আমরা মহান আল্লাহর কাছে নানা দোয়া চেয়ে থাকি। কিন্তু এটা জানি না দোয়া কবুল হচ্ছে কি না।
আপনার সব দোয়া যে কবুল হবে বিষয়টা এমনও না। আবার আমরা এটাও জানি আল্লাহ তার বান্দাকে নিরাশ করে না।
তবে এক্ষেত্রে দোয়া করার সময় অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় মানতে হবে।
যদি আমরা সঠিক নিয়মে বা সঠিক সময়ে একান্ত আল্লাহর ওপর ভরসা করে দোয়া করি তাহলে দ্রুত কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্রুত দোয়া কবুলের বেশ কিছু আমল নিচে তুলে ধরা হলো-
পবিত্রতা অর্জন :
বিত্রতা অর্জনের পর দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা সেই দোয়া কবুল করবেন।
বিনয়ের সঙ্গে দুহাত তুলে দোয়া করা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালার নিকট হাত তুলে হাতের তালু সামনে রেখে দোয়া করো। হাত উল্টো করো না। দোয়ার শেষে উত্তোলিত হাত মুখমণ্ডলে বুলিয়ে নাও।’ -আবু দাউদ
মিনতি ও নম্রতার সঙ্গে দোয়া করলে তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। রাসুলে মকবুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া সব ইবাদতের মজ্জা ও সারাংশ।’ দাসত্বের পরিচয় প্রদানই ইবাদতের উদ্দেশ্য। বান্দার নিজের দীনতা ও অক্ষমতা বুঝতে পারা এবং আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও অপার মহিমা উপলব্ধি করার মধ্যেই দাসত্বের প্রকাশ ঘটে। দোয়ার মাধ্যমে এ দুটি বিষয়ের পরিচয় পাওয়া যায়। অর্থাৎ নিজের অক্ষমতা ও অসহায়ত্ব এবং আল্লাহর অপ্রতিহত ক্ষমতা, অপার মহিমা ও প্রতাপ অন্তরে স্থান পাওয়া আবশ্যক। দীনতা ও নম্রতা দোয়ার মধ্যে যত অধিক হবে ততই মঙ্গল।
বিনয়, নম্রতা ও দাসত্ব প্রকাশ করার জন্য দোয়ার সময় দুহাতের তালু আসমানের দিকে রাখতে হবে এবং হাত সম্পূর্ণ সম্প্রসারিত করে দুহাতের মধ্যে ২/১ আঙুল পরিমাণ ফাঁক রাখতে হবে। হাত কচলানো, রশি পাকানোর মতো হাতের তালু ঘষাঘষি করা দোয়ার আদবের খেলাপ। মনে রাখবেন, আপনি শাহানশাহেরর দরবারে হাত তুলেছেন, তাই এখানে কোনো ধরনের অমনোযোগিতা কাম্য নয়। এ ছাড়া দোয়া শেষে দুহাত তুলে দোয়া করে দোয়া শেষে হাত দুটি মুখমণ্ডলে মুছে নিবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যে হাত আল্লাহর দরবারে উত্তোলিত হয়, তা একেবারে শূন্য অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন।’
আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরিফসহ দোয়া করা। আল্লাহর প্রশংসা যেমন, আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আল আমিন দোয়ার শুরুতে বলা। এ ছাড়া ইসমে আজমের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ইসমে আজম এই আয়াতদ্বয়ে রয়েছে-
হজরত রাসুলে মাকবুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দোয়া করার পূর্বে দরুদ শরিফ পড়ে, তার দোয়া অবশ্যই কবুল হয়। মহান আল্লাহতায়ালা অসীম দয়ালু; দোয়ার কিয়দাংশ কবুল করে অপর অংশ কবুল না করা তার স্বভাব নয়। এই হাদিসের সারমর্ম এই, দরুদ তিনি অবশ্যই কবুল করে থাকেন, সুতরাং তিনি দরুদ কবুল করে দোয়ার অবশিষ্টাংশ অর্থাৎ প্রার্থনীয় বিষয় অগ্রাহ্য করেন না। শেষ পর্যন্ত উভয় অংশই কবুল করেন।
হজরত আবু সোলায়মান দারানী (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তার উচিত, প্রথমে দরুদ পড়া এবং দরুদ পড়ে দোয়া শেষ করা। কেননা আল্লাহ উভয় দরুদ কবুল করেন। -কিমিয়ায়ে সাআদাত
মন্তব্য করুন