পবিত্র মাহে রমজান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। এই মাস মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত ও অনুকম্পা থাকে। রমজানে অত্যধিক নেক আমল ও জিকির-আজকার করা উচিত। এতে বিপুল পরিমাণে সওয়াব লাভ হবে। তবে রমজান মাসের ফজিলত হাসিল করার জন্য নেক আমলের পাশাপাশি এমন কিছু কাজ রয়েছে- যা থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার।
মুসলিম জাতির জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে এ মাসে রয়েছে অত্যন্ত কল্যাণ ও বরকত। তাই রমজানকে স্মরণীয় করে রাখতে কোরআন ও হাদিসের আলোকে এ মাসের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ইসলামের ৫টি স্তম্ভের একটি হলো রোজা। রমজান মাসে রোজা পালন করা ফরজ। এ প্রসঙ্গে কোরআনে সুরা বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে এই মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন রোজা পালন করে।’
এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও একনিষ্ঠতার সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রোজা পালন করবে। আল্লাহ তার পেছনের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি : ২০১৪)
সেহরি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। যাতে রয়েছে বহু বরকতের সমাহার। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা কখনও সেহরি খাওয়া বাদ দিও না। এক গ্লাস পানি দিয়ে হলেও সেহরি খাও। কেন না সেহরি গ্রহণকারীকে আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ স্মরণ করে।’ (মুসনাদে আহমদ : ১১১০১)
পবিত্র রমজান মাসের রাত্রিকালীন অন্যতম আমল হলো তারাবির নামাজ। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব হাসিলের আশায় সালাতুত তারাবি আদায় করবে। আল্লাহ তার অতীতের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি : ২০০৯)
এই মাসে একটি ভালো কাজের বিনিময়ে অনেক নেকি অর্জন করা সম্ভব। কাজেই প্রতিটি মুমিনের উচিত যথাসম্ভব ভালো কাজ করা। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এই মাসের প্রতি রাতে একজন ঘোষণাকারী এই বলে আহবান করতে থাকে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরও অগ্রসর হও। হে অসৎ কাজের পথিক, তুমি অন্যায় পথে চলা বন্ধ করো। তুমি কী জানো? এই মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (সুনানে তিরমিজি : ৬৮৪)
এ মাসে বেশি বেশি দান-সদকা করা অনেক সওয়াবের কাজ। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজান মাস এলে তার দান-সদকার মাত্রা আরও বেড়ে যেত- সুবহানাল্লাহ! (সহিহ বুখারি : ১৯০২)
আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার মাস রমজান। এই মাসে নিজেকে এমনভাবে গঠন করতে হবে যাতে বাকি ১১ মাস আল্লাহর ইবাদতে জীবন কাটানো যায়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোজা রাখে। সে যেন অশ্লীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। সিয়াম পালন অবস্থায় কেউ যদি তার সঙ্গে গালাগাল ও মারামারি করতে আসে, সে যেন বলে আমি রোজাদার।’ (সহিহ মুসলিম : ১১৫১)
ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা। পরিভাষায় মানুষদের থেকে পৃথক হয়ে নামাজ, রোজা, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া-ইস্তেগফারসহ অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্যে একাকি কিছু সময় ব্যয় করা। লাইলাতুল কদর পেতে ইতিকাফ একান্ত প্রয়োজন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং জীবনের শেষ রমজানে ইতিকাফ করেছিলেন ২০ দিন। (সহিহ বুখারি : ২০৪৪)
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এ মাসে একটি ওমরা পালন হজ আদায়ের সমতুল্য।’ (সহিহ বুখারি : ১৮৬৩)
রমজান মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং বছরের শ্রেষ্ঠ রাত বলা হয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই রাত পেতে রমজানের শেষ দশ দিন বেশ পরিশ্রম (ইবাদত) করতেন। (সহিহ মুসলিম : ১১৭৫)
রমজান মাসে ফজিলতপূর্ণ কয়েকটি আমলের মধ্যে একটি আমল হলো দ্রুত ইফতার করা, বিলম্ব না করা। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন ইফতারের সময় খেজুর দিয়ে ইফতার করে। আর খেজুর না ফেলে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেন না পানি হলো- অধিক পবিত্র।’ (সুনানে আবু দাউদ : ২৩৫৭)
রোজাদারকে ইফতার করানো বিরাট সওয়াবের কাজ। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার রোজার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। কিন্তু তাদের উভয়ের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্রও হ্রাস করা হবে না। (ইবনে মাজা : ১৭৪৬)
রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে ফিতরা দেওয়া আবশ্যক। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি : ১৫০৩)
মুখের পবিত্রতা ও মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো- মিসওয়াক। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা রেখেও মিসওয়াক করতেন বলে অনেক বর্ণনায় পাওয়া যায়। (ইবনে খুজাইমা : ১৩৫)
উপরিউক্ত আমল বাদে রমজান মাসে বেশি বেশি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা ও বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফারের কথাও বিভিন্ন হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজান মাসে যা করব না
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কত রোজা পালনকারী এমন আছে, (রোজা অবস্থায় অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে) ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া রোজা থেকে সে আর কিছু লাভ করতে পারে না। অনুরূপ অনেক রাত জাগরণকারী এমন আছে যে তার রাত্রিজাগরণ থেকে জেগে থাকার কষ্ট ছাড়া আর কিছু পায় না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৯০)
মিথ্যাকে সব পাপের জননী বলা হয়। একটি মিথ্যা থেকে শতশত পাপের সূত্রপাত হয়। তাই আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.) মিথ্যা কথা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে রোজা রেখেছে অথচ মিথ্যাচার পরিহার করেনি, তার এই কৃত্রিম পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন আল্লাহর নেই। (বুখারি: ১৯০৩)
গিবত আমল ধ্বংসের নীরব ঘাতক। গিবতের কারণে কখন যে আপনার আমল ধ্বংস হয়ে যাবে তা বুঝতেই পারবেন না। গিবত জিনার চেয়েও জঘন্যতম গুনাহ। তাই গিবত পরিহার উচিত।
রিয়া হলো লোক দেখানো ও আত্মপ্রদর্শনকারী কাজ বা আমল। রিয়া করা শরিয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম। শিরক হলো দুই প্রকার। শিরকে আকবার বা বড় শিরক। আর শিরকে আসগার বা ছোট শিরক। আর এ রিয়া হলো ছোট শিরক। ফলে রিয়া থেকে অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে।
অপচয় কিংবা অপব্যয় করা খুবই বাজে ও গর্হিত অভ্যাস। পবিত্র কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের পবিত্র কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য স্থানে অপচয় করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে এর মানে এই নয়- অপচয় রোধ করতে গিয়ে কৃপণতা অবলম্বন করবেন। মহান আল্লাহ কৃপণদের পছন্দ করেন না। অপচয় ত্যাগ করার অর্থ হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।
পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহ ও রাসুলের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সুবেহ সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন। রোজা শরীর ও মনের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে। রোজা রাখলে শরীর থেকে টক্সিনজাতীয় বস্তু বের হয়ে যায়।
তবে সঠিক নিয়ম মেনে না চললে রোজা রেখে সমস্যা হতে পারে। যেমন ইফতারে একবারে অনেক বেশি খাবার আর ইফতার ও সেহরির মাঝখানে পর্যাপ্ত পানি না খাওয়ার কারণে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আর সেহরির খাবার এমন হবে, যা সারা দিন শরীরকে কাজ করার শক্তি দেয়। এ জন্য রমজানে কী খাবেন আর কী খাবেন না তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুষ্টিবিদদের মতে, ইফতার হলো শরীরের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা এবং শরীরকে রিচার্জ করা। এ জন্য ইফতারে প্রোটিন, ফল, শাকসবজি, কার্ব সব ধরনের খাবার থাকতে হবে।
১. সেহরি ও ইফতারের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও তরল জাতীয় খাবার পান করুন। ২. সেহরিতে ভালো খাবার খান। এমন খাবার খান, যা শরীরে শক্তি জোগায়। প্রয়োজনে একজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। ৩. ইফতারে তরল জাতীয় খাবার রাখুন ৪. শস্যজাতীয় খাবার তালিকায় রাখুন। ৫. আলমন্ড, অন্যান্য বাদাম, অ্যাভোকাডো তালিকায় রাখুন। ৬. প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন দুধ, ডিম, দই, খেজুর, ফল, সবজি, ভিটামিন-মিনারেলস তালিকায় রাখুন।
১. অতিরিক্ত তেলে ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার, যা আমাদের পরিপাক ক্রিয়ায় বাধা দেয়। ২. অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, যা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো অবশ্যই বর্জনীয়। ৩. কৃত্রিম পানীয় পরিহার করুন। ৪. রমজানে ডায়েট করবেন না, ফ্যাটজাতীয় খাবারও তালিকায় রাখুন। ৫. ইফতারের পরপর খুব বেশি গরম বা খুব বেশি ঠান্ডা জাতীয় তরল পান করবেন না। ৬. উচ্চ ফ্যাট ও উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
পবিত্র রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। আমলে অগ্রগামী হওয়ার মাস। গোনাহ ছেড়ে দেওয়ার মাস। ক্ষমা লাভের মাস। প্রবৃত্তির লাগাম টেনে ধরার মাস। দেহমন শুদ্ধ ও পবিত্র করার মাস।
তবে রমজান মাসের ফজিলত হাসিল করার জন্য এমন কিছু কাজ রয়েছে, যা থেকে বিরত থাকা দরকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজানে যেসব কাজ থেকে বিরত থাকা দরকার-
সিয়ামের পূর্ণ সওয়াব পাওয়ার জন্য বিলম্বে ইফতার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দ্বীন বিজয়ী হবে, যখন মানুষ দ্রুত ইফতার করবে। কারণ, ইহুদি-নাসারারা তা বিলম্বে করে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৫)
সেহরি অনেক বরকতময় খাবার। রাসুল (সা.) সেহরি খেতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। সেহরি খেতে না পারলে অন্তত অল্প কিছু হলেও খেয়ে নেওয়া উত্তম।
পুণ্য অর্জনের মাস রমজান। এ মাসে রোজা-নামাজ ইত্যাদির পাশাপাশি দান-সদকার মাধ্যমেও ফজিলত অর্জন করতে হবে। বেশি বেশি দান-সদকা করার চেষ্টা করতে হবে। এতিম, বিধবা ও গরিব-মিসকিনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। যাদের ওপর জাকাত ফরজ তারা হিসাব করে এ মাসে জাকাত দেওয়া উত্তম। কেন না হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এ মাসে বেশি বেশি দান-খয়রাত করতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমজানে তার এ দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি: ১৯০২)
একজন রোজাদার মিথ্যা কথা বলা ও অন্যান্য পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মুর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার রোজা রেখে শুধু পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি: ৬০৫৭)
অপচয় কিংবা অপব্যয় করা খুবই বাজে ও গর্হিত অভ্যাস। পবিত্র কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের পবিত্র কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য স্থানে অপচয় করতে নিষেধ করা হয়েছে।
কোরআন তেলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। পবিত্র কোরআনে কারিম অর্থসহ বুঝে বুঝে খতম করা ও কিংবা তেলাওয়াত করা উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে, কোরআন তেলাওয়াতের সময় যেন কোরআনের হক নষ্ট না হয়। তাড়াহুড়ো কোরআন খতম করা অনুচিত।
রমজান মাসে রোজাদাররা সব কাজকর্ম স্থগিত রেখে দূর-দূরান্ত থেকে নামাজের সময় মসজিদ অভিমুখে যাত্রা করেন। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে সমবেত হয়ে জামাতে নামাজ আদায় করেন। এভাবে রোজাদার মুসল্লিরা মসজিদে নামাজ পড়তে এলে তাদের পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে। আর এতে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
সেহরি ও ইফতারে কিছুতেই এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়, যা পরবর্তী সময় স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। আবার এত অল্প আহারও করবে না যে রোজা রাখতে অসুবিধা হয়। কেন না স্বাস্থ্য-সচেতনতাও ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ।
লোক দেখানো ও আত্মপ্রদর্শনকারী কাজ বা আমল শরিয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম। তাই লোক দেখানো ইবাদত থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার।
অনেকের ধারণা, যত বেশি ঘুম তত বেশি শরীর ভালো থাকবে। অথচ একজন সুস্থ ও প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন সাত ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট। এর চেয়ে বেশি সময় ঘুমালে কিন্তু সেটি নানা সমস্যা ডেকে আনতে পারে। বেশি ঘুম মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথার কারণ হতে পারে। এমনকি দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিসের মতো অসুখও। তাছাড়া বেশি ঘুম হতে ডিপ্রেশনেরও কারণ।
রাতে দেরি করে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন নবীজি (সা.)। রাসুল (সা.) এশার নামাজের পর গল্পগুজব ও গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তাগিদ দিতেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ ও কল্যাণজনক কাজে রাত জাগতে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। তাই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কারণে রাত জাগতে মানা নেই।
ইবাদতের মাস রমজানে বেশি বেশি আমলের কথা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই ব্যস্ত থাকি দুনিয়াবি কাজে। এটা কাম্য নয়। এ মাসে বেশি বেশি দোয়া-ইস্তেগফার করা উচিত। হাদিসে এসেছে, ‘ইফতারের মুহূর্তে আল্লাহতায়ালা বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়া রমজানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।’ (জামিউস সাগির: ৩৯৩৩)
মন্তব্য করুন