দেশের অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা, শোভাযাত্রা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন, পূজাসহ নানা আয়োজনে পালিত হলো শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল বৌদ্ধ বিহারে বুধবার (২২ মে) দিনভর ভক্তদের ঢল নামে। সারা দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শ্রদ্ধা ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন। বৌদ্ধ ধর্মমতে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই তিন স্মৃতিবিজড়িত বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। ত্রি স্মৃতি বিজড়িত এ দিনটিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৈশাখ দিবস হিসেবে উদযাপন করে।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেন। এতে আট শতাধিক অতিথিসহ এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে তিন পর্বে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল ৬টা এক মিনিটে শুরু হওয়া প্রথম পর্বে ছিল জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন। এরপর ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ গ্রহণ, বুদ্ধপূজা, শীল গ্রহণ এবং অষ্ট পরিষ্কার দানসহ ভিক্ষুসংঘের পিণ্ডদান। সন্ধ্যায় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য’ নিয়ে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার আলোকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকায় নিযুক্ত শ্রীলংকার হাইকমিশনার ধর্মপালা ভীরাক্কোডি ও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং।
অনুষ্ঠানে আশির্বাদক বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ ধর্মপ্রিয় মহাথের। সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথের। রাত আটটার পর শুরু হওয়া বুদ্ধ পূর্ণিমার তৃতীয় পর্বে হাজারো শিক্ষার্থীর প্রদীপ প্রজ্বলন, সমবেত প্রার্থনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এছাড়া বাসাবো ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারেও পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ও বিহারে এই দিনকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ মেলা বসে। সবচেয়ে বড় মেলা হয়েছে চট্টগ্রামের বৈদ্যপাড়া গ্রামে, যা বোধিদ্রুম মেলা নামে সমধিক পরিচিত। এ উপলক্ষে বন্ধ ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান।
মন্তব্য করুন