আল্লাহ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। দিনের শুরু যে নামাজ দিয়ে হয় সেটি ফজরের নামাজ। প্রতি ওয়াক্তের নামাজের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম।
আপনি যদি নিয়ম না জেনে নামাজ পড়েন তাহলে আপনার নামাজ কবুল হবে না।
এ জন্য নামাজের নিয়ম জানা জরুরি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার সবকিছুর চেয়ে উত্তম। (মুসলিম, হাদিস: ১,৫৭৩)
ফজরের নামাজের প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত ও পরে দুই রাকাত ফরজ।
আরবি-উচ্চারণ
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْفَجْرِ سُنَّةُ رَسُوْلُ للَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ-
বাংলা-উচ্চারণ
নাওয়াইতু আন উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই সালাতিল ফাজরে সুন্নাতু রাছুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা অর্থ
ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার।
এরপর ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হবে।
আরবি উচ্চারণ
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْفَجْرِ فَرْضُ للَّهِ تَعَا لَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ-
বাংলা উচ্চারণ
নাওয়াইতু আন উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই সালাতিল ফাজরে ফারযুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈমামের পিছনে পড়লে ফারদীল্লা-হি তাআ'লা বলার পরে ইকতাদাইতু বিহা-যাল ইমাম বলতে হবে।
বাংলা অর্থ
ফজরের দুই-রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার উদ্দেশে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম, আল্লাহু আকবার।
সর্বপ্রথম অজু করে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে এবং নিয়ত করতে হবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে তাকবিরে তাহরিমা অর্থাৎ হাত বাঁধতে হবে। এরপর মনে মনে ছানা পড়তে হবে।
ছানা:- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলাহা গইরুক।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নাই।
এরপর আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। এরপর আবার বিসমিল্লাহ বলে একটি ছোট সূরা পড়বেন। অবশ্যই এটা নিঃশব্দে পড়তে হবে।
এরপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে গিয়ে পাঠ করবেন, “সুবহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আযিম”। কমপক্ষে তিনবার পাঠ করবেন এবং বেশি পাঠ করলে বেজোড় সংখ্যক পাঠ করতে হবে।
এরপর “সামি আল্লাহু লিমান হামিদা” বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন। এরপর আল্লাহু আকবার বলে সেজদাতে চলে যাবেন। সেজদায় গিয়ে বলবেন “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা”।
আবারও আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সেজদা করবেন। দ্বিতীয় সেজদায় তসবিহ্ পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
এবার প্রথম রাকাতের মতো আবারও নিঃশব্দে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পাঠ করবেন এবং রুকু ও সেজদা করতে হবে।
দ্বিতীয় রাকাতে দ্বিতীয় সিজদার পর আল্লাহু আকবার বলে বসবেন। এই বসাকে বলে “আখেরি বৈঠক”। এখন তাশাহুদ পাঠ করতে হবে।
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
বাংলা উচ্চারণ-
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্ ত্বায়্যিবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, আসসালামু আলাইনা ওয়া ‘আলা ইবাদিল্লাহিস সলিহিন, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।
অর্থ : সকল সম্মান, সকল উপাসনা ও সকল পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর সকল অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি নাযিল হোক। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাদের উপরে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (স.) তাঁর বান্দা ও রাসূল।
তাশাহুদ পাঠের পর দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করবেন।
ٱللَّٰهُمَّ صَلِّ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ٱللَّٰهُمَّ بَارِكْ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
বাংলা উচ্চারণ-
আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
এরপর ডানদিকে সালাম ফিরাতে হবে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ”। অতঃপর বামদিকে একই বাক্য পাঠ করে সালাম ফিরাতে হবে।
নিয়ত করার পর প্রথমে যেভাবে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েছেন এটাও একই ভাবে পড়বেন কিন্তু কিছু পরিবর্তন আছে।
এই নামাজের নিয়ত হতে হবে ফজরের ফরজ নামাজের। এই নামাজে তেলাওয়াত অর্থাৎ সূরা গুলো উচ্চ স্বরে পাঠ করতে হবে। যেভাবে সুন্নত নামাজে সবগুলো তসবিহ আদায় করেছেন এখানেও সেভাবেই তসবিহ আদায় করতে হবে।
মন্তব্য করুন