পবিত্র রমজান মাসের শেষ জুমার দিনটি জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। এই দিনের বিশেষ মর্যাদা ও তাৎপর্যের কথা প্রচলিত থাকলেও জুমাতুল বিদা পরিভাষাটি কোনো নির্ভরযোগ্য উৎসগ্রন্থ থেকে প্রমাণিত নয়।
তবে, মোবারক মাস রমজানের শেষ জুমার দিন হিসেবে এর গুরুত্ব কম নয়। রমজান আর জুমা একত্রে মিলিত হয়ে দিনটিকে করে তুলেছে সীমাহীন মহিমাময়। তবে রমজান, শবে কদর ও জুমার দিন যে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ, তাতে কারও দ্বিমত নেই। তাই এই দিনে বেশি বেশি ইবাদত করে রমজান, শবে কদর ও জুমার ফজিলত অর্জন করা আমাদের কর্তব্য।
জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। এই দিনের আছে বিশেষ ইবাদত ও আমল। জুমার দিনের মধ্যে জুমাতুল বিদার বিশেষ ফজিলত আছে। অন্যান্য জুমার দিনের মতো এই দিনে আছে এমন মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন মহান আল্লাহ বান্দার যাবতীয় দোয়া কবুল করেন। বান্দা তখন আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তা-ই দান করেন।
তবে সেই সময় খুব সীমিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিন সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তাতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলিম বান্দা সালাতরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে অবশ্যই তিনি তাকে তা দান করেন। কুতায়বা (রা.)-এর বর্ণনায় আরও আছে, তিনি তার হাত দ্বারা মুহূর্তটির স্বল্পতার প্রতি ইঙ্গিত করেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৫৪)।
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্ত তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনেরা, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো। (সুরা জুমা আয়াত- ৯)
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে, এরপর জুমা পড়তে উপস্থিত হয় এবং মনোযোগ দিয়ে নীরবে খুতবা শোনে, সে ব্যক্তির এই জুমা ও (আগামী) জুমার মধ্যকার এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের সগিরা গুনাহগুলো ক্ষমা করা হয়। (মুসলিম)
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।
মন্তব্য করুন