বিতর, Witr, الوتر আরবি শব্দ যার বাংলা অর্থ বিজোড়। صلاة الوتر বিজোড়ের নামাজ তথা বেতর নামাজকে বোঝানো হয়।
যা প্রত্যেক মুসলিম বালেগ বালিগা নর-নারীর ওপর প্রতিদিন এশার নামাজের পর থেকে ফজরের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত আদায় করা ওয়াজিব।
কেননা রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হাদিসে পাকের মধ্যে এরশাদ করেন আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন বিজোড় এবং তিনি বিজোড় নামাজকে পছন্দ করেন। অতএব তোমরা বিজোড় সালাত (বিতর সালাত) আদায় কর। তিরমিজি
নিয়ত মানে মনের সংকল্প। প্রায় সকলেই নিয়ত সম্পর্কে যে ভুলটি করে থাকি সেটি হল। নিয়তের ক্ষেত্রে আমরা আরবি নিয়ত কে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। মূলত বিষয়টি এরকম নয় নিয়ত নিজ মাতৃভাষায় করাটা অনেক ক্ষেত্রে আরবি থেকে উত্তম।
কেননা আরবি গ্রামারের পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান আমাদের না থাকায় নিয়তের মধ্যে অনেক ভুল করে থাকি। কিন্তু দেখুন নিজ ভাষায় যখন নিয়ত করবেন তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যাই হোক আমরা আপনাদের সাথে বিতর নামাজের আরবি এবং বাংলা উভয় নিয়তই শেয়ার করব।
ভেতর নামাজের নিয়ত ফরজ নামাজের ন্যায় ৩ ভাবে হতে পারে (একাকী, যামাত বন্দি হয়ে এবং নিজে ইমাম হলে)। তাই এই ভিন্ন পরিস্থিতিতে আপনাকে ভিন্নভাবে নিয়ত বাঁধতে হবে।
নিয়তের ধরন হবে কিছুটা এরকম কেবলামুখী হয়ে ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়াচ্ছি।
আমি কেবলামুখী হয়ে ইমামের পেছনে ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করছি করছি।
তখন নিয়ত টি হবে কিছুটা এরকম আমি কেবলামুখী হয়ে ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করছি করছি।
নাওয়াইতুয়ান য়া ওসল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা সালাসা রাকায়াতি সালাতিল ওয়িতরি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহানইইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
বেতের নামাজ পড়ার জন্য সময় আসার পর বেতরের নিয়ত বাঁধুন, তারপর অন্যান্য নামাজের মত তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহা এবং কেরাত পড়ার পরে উলটা তাকবীর বেঁধে দোয়ায়ে কুনুত পড়ুন এবং তৃতীয় রাকাত পড়ে অন্যান্য নামাজের মতো নামাজ শেষ করুন।
বেতরের নামাজ ৩ রাকাত। তাই তৃতীয় রাকাত পড়ার পর আর দাঁড়াবেন না, বরং অন্যান্য ফরজ, সুন্নত নামাজের মত শেষ বৈঠক করে নামাজ শেষ করুন। প্রত্যেকটা বিষয় নিচে স্টেপ বাই স্টেপ দেওয়া হলো :
ফরজ এবং সুন্নত আদায় করে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে পড়ুন। উপরে উল্লিখিত নিয়মে বাংলায় কিংবা আরবিতে নিয়ত করুন।
তাকবিরে তাহারিমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে হাত হাত বাঁধুন। সানা, আউযুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ সহিত সুরা ফাতেহা এবং একটি সুরা মিলান। অতঃপর রুকু সিজদাগুলো অন্যান্য নামাজের ন্যায় কন্টিনিউ করুন। অতঃপর দাঁড়িয়ে আগের নেই সুরা ফাতেহা এবং অন্য একটি সুরা মিলান।
আবারো রুকু সিজদাগুলো অন্যান্যের ন্যায় আদায় করে এবার বসে পড়ুন। এটা আপনার প্রথম বৈঠক। প্রথম বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পড়ুন। পুনরায় তাশাহুদ শেষ করে দাঁড়িয়ে পড়ুন।
বিসমিল্লাহ এর সাথে সুরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সুরা পড়ুন। এবং পুনরায় আবার আল্লাহু আকবার বলে হাত কান পর্যন্ত উঠে হাত বেঁধে ফেলুন। এবার দোয়ায়ে কুনুত পড়ুন। (দোয়ায়ে কুনুত শিখতে ক্লিক করুন।)
এবার আল্লাহ আখবার বলে রুকু করুন এবং রুকোর তাসবিহ পড়ে সামি আল্লাহুলিমান হামিদা বলে দাঁড়িয়ে রাব্বানা লাকাল হামদ বলুন।
অন্যান্য নামাজের নেই আল্লাহু আকবার বলে দুই সেজদা আদায় করে বসে পড়ুন। এবং এটাই আপনার (আখেরি) শেষ বৈঠক।
বসে তাশাহুদ, দরুদ শরিফ, দোয়ায়ে মাসুরা, পড়ুন।
সর্বশেষে আসসালামুয়ালাইকুম ও রাহমাতুল্লাহ বলে ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে নিন। নিচে কিছু এই নামাজ সম্পর্কে বহুল প্রচলিত প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো।
তবে আমার রিকমেন্ড থাকবে, নিজের প্রশ্নগুলো জানার আগে বা পড়ার আগে আপনার উচিত বিতর নামাজ সম্পর্কে জানা।
দুই রাকাত নামাজ আদায় করে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সুরা মিলিয়ে পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে দোয়ায়ে কুনুত পড়তে হয়।
মাশাআল্লাহ হল যদি কেউ দোয়ায়ে কুনুত না জানে সেক্ষেত্রে অতি দ্রুত শিখে ফেলবে। এবং ওই সময়টায় রাব্বানা জালামনা আনফুসানা ওয়া ইলামতাগফিরলানা ওয়াতারহাম নালানা কুনান্না মিনাল খসিরিন অথবা চাইলে যে কোন দোয়া পড়ে নেবে।
বেতের নামাজ কয় রাকাত তা নিয়ে মত অনৈক্য রয়েছে ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে বেতের নামাজ ৩ রাকাত আদায় করবে।
বিতর নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুরা নেই, বরং আপনি কোরআনের যে কোনো সুরা থেকে অন্যান্য নামাজের মতো পড়তে পারবেন।
মন্তব্য করুন