একদিন কিংবা দুদিন নয়, একজন কিংবা দুজনকে নয়, প্রায় প্রতিদিনই হাজার মানুষের জন্য বিনামূল্যে ইফতারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন কয়েকজন যুবক। শুরুতে তিন থেকে চারজন বন্ধু মিলে এমন উদ্যোগ নিলেও বর্তমানে অনেকেই যোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে। সকলেই আনন্দের সাথে বিনামূল্যে ইফতার করাচ্ছেন অসহায় মানুষদের।
মিরপুরের গাবতলীতে শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, ভাড়াটিয়া, ভ্রাম্যমাণ মানুষ সেইসঙ্গে পুলিশ সদস্যদের জন্যও রয়েছে এ ব্যবস্থা। শুরুটা এক ডেক খিচুড়ি দিয়ে হলেও বর্তমানে চার ডেক করে রান্না করতে হয়।
বিনামূল্যের এ ইফতারি নিতে আসা অসহায় মানুষরা জানান, তাদের কারণে তারা প্রতিদিন তৃপ্তি করে ইফতার করতে পারছেন। পাশাপাশি খাবার হাতে পেয়ে শিশুরা বলেন, খিচুড়ির ভিতরে মাংস থাকায় তাদের খেতে অনেক মজা লাগছে। মাংস তাদের অনেক পছন্দের।
শুরুর দিকে কয়েকজন যুবক মিলে এ উদ্যোগটি নিলেও পরবর্তীতে ছোট বড় অনেকেই এগিয়ে আসেন। এখন প্রায় ৮০ জনের মত মানুষ বিনামূল্যে ইফতারের সাথে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। এদের ভিতর বেশিরভাগই শিশু কিশোর ও তরুণ বয়সের মানুষ।
এ উদ্যোক্তাদের একজন হলেন ইলিয়াস রুবেল। তিনিসহ তার দুএকজন ভাই ও বন্ধু মিলে এটি শুরু করেছিলেন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ২০২০ সালে করোনার ভিতর কঠোর লোকডাউনে মানুষের জীবন জীবিকা স্থবির, সেখানে জীবন কিভাবে চলবে? খেটে খাওয়া মানুষ কিংবা দিন মজুর কাজে না গেলে কিভাবে জ্বলবে তাদের রান্নার চুলা। এমন ভাবনা থেকে আমরা রাতে একবেলা বিনামূল্যে খিচুড়ির ব্যবস্থা করি। সেই থেকে শুরু, যা এখন পর্যন্ত চলমান। পরিবর্তন শুধু, আগে এক ডেক খিচুড়ি রান্না হত আর এখন চার ডেক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ইফতারি নিতে ছোট, বড়, ধনি, গরিব, হিন্দু, মুসলিম সকলেই আসে। আমরা মসজিদ মাদ্রাসাসহ ৪টি ভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন এ ইফতারির ব্যবস্থা করি।
বিনামূল্যে ইফতারির জন্য আয়ের উৎস কি জানতে চাইলে তিনি কালবেলাকে জানান, সম্পূর্ণ ব্যক্তি খরচে এ আয়োজন করা হচ্ছে। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলে এ অর্থের জোগান হয়। সাথে কাজ করে একঝাঁক তরুণ। যারা বিনাপারিশ্রমিকে আমাদের এ কাজকে আরও সহজ করে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন