রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রমজানের নিয়মিত আমল হলো ইতিকাফ। তিনি রমজানের শেষ ১০ দিন এ ইবাদত করতেন। এ দশকে লাইলাতুল কদর পাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইতিকাফ অনেক জরুরি বিষয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমৃত্যু ইতেকাফ করে গেছেন।
ইতিকাফ করার সময় একজন মানুষ পৃথিবীর সব কাজ বন্ধ রেখে নিজেকে আল্লাহর জন্য সপে দেন মসজিদে। এখানে পুরোটা সময় ইবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দেন তিনি।
ইতিকাফ একটি আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ হল অবস্থান করা, সাধনা করা আবদ্ধ করা। শরিয়তের পরিভাষায়, ইতিকাফের নিয়তে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মসজিদে অথবা ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। মহল্লার কিছু মানুষ ইতিকাফ করলে সকলেই দায়মুক্ত হয়ে যাবে আর যদি কেউ না ইতিকাফ না করে, তাহলে সবাই এর দায়ভার বহন করবে।
ইতিকাফে বসার আগে যে বিষয়গুলো জেনে নেয়া জরুরি-
১. মুসলমান হওয়া
২. পাগল না হওয়া
৩. বুঝমান হওয়া, প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়া শর্ত নয়। তাই অপ্রাপ্ত বয়স্ক বুঝমান হলেও তার ইতিকাফ সহিহ হবে।
৪. শরয়ী মসজিদ হওয়া। যে মসজিদে ইতিকাফ করবে সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে হওয়া জরুরি, তা পাঞ্জেগান মসজিদ হোক বা জুমার মসজিদ হোক। (তবে নারীরা নিজ নিজ বাড়িতে ইতিকাফ করবে)।
৫.ওয়াজিব বা সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোজা রাখা।
উল্লেখ্য, ইতিকাফ অবস্থায় গোসল ফরজ হলে ইতিকাফ ভঙ্গ হবে না তবে খুব দ্রুত পবিত্র হওয়া আবশ্যক এবং এ অবস্থায় থাকা তার জন্য হারাম। (ফতওয়া শামি -৪৩০)।
ইতিকাফের দিনগুলোর আমল
ইতিকাফের দিনগুলোতে ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাতে মুআক্কাদা ছাড়াও সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদা ও অন্যান্য নফলগুলোর প্রতি যত্নশীল হতে হবে। কারণ, এ মাসে নফল ফরজের সমতুল্য।
ইতিকাফ অবস্থায় অবসর সময়গুলোতে নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ করবেন ও কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করবেন।
ইবাদত করে ক্লান্ত হয়ে গেলে কিছু সময় বিশ্রাম করা যেতে পারে। ক্লান্ত হয়ে তন্দ্রাভাব নিয়ে ইবাদত করবেন না। বরং কিছু সময় বিশ্রাম ও আরাম করে উদ্যম এবং একাগ্রচিত্তে ইবাদতে নিমগ্ন থাকাটাই ভালো।
মন্তব্য করুন