ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ বা সালাত। যা ইসলাম ধর্মে অন্যতম ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর তোমরা আমার স্মরণোদ্দেশ্যে নামাজ কায়েম করো।’ (সুরা-২০ তহা, আয়াত: ১৪)
অন্যত্র পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা-২৯ আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)
নামাজ আদায়ে অসংখ্য হাদিসও রয়েছে। এতে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি খোদ মহান আল্লাহর কাছেও যথাসময়ে সালাত আদায় করা অধিক প্রিয় আমল। তবে সালাত পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য নামাজের মধ্যে থাকা রোকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করা জরুরি। আর রুকু নামাজের অন্যতম রোকন। এ ব্যাপারে সব ইমাম একমত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা রুকু করো, সিজদা করো।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৭৭)
উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আল্লাহ তা’য়ালা (বান্দার জন্য) ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি এ সালাতের জন্য ভালোভাবে অজু করবে, সঠিক সময়ে আদায় করবে এবং এর রুকু ও খুশুকে পরিপূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (মেশকাত, হাদিস : ৫৭০)
এ ক্ষেত্রে নামাজে রুকু আদায়ের সময় বিশেষ একটি দোয়া রয়েছে যেটি পাঠ করলে বান্দার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ইমাম যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদা (سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ) বলেন, তখন তোমরা আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্ (اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ) বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৬০)
আরেকটি হাদিসে রুকু শেষে ছোট্ট একটি দোয়ার কথা এসেছে, যেটি পাঠ করলে ফেরেশতারা সওয়াব লেখার প্রতিযোগিতা করেন। রিফায়া ইবনু রাফি যুরাকী (রা.) বলেন, একবার আমরা রাসুল (সা.) এর পেছনে নামাজ পড়ছিলাম। তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বললেন, তখন এক সাহাবী ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ্, হামদান কাছিরান তাইয়্যিবান মুবারাকান ফিহি’ বললেন। পরবর্তীতে নামাজ শেষ করে রাসুল (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, কে এমনটা বলেছিল। তখন ওই সাহাবী বললেন, আমি। জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, আমি দেখলাম ৩০ জনের বেশি ফেরেশতা এর সাওয়াবকে আগে লিখবেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭৭০; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৬৩)
মন্তব্য করুন