দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে । উজান থেকে নেমে আসা পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১২টি জেলা। ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এই আকস্মিক বন্যায়। এ ছাড়া বন্যায় প্রায় ৪৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদন এ তথ্য জানায়।
বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার আমল ও দোয়া
দুর্যোগের সময় ধৈর্য ধারণ করা উচিত। মানুষকে সতর্ক করতে মহান আল্লাহ কিছু কিছু বিপদ-আপদ দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন,
“আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)”
দুর্যোগকালীন সুন্নত আমল
কিছু সুন্নত আমল করার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার সুযোগ আছে। হাদিস শরিফে আছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত। এছাড়াও আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,
“দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তার কাছে তওবা করো। (বুখারি: ২/৩০; মুসলিম: ২/৬২৮)”
নামাজ পড়া, কোরআন তিলাওয়াত বা দোয়া-দরুদ পাঠ করা হলো আল্লাহর জিকিরের সর্বোত্তম উপায়। ইস্তিগফার, তাসবিহ পাঠ ইত্যাদি দুর্যোগের সময় জিকিরের উপায় হতে পারে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে,
“প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইলে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ: ৬৯৬)”
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার আমল
মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে। আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচতে আমল পরিশুদ্ধ করা প্রয়োজন। তিনি যে আমলে খুশি হন, সে আমল বেশি বেশি করা উচিত। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা ইত্যাদি ভালো কাজ করতে হবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে,
“সদকা মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে নিভিয়ে দেয় এবং অপমৃত্যু রোধ করে। (তিরমিজি: ৬০০)”
ভারি বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার দোয়া “اللّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আলা আল-আকামি ওয়াজ-জিরাবি ওয়া বুতুনি আল-আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতি আশ-শাজার।”
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের চারপাশে বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের ওপর নয়। হে আল্লাহ! পর্বতমালা, পাহাড়ের ঢাল, উপত্যকা এবং গাছপালার উপর বর্ষণ করুন।