ইউরো ২০২৪ / ডাচদের হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোতে অস্ট্রিয়া
জার্মানিতে চলমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে (ইউরো) বড় চমকের জন্ম দিয়েছে অস্ট্রিয়া। নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের মতো ফুটবল পরাশক্তির গ্রুপে থেকেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ইউরোর শেষ ষোলোতে পা রেখেছে দলটি। মঙ্গলবার (২৫ জুন) নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে গ্রুপ ডি-এর শীর্ষে থেকে শেষ ১৬-তে পৌঁছেছে অস্ট্রিয়া। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ডাচ এবং ফরাসিদের সঙ্গে কঠিন গ্রুপে পড়া সত্ত্বেও রালফ রাংনিকের দল ৩টি ম্যাচের মধ্যে দুইটিতে জয়লাভ করে গ্রুপ টপার হয়। যদিও নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্স ইতোমধ্যেই শেষ ১৬-তে তাদের স্থান নিশ্চিত করেছিল। তবে এখন ডাচদের সেরা তৃতীয় স্থান অধিকারী দল হিসেবে যেতে হচ্ছে। অন্যদিকে দিনের আরেক ম্যাচে পোলান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফ্রান্সকে যেতে হচ্ছে শেষ ষোলোতে। তবে দুই দলের ব্যর্থতার চেয়েও অস্ট্রিয়া এই জয়ে নিজেদের দক্ষতা এবং দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বার্লিনে খেলার ষষ্ঠ মিনিটেই অস্ট্রিয়া অ্যালেক্সান্ডার প্রাসের ক্রস থেকে ডোনেল ম্যালেনের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায়। যদিও ম্যালেন পরবর্তীতে একটি সুযোগ পান প্রায়শ্চিত করার। তবে তিনি গোল করতে ব্যর্থ হন। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া খেলার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে এবং নেদারল্যান্ডসকে বলের দখলে সংগ্রাম করতে বাধ্য করে। রাংনিকের দলও মার্সেল সাবিতজার এবং মার্কো আর্নাটোভিচের মাধ্যমে লিড বাড়ানোর কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল তবে তারা কাজে লাগাতে পারেনি। অন্যদিকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মাত্র ৭৫ সেকেন্ডে ডাচ স্ট্রাইকার কোডি গ্যাকপো নেদারল্যান্ডসের সমতা ফেরান। গোলের পর নেদারল্যান্ডসের তীব্র আক্রমণ অস্ট্রিয়াকে চাপে ফেলে। ভার্জিল ভ্যান ডাইকের হেডার অল্পের জন্য বারে লেগে বাইরে চলে যায়। তবে, অস্ট্রিয়া দ্রুত নিজেদের সামলে নিয়ে রোমানো স্মিডের হেডারে পুনরায় লিড নেয়, যা স্টেফান ডে ভ্রিজের গায়ে লেগে জালে ঢুকে যায়। মেমফিস ডেপাই অবশ্য ৭৫ মিনিটে একটি ভলিতে নেদারল্যান্ডসের জন্য সমতা আনেন। খেলার শেষদিকে, মার্সেল সাবিতজার একটি দুর্দান্ত শটে অস্ট্রিয়ার জয় নিশ্চিত করেন, যা অস্ট্রিয়ান সমর্থকদের আনন্দে ভাসিয়ে দেয়। এই জয় অস্ট্রিয়ার সক্ষমতা এবং দৃঢ়তার প্রমাণ, যা তাদের টুর্নামেন্টের পরবর্তী ধাপে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কোনো দলই এখন রাফ র‌্যাংনিকের শিষ্যদের সামনে পড়তে চাইবে না।
২৬ জুন, ২০২৪

ইউরোতে অস্ট্রিয়া ও ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ জয়
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোর ফুটবল শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের প্রতিযোগিতা উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ২৪ দলের এই আসরে গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রিয়া ও ইউক্রেন। ক্রিস্টোফ বাউমগার্টনার এবং মার্কো আরনাটোভিচের শেষ সময়ে করা গোলে পোল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রিয়াকে একটি কঠিন জয় এনে দিয়েছে। এই জয় তাদের ইউরো ২০২৪-এর শেষ ১৬-তে পৌঁছানোর আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রুপ ডি-তে উভয় দলই তাদের প্রথম ম্যাচে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের কাছে পরাজিত হওয়ায়, বার্লিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটি তাদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। গ্রুপ পর্বের খেলা হলেও খেলাটি একটি নকআউট ম্যাচের অনুভূতি এনে দিচ্ছিল এবং অলিম্পিয়াস্টেডিয়ামে উপস্থিত ভক্তদের উন্মত্ত উৎসাহ ম্যাচটিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলে। অস্ট্রিয়া প্রথমে আঘাত হানে যখন গেরনোট ট্রাউনারের হেডারে ফিলিপ মওয়েনের ক্রসটি জালে পৌঁছায়। প্রথমে সংগ্রামরত পোল্যান্ড অবশ্য দ্রুত ম্যাচে ফিরে আসে এবং ৩০ মিনিট পর ক্রিজটোফ পিয়াতেকের গোলে সমতায় ফেরে। জন বেডনারেকের শট ব্লক হওয়ার পর পিয়াতেক রিবাউন্ড থেকে বল জালে পাঠান। ম্যাচটি ড্রয়ের দিকে এগোতে থাকলেও শেষ মুহূর্তে আরনাটোভিচের ডামি বাউমগার্টনারকে গোল করার সুযোগ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর, অস্ট্রিয়ার অধিনায়ক মার্শেল সাবিৎজারকে শেজনিজ ফাউল করলে পেনাল্টি থেকে আরনাটোভিচ অস্ট্রিয়ার জয় নিশ্চিত করে। এই জয়টি অস্ট্রিয়ার অভিযানকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে, যারা শেষ ম্যাচ ডর্টমুন্ডে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে। অন্যদিকে, পোল্যান্ডের সম্ভাবনা খুবই মলিন। ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ ড্র হলে পোল্যান্ড ইউরো ২০২৪ থেকে প্রথম বিদায় নেওয়া দল হতে পারে। এমনকি সেই পরিস্থিতি এড়ানো গেলেও, পোল্যান্ডকে তাদের শেষ ম্যাচে ফ্রান্সকে হারাতে হবে, যা লেওয়ানডোভস্কি পুরোপুরি ফিট থাকলেও একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। দিনের অন্য আরেকটি রোমাঞ্চকর ম্যাচে, রোমান ইয়ারেমচুক ইউক্রেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গোল করে স্লোভাকিয়াকে পরাজিত করে তাদের ইউরো ২০২৪ আশা জীবিত রাখেন। স্লোভাকিয়া ১৭ মিনিটে ইভান শ্রাঞ্জের মাধ্যমে এগিয়ে যায়, কিন্তু ইউক্রেন ৫৪ মিনিটে মাইকোলা শাপারেঙ্কোর গোলে সমতা ফেরায়, যা ওলেক্সান্দ্র জিনচেঙ্কোর ক্রস থেকে আসে। শাপারেঙ্কোর সমতার গোলের দশ মিনিট পরে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামা ইয়ারেমচুক স্মার্ট ফিনিশ করে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করেন। এটি ইউরোর ইতিহাসে ২০১২ সালের পর ইউক্রেনের প্রথমে গোল খেয়েও বিজয়। প্রথমার্ধে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও, দ্বিতীয়ার্ধে ইউক্রেনের লড়াকু মনোভাব তাদের জয়ের পথে নিয়ে যায়, যেখানে গোলরক্ষক আনাতোলি ট্রুবিনের গুরুত্বপূর্ণ সেভগুলো সাহায্য করে। এই জয় ইউক্রেনকে স্লোভাকিয়া এবং রোমানিয়ার সাথে সমান পয়েন্টে নিয়ে এসেছে, যারা পরবর্তী ম্যাচে বেলজিয়ামের মুখোমুখি হবে। ইয়ারেমচুকের আবেগপ্রবণ উদযাপন ইউক্রেনের জয়ের গুরুত্বকে ফুটিয়ে তোলে, যারা এখন টুর্নামেন্টে অগ্রসর হওয়ার নতুন আশা নিয়ে মাঠে নামবে।
২২ জুন, ২০২৪
X