব্যের জেড়ে এমনকি নিষিদ্ধ হওয়ার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ। এতো গেল অস্ট্রেলিয়া দলের সে সময় কি অবস্থা ছিল ইংল্যান্ড শিবিরে? অজি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সে সময়ে ইংলিশ শিবির থেকে পাওয়া মেসেজের কথা। সম্প্রতি তার সতীর্থ জস হ্যাজলউডের ইংল্যান্ডকে বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি । হ্যাজলউড মন্তব্য করেন যে তারা স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে ইংল্যান্ডকে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বাদ দিতে চেষ্টা করবেন। ম্যাক্সওয়েল জানান যে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে তিনি সেসময় বেশ কিছু বার্তা পান যা হ্যাজেলউডের মন্তব্য ইংলিশ শিবিরে কীরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল তা বোঝা যায় । উল্লেখ্য ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপের সুপার ৮ পর্বে ওঠা নির্ভর করছিল অস্ট্রেলিয়ার পারফরম্যান্সের উপর। স্কটল্যান্ডের সাথে একটি হতাশাজনক বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়া এবং মিচেল মার্শের দলের বিরুদ্ধে খারাপ খেলার পর, বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা প্রায় বাদ পড়ার মুখে ছিল। ইংল্যান্ডকে যোগ্যতা অর্জন করতে হলে শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার স্কটল্যান্ডকে হারানো জরুরি ছিল। ম্যাচের আগে হ্যাজলউডের প্ররোচনামূলক মন্তব্যে অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া এমন কিছু করতে পারে যা ইংল্যান্ডকে বাদ দেবে, যা প্রচুর জল্পনা এবং অস্বস্তির সৃষ্টি করে। 'অস্ট্রেলিয়া এমন কিছু করবে যা ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ থেকে বাদ দিতে পারে,' হ্যাজলউডের এই বক্তব্যে অনেকেই ভাবতে বাধ্য হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া কি তাদের খেলা নিয়ে কোনো কারচুপি করতে চলেছে। অস্ট্রেলিয়া-স্কটল্যান্ডের উত্তেজনাপূর্ণ খেলায়, মার্শের দল চাপের মধ্যে ছিল, বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফেলে দেয় এবং ব্যাটিংয়ে দুর্বল পারফরম্যান্স করে। তবে এই সংগ্রাম সত্ত্বেও, তারা একটি সংকীর্ণ বিজয় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়, যা ইংল্যান্ডকে সুপার ৮ পর্যায়ে উন্নীত করে। ম্যাক্সওয়েল স্বীকার করেন যে মাঠে দলটি তাদের কৌশল নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মুখোমুখি হয়েছিল। 'হ্যাঁ, এখানে সেখানে কয়েকটি বার্তা পেয়েছি। এটা আসলেই মজার ছিল,' ম্যাক্সওয়েল ইএসপিএনের 'অ্যারাউন্ড দ্য উইকেট' পডকাস্টে শেয়ার করেন। 'মাঠে অনেক আলোচনা হচ্ছিল, 'আমরা কি এটা করছি? আমরা কি সত্যিই ইংল্যান্ডকে ফিরিয়ে আনছি?' এটা বেশ মজার খেলা ছিল। আমরা শুরুতে ভালো ব্যাটিং করিনি। আমাদের ছন্দ ঠিক ছিল না। আমি আউট হওয়ার সময়, এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যায় ছিল। এটি যে কোনো দিকে যেতে পারত, কিন্তু স্টয়নিস এসে দুর্দান্তভাবে খেলল এবং ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করল।' ম্যাক্সওয়েল আরও জানান, ম্যাচের সময় ইংল্যান্ড শিবিরে কী বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা তাদের ফিরতি  ফ্লাইট নাকি বুক এবং বাতিল করছিল, তারা তাদের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চিত ছিল। ' আমি শুনেছি এটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা ছিল। তারা হোটেলে ছিল এবং প্রচুর আতঙ্ক ছিল। লোকেরা ফ্লাইট বুকিং এবং বাতিল করছিল ইত্যাদি। এটি দেখতে মজার হত।' অবশেষে, অস্ট্রেলিয়ার সংকীর্ণ বিজয় ইংল্যান্ডের সুপার ৮ পর্বে ওঠা নিশ্চিত করে, কিন্তু অনেক উদ্বেগ এবং নাটক ছাড়াই নয়। আগামী ২১ জুন শুক্রবার সুপার ৮ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে।
১৯ জুন, ২০২৪

বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে ২০ শিক্ষার্থী আহত
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ফসল, ঘরবাড়ি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (৬ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া কালবৈশাখী ঝড় প্রায় দেড় ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে। প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়ায় উপজেলার অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উড়ে গেছে বসতঘরের টিনের চাল। উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। বড় বড় গাছ পড়ে আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বোরো ধান, আম ও কাঠালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ পড়ে উপজেলা ভূমি অফিসের একটি ভবন ভেঙে গেছে। এদিকে বারইয়ারহাট পৌর এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ে টিন উড়ে এসে পড়ে সিএনজি চালক আমলমগীর গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুলে ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় বজ্রপাতে আতঙ্কিত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার মিঠাছরা এলাকায় লাইনে বজ্রপাতে তিন ইঞ্চি পাইপ ফেটে যাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ।   জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভা, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন, মিঠানালা, ওয়াহেদপুর, দুর্গাপুর, খৈয়াছড়া, কাটাছরা ও ইছাখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে গাছপালা উল্টে গেছে। অনেক জায়গায় গাছ পড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি। এছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গাছপালা ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  কাটাছরা ইউনিয়নের কৃষক মুসলিম উদ্দিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমার জমিতে চাষ করা প্রায় ১ হাজার ২৫০ পিস সাম্মাম গাছ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেক গাছে ফলনও এসেছিল। এতে প্রায় আমার লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়া দেখে ক্লাসের ভেতরে আতঙ্কিত হয়ে আমার বিদ্যালয়ের সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ কাশেম বলেন, ঝড়ে আমার এলাকার অনেক জায়গায় গাছ-পালা ভেঙে অনেক ঘরবাড়ির টিন উপড়ে গেছে ও সড়কে গাছ পড়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. তন্ময় জামশেদ আলম জানান, সোমবার দুপুরে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছে। চট্টগ্রাম পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহমেদ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের অফিসের আওতাধীন প্রায় ৩০টি খুঁটি ভেঙে গেছে। অসংখ্য জায়গায় গাছপালা ভেঙে তার ছিঁড়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার আরও বিভিন্ন এলাকায় প্রায় আরও অর্ধশত বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যেতে পারে। আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছে, তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। ইউএনও মাহফুজা জেরিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলাজুড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপর বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। তিনি বলেন, মিঠাছরা এলাকায় লাইনে বজ্রপাত হয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কর্মীরা এসে লাইন মেরামতের কাজ করছে।
০৬ মে, ২০২৪

খুলনার আতাই নদীতে কুমির, আতঙ্কিত মানুষ
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার আতাই নদীর হাজীগ্রাম বেলেঘাট, কোলা, আড়ুয়া আবালগাতী এলাকায় বেশ কয়েকটি কুমির দেখা গেছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত নদী তীরের মানুষ। কখনো নিভৃতে আবার কখনো মাঝ নদীতে সাঁতার কাটতে দেখা যাচ্ছে বড় আকারের এই কুমিরগুলোকে। সুন্দরবন এলাকার নদী ছেড়ে কুমিরগুলো উজানে আসতে শুরু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন ও সাবধান করতে মাইকিং করা হচ্ছে। সেনহাটি ইউপি সদস্য মো. আকবর হোসেন জানান, বেশকিছু কুমির নদী বেয়ে আতাই নদীতে এসেছে। আতাই নদীতে অনেক কুমির দেখেছে এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার কুমিরগুলোকে নদীতে ভাসতে দেখা যায়। মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। সাধারণত সুন্দরবন এলাকার নদীগুলোতেই এসব কুমিরের বসবাস। কিন্তু বর্তমানে কুমিরগুলো দিঘলিয়া উপজেলার আতাই নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে। কী কারণে খুলনার রূপসা, আতাই, মজুদখালী ও ভৈরব নদীতে এসব কুমির ছড়িয়ে পড়েছে তা জানা যায়নি। নদী তীরের মানুষকে দিন ও রাতে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা নৌকা ও নদী পারাপারকারী যাত্রী এবং স্থানীয়দের রাতের অন্ধকারে নদীতে গোসল করতে না নামার অনুরোধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, নদী তীরের মানুষদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে বলা হয়েছে। কুমিরগুলোকে উদ্ধার করে দ্রুত সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে।
০৪ মে, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে ১৫ মাসে ৫৫০ ডাকাত গ্রেপ্তার, আতঙ্কিত গ্রামবাসী
নারায়ণগঞ্জে গত ১৫ মাসে ডাকাতির ঘটনা ও প্রস্তুতিকালে ৫৫০ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় ১০৫টি মামলা হয়েছে। তবুও থেমে নেই এসব ঘটনা। অবশেষে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,  ২০২৩ সাল ও ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় ২৮টি মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোতে মোট ৯৯ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ২৮টি ডাকাতির ঘটনায় মোট ২৪টি ঘটনার রহস্য ‍উদ্‌ঘাটন ও লুণ্ঠিত বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। বাকি ৪টি ঘটনা তদন্তাধীন আছে। উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এর মধ্যে সদর মডেল থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ডাকাতির কোনো ঘটনা এবং মামলাও নেই। ফতুল্লা মডেল থানায় ৩টি ডাকাতির মামলায় ৩ জন, বন্দর থানায় ৬টি মামলায় ১৭ জন, সোনারগাঁ থানায় ৭টি মামলায় ২৯ জন, রূপগঞ্জ থানায় ৫টি মামলায় ১৭ জন ও আড়াইহাজার থানায় ৭টি মামলায় ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৭৭টি ঘটনায় কয়েকশ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০২৩ সাল ও ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৭৭টি ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় ৭৭টি মামলায় ৪৫১ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সবাইকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। সদর মডেল থানায় ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় ৯টি মামলায় মোট ৪৯ জন, ফতুল্লা মডেল থানায় ১৮টি মামলায় ৯৬ জন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৮টি মামলায় ৬২ জন, রুপগঞ্জ থানায় ১৫টি মামলায় ৯৪ জন, আড়াইহাজার থানায় ১০টি মামলায় ৫২ জন ও সোনারগাও থানায় ১০টি মামলায় মোট ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে গত ১৭ মার্চ দিনগত রাতে সোনারগাঁয়ে মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনিতে চার জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন। পরে আহত ডাকাতের জবানবন্দি নেওয়া হলে, ডাকাতির পরিকল্পনার কথা বেরিয়ে আসে।  নিহতরা হলেন- সোনারগাঁ উপজেলার রাজাপুর শেখেরহাট গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে জাকির হোসেন (৩৬), জাকিরের নামে ৭টি মামলা রয়েছে। আড়াইহাজারের কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের শামসুল হকের ছেলে আব্দুর রহিম (৪৮), তার বিরুদ্ধেও ৭টি মামলা রয়েছে। একই উপজেলার জালাকান্দী গ্রামের মজিদ হোসেনের ছেলে নবী হোসেন (৩৫) তার বিরুদ্ধে ১টি মামলা এবং একই উপজেলার মর্দাসাদী গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শের আলী (৩৩), তার বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। আহত মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। তারা ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। মামলা সূত্রে জানা যায়, ডাকাতির উদ্দেশ্যে ডাকাত সর্দার নিহত জাকির হোসেন ১৭ মার্চ রাতে সোনারগাঁ উপজেলার বাঘরী বড়বিলে ডাকাত সদস্যদের জড়ো হতে বলেন। সেখানে জড়ো হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় গ্রামবাসী বিষয়টি টের পেয়ে যায়। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের গণপিটুনি দেয় তারা। এ ঘটনায় চারজন মারা যান। ইতিমধ্যে নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর আড়াইহাজারে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে ৮ জন নিহত হন, আহত হয় অন্তত আরও চারজন। ২০২২ সালের ২ অক্টোবর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা টোল প্লাজায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার গাড়ি চালককে কুপিয়ে টাকা, মোবাইল ফোন ও ব্যাংকের কার্ড নিয়ে গেছে একদল ডাকাত। এদিকে ডাকাত আতঙ্কে আছেন গ্রামবাসী। সোনারগাঁও বাঘরী এলাকার গ্রামবাসী সামছুল আলম বলেন, প্রায়ই এই গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। মানুষের সর্বস্ব লুট করে ডাকাতরা নিঃস্ব করে চলে যায়। আমরা রাতের বেলায় ভয়ে থাকি। ডাকাতি কমাতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী এলাকার তানভীর বলেন, আড়াইহাজার ডাকাতের গ্রাম হিসেবে পরিচিত। আমরা তাদের ভয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকি। আমরা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাই। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিরসনে হাইওয়েসহ বিভিন্ন স্থানে রাত্রিকালীন ও দিনের বেলা পেট্রোল টিম থাকে। এরপরও যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখনই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়। গত এক বছরে জেলায় যে ২৮টি ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে অধিকাংশ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছি। প্রায় ৯৯ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ছাড়া ৭৭টি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা হয়েছে। সেখানেও অনেক ডাকাত গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর ডাকাতির ঘটনা হ্রাস পেয়েছে। আর ডাকাত গ্রেপ্তারের সংখ্যাও বেড়েছে। তারপরও বিচ্ছিন্ন দু-একটা ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার সংখ্যা আরও কমিয়ে আনারর জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছি। মার্কেটগুলোতে পাহারাদার নিয়োগ করার কথা বলেছি, হাইওয়ে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে বলেছি।  এ বিষয়ে সরকারী তোলারাম কলেজের উপাধ্যক্ষ জীবন কৃষ্ণ মোদক বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে ডাকাতি বেড়ে চলেছে। এটি প্রতিকার করতে হলে আইনশৃঙ্খলার কঠোরতা বাড়াতে হবে এবং গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে।  সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নারায়ণগঞ্জের সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, এককভাবে ডাকাতির ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলার অবনতিকেই বুঝায়। পাশাপাশি আমরা যেটা মনে করি সমাজে যখন এক ধরণের অসুস্থ প্রতিযোগীতা ‍ও দুর্নীতি লক্ষ্য করা যায় তার প্রমাণই হচ্ছে এই ধরনের ডাকাতি, চুরি ও ছিনতাই। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়া, মানুষের আয়-ব্যয়ের বৈষম হওয়া,.দেশের অর্থনৈতিক অবনতি, বেকার সমস্যাও এটি বৃদ্ধির কারণ।  তিনি বলেন, প্রতিকার করতে হলে, সমাজে দুর্নীতি কমিয়ে নিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা সহনশীল করার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রব্যর দাম ‍বৃদ্ধির সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। সরকারের দায়িত্বশীল প্রশাসনরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেই ডাকাতি ঘটনা কমানো সম্ভব। মোট কথা সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে হবে। নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি রফিউর রাব্বী বলেন, আমরা মনে করি একটা মানুষকে ডাকাত কিংবা অপরাধী হিসেবে সমাজ তৈরি করে এটা তো ব্যক্তিগত কোনো অপরাধ না। অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মানুষের জীবনধারন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এটি পরিবর্তন করা জরুরি। না হলে এই দস্যূতা বা ডাকাতির ঘটনা থেকে বের হয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়বে।
২৮ মার্চ, ২০২৪

‘নামাজরত অবস্থায় হঠাৎ গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি’
‘যখন নামাজ আদায় করছিলাম, তখন গুলির বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম। এতটা ভয় পেয়েছিলাম বলার ভাষা নেই।’ বৃহস্পতিবার (৮  ফেব্রুয়ারি) সকালে কালবেলাকে কথাগুলো বলছিলেন কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালীর বাসিন্দা কবির আহমেদের স্ত্রী সুফাইরা। থাইংখালীর আরেক বাসিন্দা সালাউদ্দিন কাদেরীর অভিজ্ঞতাও প্রায় একই। তার সঙ্গে কথা হলে কালবেলাকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে গুলির বিকট শব্দে ঘুমাতে পারি না। ঘুম থেকে চমকে চমকে উঠতে হয়। আমরা তো সীমান্ত থেকে দূরে, সীমান্ত এলাকার মানুষের অবস্থা আরও ভয়ানক।’ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালীতে যখন মসজিদের মিনার থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসছিল ঠিক তখনই মুহুর্মুহু গুলির বিকট শব্দ আসতে থাকে। এতে সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের থাইংখালীর সব বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। গুলির বিকট শব্দে কাঁপতে থাকে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত। এর আগে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উখিয়ার থাইংখালীর রহমতেরবিল সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসে ১৩৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি। সেদিন সবচেয়ে বেশি গোলাগুলি হয়েছে সেখানে। গতকাল বুধবার গোলাগুলির শব্দ কম শুনতে পান স্থানীয়রা। কিন্তু ভোর না হতেই আজ গুলির বিকট শব্দে আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রহমতেরবিল সীমান্ত থেকে ৪/৫ কিলোমিটার দূরে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়েও মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে ৬৪ জন বিজিপি সদস্য। সেখানেও গতকাল গোলাগুলি হয়। পালংখলী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড রহমতেরবিলের ইউপি সদস্য আলতাছ আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি গোলাগুলি হয়েছে আমার এলাকায়। বুধবারও মাঝেমধ্যে গুলির শব্দ শোনা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গুলির বিকট শব্দে ঘুম ভেঙেছে। এলাকাবাসী খুবই ভয়ে আছে। সীমান্ত লাগোয়া ঘরগুলো থেকে কয়েকটি পরিবারে নারী ও শিশুরা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বড় পতনেও আতঙ্কিত নয় শেয়ারবাজার
দীর্ঘ দেড় বছর পর লেনদেনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ফিরল দেশের শেয়ারবাজার। এতদিন লেনদেনে শেয়ারের দর কমার সর্বনিম্ন সীমা বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে কৃত্রিমভাবে বাজার ধরে রাখা হয়েছিল। তবে বিধিনিষেধমুক্ত লেনদেনের প্রথম দিন গতকাল রোববারের শুরুতে একসঙ্গে ২১৪ পয়েন্ট হারিয়ে বসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মূল্য সূচক ডিএসইএক্স। এতে অনেক বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূচক কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। দিন শেষে ৯৬ পয়েন্ট হারিয়ে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে সূচক। ফলে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক অনেকটাই কেটে যায়। মূল্যসীমা উঠে যাওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হলে কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের পুঁজিবাজারে সুবাতাস বইতে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশা করছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, যেসব বিনিয়োগকারীর মার্জিন ঋণ নেই, তাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আর দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধকতা মুক্ত লেনদেনের শুরু দিকে বাজারের আচরণ কিছুটা ‘অস্বাভাবিক’ হওয়াই স্বাভাবিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেছেন, ‘পুঁজিবাজারে যেসব বিনিয়োগকারীর মার্জিন ঋণ নেই, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের শঙ্কিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।’ এদিকে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ ব্রোকার হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন সিইও ফোরাম। ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে যাচ্ছে। ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই, যাতে বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পায়। তাই বাজার নিয়ে উদ্বেগের তেমন কিছু নেই। শুধু ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের কারণে যাতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত না হন, বাজারে বিক্রির চাপ তৈরি না হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’ পুঁজিবাজারে বড় ধরনের পতন ঠেকানোর যুক্তিতে সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৮ জুলাই শেয়ার লেনদেনে সর্বনিম্ন মূল্যসীমা আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে ১৬৭টি কোম্পানির উপর থেকে এই সীমা প্রত্যাহার করা হয়। তবে গত বছরের মার্চে আবারও সব শেয়ারের উপর এই বিধান কার্যকর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই সীমা বহাল রাখায় কারণে বাজারে লেনদেনের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। এ কারণে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করতে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জানুয়ারি বিএসইসি মূল্যসীমা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। তবে সূচকে প্রভাব রাখে এমন ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের ওপর এখনো মূল্য সীমা বহাল রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব কোম্পানির ওপর থেকেও বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া উচিত। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় পর রোববার ছিল প্রথম কার্যদিবস। এদিন লেনদেন শুরু হতেই প্রায় সব শেয়ারের বিপুল পরিমাণ বিক্রির চাপ আসে। এতে ১০ মিনিটের মধ্যেই ডিএসইর প্রধান সূচক কমে ২১৪ পয়েন্ট। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধসের আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বিক্রির চাপ কিছুটা কমতে থাকে। এতে দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। অনেকগুলোর মূল্য হ্রাসের মাত্রা কমে আসে। ফলে বড় ধরনের ধসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। অবশ্য এর পরও প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে এর মধ্যেও ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৫৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের মূল্য বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ২৯৬টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে নেমে গেছে। বাকি দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের তুলনায় ৪৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা কমেছে। সারা দিনে লেনদেন হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৬৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। বাজার পরিস্থিতি বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধকতা মুক্ত হওয়ার পর প্রথম দিনে সূচক ৯০ পয়েন্টের মতো কমেছে। এটা তেমন কিছু নয়। অনেকে মনে করেছে, অনেক বড় ধস হবে। কাল-পরশুর দিকে আশা করছি ঠিক হয়ে যবে। উত্থান-পতন শেয়ার বাজারেই হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে প্রথম দিনের কারণে টার্নওভার তেমন বেশি হয়নি। আগামী দিনে এটি বাড়বে। অবশ্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে শেয়ারবাজার এখন খুব বেশি ভালো হবে—এমন আশা করা যায় না। আমাদের ডলার এক্সচেঞ্জে রেট এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশিরা সন্দিহান, সুদ হার বাড়ছে। ফলে শেয়ারবাজার কিছুটা খারাপ যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘এখনো ৩৫ কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়নি। সেখানে সূচকে বা টার্নওভারে প্রভাব রাখে এমন সব কোম্পানি রয়েছে। সেজন্য পর্যায়ক্রমে সেসব কোম্পানিকেও ফ্লোর প্রাইসমুক্ত করতে হবে।’
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

রাঙামাটিতে আঞ্চলিক গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি, আতঙ্কিত স্থানীয়রা
রাঙামাটির রাজস্থলীতে দুই আঞ্চলিক সংগঠনের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ঘটনার তৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।  শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার দুর্গম গাইন্দা ইউনিয়নের মাঝামাঝি ও বাঙ্গালহালিয়া আগাপাড়া ম্রংখ্য পাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। চন্দ্রঘোনা থানার ওসি আনসারুল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সকাল আঞ্চলিক দুই দলের মধ্যে ঘণ্টা দুয়েক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।  তিনি আরও জানান, যতটুকু জানি পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন (জেএসএস) ও মারমা ন্যাশনাল পার্টির (এমএনপি/মগপার্টি) মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে এখনো যাওয়া সম্ভব হয়নি। কী পরিমাণ গোলাগুলি হয়েছে তার সঠিক তথ্য আমরা এখনো পাইনি, তবে কেউ কেউ বলছে  তিন থেকে ৪০০ আবার কেউ কেউ বলছে এক হাজার রাউন্ডেরও বেশি। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, এই ঘটনায় দুপক্ষের প্রায় ১ হাজার রাউন্ডের বেশি গোলাগুলি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  এ বিষয়ে দুই আঞ্চলিক সংগঠনের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 
২০ জানুয়ারি, ২০২৪

অপ্রস্তুত ইংল্যান্ড, আতঙ্কিত বাউচার
ভারতের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে আসছে ইংল্যান্ড দল। ২৫ জানুয়ারি হায়দরাবাদে শুরু হবে সেই সিরিজ। গুরুত্বপূর্ণ সেই সিরিজ সামনে রেখে আবুধাবিতে ১১ দিনের প্রস্তুতি শিবির করছে ইংল্যান্ড দল। এটা না করে কেন ভারতে এসে ইংল্যান্ড দল অনুশীলন করছে না, তা দেখে অবাক সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার মার্ক বাউচার। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের আগে ভারত আসবে ইংল্যান্ড। এক ওয়েবসাইটের পডকাস্টে বাউচার বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, এখন যদি আমি খেলতাম তাহলে বেশ ভয়ই পেতাম। এই ছেলেগুলো জুলাই থেকে কোনো টেস্ট খেলেনি। সেপ্টেম্বরে কাউন্টি শেষ হয়েছে। সেখানেও খুব বেশি কাউকে খেলতে দেখিনি। তার পরও তিন মাস হয়ে গেল। এখনো সেভাবে কোনো টেস্ট খেলা হলো না।’ প্রস্তুতি না নিয়ে ভারত সফরে আসতে যাওয়া ইংল্যান্ডকে দেখে আতঙ্কিত বাউচার আরও বলেন, ‘যদি হঠাৎ করে কোনো প্রতিযোগিতায় আমাকে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং উইকেটে দাঁড়িয়ে গার্ড নিই, তাহলে বেশ ভয়ই পেয়ে যাব। অ্যাশেজের আগেও কোনোরকম প্রস্তুতি নেয়নি ওরা। দেখেছিলাম ০-২ পিছিয়ে পড়েছিল। তার পরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
১৪ জানুয়ারি, ২০২৪
X