কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ এএম
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হিজরি সনের ১২ রবিউল আউয়াল। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মায়ের কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসেন। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ হিজরি সনের ঠিক এ তারিখেই ৬৩ বছর বয়সে তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। এজন্য এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত।

বাংলাদেশে দিনটি সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালিত হয়। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, সত্য ও ন্যায়ের প্রশ্নে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন প্রস্তরকঠিন; কিন্তু ক্ষমা ও দয়ায় ছিলেন পানির মতো সরল। তার প্রতিটি কথা ও কর্মই মানবজাতির জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।

বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিশ্বমানবতার জন্য অনিন্দ্যসুন্দর অনুসরণীয় শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন, যা প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষের জন্য মুক্তির দিশারী হিসেবে পথ দেখাবে।

এদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণীতে বলেছেন, মহানবী (সা.) মানবজাতির জন্য এক অত্যুজ্জ্বল অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি অপরিসীম দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে তার ওপর অবতীর্ণ সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ আল কোরআনের বাণী তথা তাওহিদ প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ দূরীভূত করে সত্য ও ইনসাফ নিশ্চিত করেছিলেন। সমাজে অবহেলিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত ও দুঃখী মানুষের সেবা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, পরমতসহিষ্ণুতা, দয়া ও ক্ষমা গুণ, শিশুদের প্রতি দায়িত্ব এবং নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অতুলনীয় এবং তাই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে স্বীকৃত।

পৃথক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা যেন সবাই নিজেদের জীবনে মহানবীর কর্মময় জীবন ও আদর্শ অনুসরণ করে সত্যিকার বিশ্বাসী মুসলমান হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারি, এজন্য আল্লাহর কাছে মোনাজাত করি।

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবীর (সা.) জীবনী আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।

এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইসলামী বইমেলাসহ পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পত্রিকা ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারিত হবে। আজ সরকারি-বেসরকারি সব অফিসে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য : ঈদ, মিলাদ আর নবী তিনটি শব্দযোগে দিবসটির নামকরণ করা হয়েছে। ঈদ অর্থ আনন্দোৎসব, মিলাদ অর্থ জন্মদিন আর নবী অর্থ ঐশী বার্তাবাহক। ঈদে মিলাদুন্নবীর অর্থ দাঁড়ায় নবীর জন্মদিনের আনন্দোৎসব। ১২ রবিউল আউয়াল একই সঙ্গে মহানবীর (সা.) জন্ম ও মৃত্যু দিবস হলেও তা শুধু জন্মোৎসব হিসেবেই পালিত হয়। পৃথিবীর যে কোনো মানুষের মৃত্যুই তার পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করে; কিন্তু মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) মৃত্যু মানবসমাজ ও সভ্যতার কোনো পর্যায়ে কোনো শূন্যতার সৃষ্টি করেনি। তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন পুরো পৃথিবীর জন্য আল্লাহর রহমত হিসেবে। এক সময় গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছিল। তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং করত মূর্তিপূজা। যাকে আইয়ামে জাহেলিয়াতও বলা হয়। এ অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহকে (সা.) দুনিয়াতে পাঠান।

চল্লিশ বছর বয়সে নবুয়ত লাভের পর দীর্ঘ ২৩ বছর মুহাম্মদ (সা.) কঠোর পরিশ্রম ও শত বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করে ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচার করে গেছেন। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তি, শান্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। বর্তমান অশান্ত পৃথিবীতে তার দেখানো পথেই আসতে পারে শান্তি ও মানবতার মুক্তি। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সুরা আল আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি: এদিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেটে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।

অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সেমিনার, ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, কিরাত মাহফিল, হামদ-নাথ, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ইসলামী ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনী, ইসলামী বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ। এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন এবং আটটি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : জামায়াত আমির

রিমান্ড শেষে কারাগারে আতিক-আলেপ-ফারুকী

মেজর জলিলের মরণোত্তর ‘বীরউত্তম’ খেতাব চান রব

ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

‘উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করেছে বিগত সরকার’

পেসারদের দাপটে পার্থে ভাঙল ৭২ বছরের রেকর্ড

সীমান্তে সোয়া কোটি টাকার চোরাই পণ্য আটক

হঠাৎ ভয়ংকর টর্নেডো, কুড়িগ্রামে আতঙ্ক

ফিলিস্তিনের লড়াকু মানসিকতায় মুগ্ধ সন

১০

ভিসা দেওয়া না দেওয়া ভারতের নিজস্ব ব্যাপার : উপদেষ্টা হাসান আরিফ

১১

ম্যাচ ড্র হলে ভীষণ বিরক্ত হন মেসি, কিন্তু কেন?

১২

হারপুন লিক্যুইডের সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন 

১৩

নিলামের আগে আইপিএলের দলগুলোকে যে বার্তা দিল বিসিবি

১৪

বগুড়ায় অস্ত্র নিয়ে কৃষক লীগ নেতা ধরা

১৫

রংপুরে বীজ আলুর সংকট, দিশাহারা কৃষক

১৬

শুধু জিয়াউর রহমানের নাম থাকায়...

১৭

অতিরিক্ত ওজন কমাবে শীতের যেসব সবজি

১৮

রণক্ষেত্র জুরাইন, অবরোধকারীদের কয়েকজন আটক

১৯

রাশিয়া শান্তি চায় না, এবার জবাব দিতে হবে : জেলেনস্কি

২০
X