পবিত্র আশুরার রোজা রাখা মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপর্ণ। আশুরার দিনে রোজা রাখার পাশাপাশি নিয়মিত নামাজ আদায়, বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার করা এবং সৎ কাজ করতে হবে। এসব কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। নিচে পবিত্র আশুরার রোজা রাখাসহ অন্যান্য করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো
১. রোজা রাখা বিভিন্ন হাদিসে পবিত্র আশুরার রোজার ফজিলত রয়েছে। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহর কাছে আমি আশা পোষণ করি, তিনি আশুরার রোজার মাধ্যমে আগের এক বছরের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। (তিরমিজি : ৭৫২)
বাংলাদেশে সোমবার (৮ জুলাই) থেকে মহররম মাস গণনা শুরু হয়। সে হিসেবে বুধবার (১৭ জুলাই) পালিত হবে পবিত্র আশুরা। পবিত্র আশুরার দুটি রোজা রাখতে হবে। এ হিসেবে ৯ মহররমের মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ও ১০ মহররম বুধবার (১৭ জুলাই) অথবা ১০ মহররম বুধবার (১৭ জুলাই) ও ১১ মহররম বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুইটি রোজা রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে পবিত্র আশুরার দিন একটি রোজা এবং এর আগে অথবা পরের দিন একটিসহ মোট দুটি রোজা রাখতে হবে।
পবিত্র আশুরার রোজা রাখা নিয়ে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখ, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল যেন না হয় সেজন্য মহররমের ১০ (বুধবার) তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রাখ। (মুসনাদে আহমদ : ২১৫৪)
২. ইবাদত ও দোয়া করা - নামাজ আদায় : পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। - কোরআন তেলাওয়াত : বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। - দোয়া : নিজের এবং অন্য মুসলমানদের জন্য কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা।
৩. তওবা ও ইস্তিগফার নিজের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। সবার কর্তব্য এটির কদর করা। আশুরার দিন তওবা কবুলের মোক্ষম সময়। এদিনে তওবা কবুল হওয়া, নিরাপত্তা এবং অদৃশ্য সাহায্য লাভ করার কথাও রয়েছে। এ জন্য এ সময়ে এমন সব আমলের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত, যাতে মহান আল্লাহর রহমত বান্দার দিকে আরও বেশি ধাবিত হয়।
৪. সৎ কাজ করা ও সহায়তা করা এবং সদয় আচরণ করা। - সৎ কাজ : যে কোনো সৎ কাজ করা, যেমন মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করা, মিথ্যা ও অন্যায় থেকে বিরত থাকা। - গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা: আশুরার দিনে দান-খয়রাত করা এবং গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা। - আত্মীয়স্বজনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা : আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের প্রতি সদয় আচরণ করা।
৫. শিক্ষামূলক কার্যক্রম - শিক্ষা গ্রহণ : আশুরার দিনের তাৎপর্য এবং ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা। - পরিবারের সাথে আলোচনা : পরিবারের সদস্যদের সাথে আশুরার দিনের তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করা এবং তাদের এই দিনটি গুরুত্বের সাথে পালনের জন্য উৎসাহিত করা।
৬. শোক পালন - কারবালার শহীদদের স্মরণ : হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার সঙ্গীদের কারবালার ময়দানে শাহাদাত বরণের ঘটনা স্মরণ করা। তাদের ত্যাগের গুরুত্ব বোঝা এবং অনুভব করতে পারা।
পবিত্র আশুরার রোজা রাখাসহ অন্যান্য ইবাদত পালনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর আরও কাছাকাছি আসতে পারি এবং তার রহমত ও মাগফিরাত অর্জন করতে পারি।
মন্তব্য করুন