ঘুম মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অশেষ নিয়ামত। পবিত্র কোরআনের সুরা ফোরকানের ৪৭ নম্বর আয়াতে নিজেই বলেছেন, ‘আর তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে করেছেন আরামপ্রদ আর দিনকে করেছেন (নিদ্রারূপী সাময়িক মৃত্যুর পর) আবার জীবন্ত হয়ে ওঠার সময়।’
অপরদিকে সুরা নাবার ৯-১০ নম্বর আয়াতে ঘুমকে প্রত্যেক জীবের জন্য প্রশান্তির মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের ঘুমকে শান্তির উপকরণ বানিয়েছি। আর রাতকে আবরণ করে দিয়েছি।’
নির্দিষ্ট কর্মসম্পাদনের পর প্রত্যেক সৃষ্টিই আল্লাহর দেওয়া ব্যবস্থাপনায় ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় তারা সম্পূর্ণরূপে অক্ষম ও অচেতন হয়ে যায়। অতঃপর ঘুম ক্লান্তি দূর করে পরবর্তী সময়ে নতুন করে পরিশ্রমের শক্তি জোগায়। ঘুম শেষে মানুষ যখন আবার জেগে ওঠে, তখন সে কোথায় ছিল, কী অবস্থায় ছিল—তার কিছুই বলতে পারে না।
ইতিহাসে আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসীর বর্ণনা পবিত্র কোরআনে এসেছে। তারা কয়েকশ বছর ঘুমিয়ে যখন জেগে ওঠে, তখন তাদের অনুভব হয়েছিল, তারা একদিনের কিছু বেশি সময় ঘুমিয়েছে।
আবার কেউ বলে, তারা একবেলা ঘুমিয়েছে। অথচ তারা কয়েকশ বছর ঘুমিয়েছিল। আবার অনেকে নানাবিধ দুশ্চিন্তায় চাইলেও ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেন না। তাই ইসলাম আমাদের বাস্তবধর্মী ঘুমের দোয়া শিক্ষা দিয়েছে।
اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমারই নামে ঘুমাই এবং তোমার নামেই জাগ্রত হই।’
হজরত হুজাইফাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলায় নিজ বিছানায় শোয়ার (ঘুমানোর আগে) সময় নিজ গালের নিচে হাত রাখতেন আর এই দোয়া পড়তেন। (সহিহ বুখারি : ৩৩১৪)
لْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ বাংলা উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়া না বা’দা মা আমা তানা ওয়া ইলাইহিন নুশূর।
অর্থ : ‘সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি ঘুমের পর আমাদের জাগ্রত করেছেন এবং আমাদের তার কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ আবার যখন মহানবী (সা.) ঘুম থেকে সজাগ হতেন, তখন এই দোয়া বলতেন। (বুখারি : ৬৩১২)
# হালাল, বৈধ ও পবিত্র জীবিকার ওপর নির্ভর হতে হবে। # হারাম উপার্জন (ফাঁকি, ধোঁকা, ওজনে কমবেশি, ভেজাল, খেয়ানত) ও হারাম খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে। # দুনিয়াতে সবকিছুই শুধু আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং বেশি করে চাওয়া। # সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে দোয়া করা। # আল্লাহর নাম ও ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করা। # সৎকাজের আদেশ করা এবং অন্যায় কাজের নিষেধ করা। # দোয়ায় সর্বদা কল্যাণময় বিষয় কামনা করা। # মনোযোগ সহকারে দোয়া করা। # দোয়ার ফলাফলের জন্য ব্যস্ত না হওয়া। # দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় আশা পোষণ করা।
মন্তব্য করুন