যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও বিনম্র শ্রদ্ধায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন কনস্যুলেটে কর্মরত সবার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন।
এ উপলক্ষে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই শতাধিক স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি, কমিউনিটির ব্যবসায়ী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আঞ্চলিক অফিস অব ফরেন মিশনসের পরিচালক ও সহযোগী পরিচালক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্লোরিডা স্টেট বিএনপির সভাপতি ইমরানুল হক চাকলাদার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্লোরিডা স্টেট বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. দিনাজ খান, সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ খান হারুন, ফ্লোরিডা স্টেট বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি রফিকুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মহসিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদ খান ফিরোজসহ ফ্লোরিডা থেকে আসা বিভিন্ন নেতাকর্মীরা। পরে উপস্থিত সবাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। পরিশেষে সভাপতি উপস্থিত সবাইকে নৈশভোজে যোগদান করার অনুরোধ জানিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সংগীত শেষে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের লাখো শহীদ এবং জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের সব শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ও যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। পরে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রামাণ্যচিত্র ‘আধার পেরিয়ে’ প্রদর্শন করা হয়।
পরবর্তী পর্বে অফিস অব ফরেন মিশনসের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে অভিনন্দন জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমরানুল হক চাকলাদার বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে মায়ামি কনস্যুলেটে ভিন্নমতের প্রবাসীরা মারাত্মক হয়রানির শিকার হয়েছেন। আমরা প্রত্যাশা করি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর প্রবাসীরা যথাযথভাবে সেবা পাবেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে আগামী দিন বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে সবরকম সহযোগিতা দেওয়াসহ একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন তার বক্তব্যে বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও ছাত্র-জনতার চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে সৃষ্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যবিলোপ ও অর্থনৈতিক মুক্তির গণআকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ লক্ষ্যে তিনি উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই-বোনদের গঠনমূলক মতামত ও পরামর্শকে স্বাগত জানান এবং সবার সহযোগিতায় আগামী দিনগুলোতে কনস্যুলেটের কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সবাইকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অনুপ্রাণিত করেন।
মন্তব্য করুন