আজ রোববার রাতে সারা দেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় পবিত্র শবেবরাত পালিত হবে। হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতটি মুসলমানরা শবেবরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। এ রাতটি ‘লাইলাতুল বরাত’ হিসেবেও পরিচিত।
পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সরকারি ছুটি থাকবে।
শবেবরাত এক মহিমান্বিত রাত। এই রাতের ১৩টি নাম রয়েছে। নামের আধিক্য এর মাহাত্ম্য প্রমাণ করে। বারাআত থেকে বরাত। বারাআত অর্থ মুক্তি। আল্লাহতায়ালা এ রাতে ইমানদার বান্দাদের গুনাহ থেকে মুক্ত করেন। এ ছাড়া এ রাতকে দুআর রাত, ভাগ্য রজনী, বরকতময় রাত, নিসুফু শাবান, শাবান মাসের মধ্য রজনী, শাফাআতের রাত, ক্ষমার রাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত, জীবন রাত্রি, তকদিরের রাত ও অন্য আরও অনেক নামে ভূষিত করা হয়েছে।
মহিমান্বিত এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন।
হজরত মুআয ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহতাআলা শাবানের অর্ধ রাতে (শাবানের ১৪ তারিখ রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।
নবীজি ইরশাদ করেন, তোমরা ১৪ শাবানের রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। কারণ এ দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে এসে ডেকে ডেকে বলেন, আছো কোনো ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছো কোনো রিজিক প্রত্যাশী? আমি রিজিক দেব। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে ডাকতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১৩৮৪)
শবেবরাতে নবীজির নামাজ প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি নামাজে দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘসময় সেজদা করলেন। আমি ভাবলাম, তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। (শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২-৩৬৮)
শবেবরাতে যেসব কাজ করা উচিত নয়
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বলেন, আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ইবাদত-বন্দেগি বাদ দিয়ে খামাখা ঘোরাঘুরি করা, অযাচিত আনন্দ-উল্লাস করা, বেহুদা কথাবার্তা ও বেপরোয়া আচরণ করা, অন্য কারও ইবাদতের বা ঘুমের বিঘ্ন ঘটানো, হালুয়া-রুটি বা খাবারদাবারের পেছনে বেশি সময় নষ্ট করা, ইবাদতে উদাসীনতা সমীচীন নয়।
মন্তব্য করুন