মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমিন আমিন’ ধ্বনীতে শেষ হলো তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা

দাওয়াতে ইসলামির তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে দলীয় নেতাকর্মী। ছবি : সংগৃহীত
দাওয়াতে ইসলামির তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে দলীয় নেতাকর্মী। ছবি : সংগৃহীত

লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা। শেষ দিনে মুসল্লির ঢল নামে। সুবিশাল প্যান্ডেলের ভিতরে-বাইরে মুসল্লির উপস্থিতি ছাড়িয়ে রাস্তায় গিয়ে পৌঁছে। অনেকেই জায়গা না পেয়ে রাস্তাঘাটে, এমনকি বাসা বাড়িতে, ছাদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। মুসল্লিরা রবের প্রার্থনায় দুই হাত তুলে কান্নায় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় ‘আমিন আমিন ধ্বনী’-তে ইজতেমা ময়দানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ইসলামের জীবন বিধান মেনে সারা বিশ্বে নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে মহান রবের সাহায্য কামনা করা হয়। দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি, বিশেষ করে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত কামনা করে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সভাপতি (নীগরান) মাওলানা আব্দুল মোবিন আত্তারি।

এর আগে জুমার নামাজে ইমামতি করেন সংগঠনটির মুবাল্লিগ হাফেজ মাওলানা আরাফাত আত্তারী। জুমার পূর্বে দাওয়াতি কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামীর জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী।

শেষ দিন শুক্রবার সকাল থেকে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগগণ কোরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বয়ান করেন। তার মধ্যে ইসলামী শরীয়তের বিধি-বিধান, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির শাস্তি, আজান-ইকামত ও নামাজ পড়ার নিয়ম-পদ্ধতি, মা-বাবার প্রতি সন্তানের হক, জুলুম-অত্যাচারের পরিণতি, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির ভয়াবহ পরিণতি, ব্যভিচার থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন হাদিসের আলোকে জীবন গড়া, মৃত্যু, কবর ও হাশরের প্রস্তুতি ইত্যাদি। এসব বয়ানের ফাঁকে ফাঁকে চলে হামদ ও নাতের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা এবং দোয়া মোনাজাত। শেষ দিনের ইজতিমায় ধারাবাহিকভাবে এসব বিষয় তুলে ধরে বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামির মোবাল্লিগ মাওলানা মুহাম্মদ কলিম মাদানী আত্তারী, মাওলানা গোলাম ইয়াসিন আত্তারী ও মাওলানা সোহেল মাদানী প্রমুখ।

আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিঃশর্ত অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগণ বলেন, আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুসরণেই মানবতার মুক্তির সনদ নিহিত। ইসলামের জীবন বিধান মেনে চলা গেলে এবং প্রিয় রাসুলের সুন্নাতের রঙ্গে রাঙ্গায়িত হয়ে মোত্তাকি হতে পারলেই আপনার দুনিয়া-আখিরাতের মুক্তি মিলবে। আর প্রিয় হাবিবের প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসাই ইমানের পূর্বশর্ত।

আল্লাহপাক ও তার প্রিয় রাসুলের সৃষ্টির জন্যই হতে হবে আমাদের নিয়ত, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সবকিছুই।’ বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ইসলামে নেকির দাওয়াত পৌঁছে সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।

শরীয়ত মতে যথাযথভাবে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়ে তারা আরও বলেন, আল্লাহ পাক ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামাজ আদায় করতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই নামাজ পড়তে হবে।

নামাজেই যত প্রশান্তি। লোক দেখানো নামাজে হবে না। বরং শেষ বিচারে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ, রয়েছে কঠিন শাস্তি। সন্তানকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে হবে। সুসন্তানের আমল নিজের জন্য তো বটে, তার মা-বাবার জন্যও নাজাতের অছিলা হবে- বলেন দাওয়াতে ইসলামির মুবাল্লিগরা।

দাওয়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সদস্য ও রাজশাহী বিভাগের জিম্মাদার আরমান আত্তারী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমতে সুন্দরভাবে তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা শেষ হয়েছে। ইজতেমার আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন, পীর মাশায়েখ ও আশেকে রাসুলদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ইজতেমায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বয়ান হয়েছে। বাস্তবজীবনে একে কাজে লাগানো গেলে তাহলেই স্বার্থকতা। আসুন প্রত্যেক মানুষের কাছে আমরা ইসলামের নেকির দাওয়াত পৌঁছে দেই।

গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফজরের নামাজের পর শুরু হয় তিন দিনের সুন্নাতে ভরা এ ইজতেমা। ইজতেমায় সারা দেশ থেকে লাখো আশেকানে রাসুল (সা.)-এর যোগদানের মধ্য দিয়ে মাদানী পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

তিন দিনের ইজতেমায় বিষয়ভিত্তিক বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামির মুবাল্লিগরা। ইজতেমায় এতলোক তিন দিন তিন রাত যাপন করলেও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাৎক্ষণিক সুকিচিৎসার জন্য করা হয় মেডিকেল ক্যাম্প। দাওয়াতে ইসলামির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশাপাশি ইজতেমায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা দিনরাত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে।

ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের পরপরই নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩দিন, ১২দিন,৩০দিন ও ৬৩দিনের জন্য সংগঠনটির ১১২টি টিম মাদানি কাফেলা সফর শুরু করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ক্রীড়াবিদ শওকত আলীর স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল

শাহরিয়ার কবির আটক

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

রাসূল (স.) আদর্শ ধারণ করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে

ঝিনাইদহে নাশকতা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনের গ্রেপ্তারের খবরে বিএনপির আনন্দ মিছিল

মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার

ভূমি উপদেষ্টার পরিদর্শন, হয়রানি ছাড়া নামজারি খতিয়ান পেয়ে উৎফুল্ল নাজিম  

চট্টগ্রামে জশনে জুলুশে মানুষের ঢল  

বন্যা পরবর্তী প্রাণী চিকিৎসায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

১০

‘দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তির জন্য রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতে হবে’

১১

নার্সের ভুলে ৩ দিনের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

১২

‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ’ করার প্রস্তুতি বিএনপির

১৩

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত

১৪

রাত ১টার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

১৫

সিরাজগঞ্জে কবরস্থানে মিলল অস্ত্র ও গুলি

১৬

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে জামায়াতের নায়েবে আমিরের মতবিনিময়

১৭

২৮ থেকে ৪২তম বিসিএসের বঞ্চিত সেই ক্যাডাররা ফের বঞ্চনার শিকার

১৮

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস

১৯

আমার কষ্ট নেই, আজ আমরা স্বৈরাচারমুক্ত : আহত তানভীরের পিতা

২০
X