সুসন্তান মহান আল্লাহতায়ালার নেয়ামতগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে অনেক সময় বিপথে চলে যায়। মা-বাবার অবাধ্য হয়ে পড়ে। এমনকি ইসলামের বিধিবিধানের ধারেকাছেও যায় না। তাই সুসন্তান লাভের জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন আমল রয়েছে। এসব আমল কেবল সন্তানের জন্যই নয়; বরং নেক স্ত্রী লাভ, নিঃসন্তান থেকে মুক্তি, সুসন্তান লাভ, সন্তানকে শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা, এমনকি দ্বীনদার ও পরহেজগার সন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। সেসব দোয়া থেকে কতিপয় কালবেলা অনলাইনের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
وَ الَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّ اجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا
অনুবাদ : ওয়াল্লাজিনা ইয়াকুলুনা রব্বানা হাবলানা মিন আঝওয়াজিনা ওয়া জুরিরিইয়াতিনা কুররতা আ’ইয়ুনিউওয়াজ আলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অর্থ : আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন, যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন।’
رَبَّهٗ ۚ قَالَ رَبِّ هَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ
উচ্চারণ : রব্বাহু ক্বলা রব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা ঝুররিয়্যাতি তয়্যিবাতি ইন্নাকা সামিউদ দোয়া।
অর্থ : ‘হে আমার রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’ (সুরা আলে ইমরান : ৩৮)
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণ : রব্বি হাবলি মিনাস স-লিহীন।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নেককার সন্তান দিন। (সুরা সফফাত, আয়াত : ১০০)
رَبِّ لَا تَذَرۡنِیۡ فَرۡدًا وَّاَنۡتَ خَیۡرُ الۡوٰرِثِیۡنَ
উচ্চারণ : রব্বি লা তাজারনি ফারদাও ওয়া আংতা খয়রুল ওয়ারিছিন।
অর্থ : হে আমার মালিক! তুমি আমাকে নিঃসন্তান করে রেখে দিও না, আর তুমিই হচ্ছো সর্বোত্তম উত্তরাধিকারী। (সুরা আম্বিয়া : ৮৯)
সন্তান যেন দ্বীনদার হয় এবং দ্বীনের দায়িত্বে উদাসীন না হয়, সে জন্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়াটি হলো
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلاَةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاء
উচ্চারণ : রব্বিজ আলনি মুকিমাস সলা-তি ওয়ামিন জুররিয়্যাতি, রব্বানা ওয়া তাকব্বাল দোয়া।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নামাজ আদায়কারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমার প্রতিপালক! আমার প্রার্থনা কবুল করুন। (সুরা ইবরাহিম : ৪০)
وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ
অর্থ : ‘যখন ইবরাহিম বলেছিল, হে আমার পালনকর্তা! এ নগরকে নিরাপদ-শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদের মূর্তি-প্রতিমা পূজা থেকে দূরে রাখুন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৫)
رَّبَّنَا إِنِّي أَسْكَنتُ مِن ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ عِندَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيمُواْ الصَّلاَةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِّنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَارْزُقْهُم مِّنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُونَ
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি ও আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র ঘরের কাছে; হে আমাদের প্রতিপালক! এ জন্য যে তারা যেন নামাজ কায়েম করে। অতএব, কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দিন এবং ফলফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকা দান করুন, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’(সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৭)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তিই একজন রাখাল এবং সবাই তাদের অধীনদের দায়িত্বশীল। একজন ব্যক্তি তার নিজের পরিবারের জন্য রাখাল এবং তাদের ওপর সে দায়িত্বশীল।' (বুখারি ও মুসলিম)
বিশ্বনবী (সা.) প্রায়ই হজরত হাসান (রা.) ও হজরত হুসাইনের (রা.) নিরাপত্তার জন্য দোয়া করতেন। তা হলো আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত,
أُعيـذُكُمـا بِكَلِـماتِ اللهِ التّـامَّة، مِنْ كُلِّ شَيْـطانٍ وَهـامَّة، وَمِنْ كُـلِّ عَـيْنٍ لامَّـة
উচ্চারণ : উয়িজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি, মিন কুল্লি শায়ত্বনিও ওয়া হাম্মাতি, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লিআম্মাতি।
অর্থ : আমি তোমার জন্য আল্লাহর কালেমার সাহায্যে আশ্রয় চাচ্ছি সব ধরনের শয়তান, হিংস্র প্রাণী এবং বদনজরের বিপদ থেকে। (বুখারি : সুনানে আবি দাউদ : ৪৭৩৭)
হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন রাত ঘনিয়ে আসে, তোমাদের শিশুদের ঘরের ভেতর রাখ। কেননা শয়তান এ সময় বেরিয়ে আসে। রাতের কিছু সময় পার হওয়ার পর তোমরা তাদের ছাড়তে পারো। (বুখারি ও মুসলিম)
মন্তব্য করুন