পবিত্র রমজান মাসে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর রোজা রাখা ফরজ। রোজার গুরুত্ব এতই বেশি যে এটি ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। তাই প্রতি বছর রমজান এলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা রাখেন।
তবে অনেক সময় খুব সাধারণ কারণে মানুষের মনে রোজা ভেঙে গেছে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে। এই লেখায় এমনই কয়েকটি সাধারণ প্রশ্ন ও এর উত্তর দেওয়া হলো।
এই প্রশ্নের উত্তর হলো ইসলামের দৃষ্টিতে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে খাওয়াদাওয়া ও সহবাস থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলে। নিয়ম অনুযায়ী সূর্যাস্তের এক মিনিট আগেও যদি কেউ খেয়ে ফেলে, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
তবে যদি কেউ সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে খেয়ে ফেলে এবং পরে জানতে পারেন আসলে সূর্যাস্ত হয়নি, তাহলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়াদাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরে এই রোজা কাজা অর্থাৎ পুনরায় পালন করতে হবে। যদি কেউ ইচ্ছে করে জেনেশুনে সূর্যাস্তের আগে খেয়ে ফেলে তাহলে পরবর্তী সময়ে তাকে এই রোজাটি আবার করতে হবে। এ ছাড়া কাফফারাও দিতে হবে।
ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী সফরে রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তবে পরে এই রোজার কাজা আদায় করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় সফরের সময় রোজা রাখা।
কেননা পরে কাজা আদায় করলেও রমজানের বরকত পাওয়া যাবে না। এই মাসালা কেউ কেউ এভাবে বলে থাকেন- ‘সফরের হালতে রোজা ভাঙা জায়েজ আছে।’ এভাবে বলা ঠিক নয়।
কেননা এতে ধারণা হয় যে সফর অবস্থায় রোজা আরম্ভ করার পরও তা ভেঙে ফেলা জায়েজ কিংবা রোজা শুরু করার পর সফরে রওনা হলে রোজা ভঙ করা জায়েজ। অথচ এটা ঠিক নয়। রোজা শুরু করার পর তা ভেঙে ফেলা ঠিক নয়।
পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ হলেও অনেকে অনেক সময় রোজা রাখতে পারেন না। ইসলামে শর্তসাপেক্ষে রোজা না রাখা বা ভঙ্গ করার অনুমতিও আছে।
বিশেষ কারণে কেউ যদি রোজা না রাখতে পারেন তাহলে সেই রোজা রমজানের পরে কাজা আদায় করতে হবে। এ ছাড়া শরিয়াহ অনুমোদিত কোনো কারণ ছাড়া কেউ রোজা ভঙ্গ করলে তার জন্য কাফফারাও আবশ্যক (ওয়াজিব) হয়ে যায়।
কাজা হলো একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা আদায় করা। আর কাফফারা হলো ৬০টি রোজা অতিরিক্ত আদায় করা।
একজন মানুষ তিনভাবে কাফফারা আদায় করতে পারবেন
১. প্রথমত, একজন দাস মুক্ত করা
২. দ্বিতীয়ত, ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা পালন করা
৩. তৃতীয়ত, ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা তৃপ্তিসহকারে খাওয়ানো।
মন্তব্য করুন