দেশীয় আমেজে সংযুক্ত আরব আমিরাত নবান্ন উৎসব উদযাপন ও বনভোজন করেছে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব। শনিবার (৩০ নভেম্বর) শারজায় ওয়াই এস ফার্ম হাউসে দিনভর এ আয়োজনে করে সংগঠনটি।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশটির আবুধাবি, দুবাই, রাস আল খাইমাহ, ফুজাইরাহ, শারজাহ ও আজমান থেকে নারীরা কমলা রংয়ের শাড়ি পরে এই উৎসবে যোগ দেন। পরিবার পরিজন নিয়েও আসেন কেউ কেউ। শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
দিনব্যাপী এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল পিঠাপুলির প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বাহারি স্বাদ এবং দেশীয় হরেক রকমের পিঠাপুলি নিয়ে আসেন নারীরা। এতে স্থান পায়- ভাপা পিঠা, মাছ পিঠা, আতিক্কা পিঠা, দুধ চিতই, পিঠা ডালা, ভাপা পুলি, পাটি সাপটাসহ দেশীয় নানা ধরনের পিঠাপুলি। এ ছাড়াও শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন ও বড়দের জন্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ইয়াসমিন ইসলাম মেরুনা, জেসমিন মাহাবুব, শরিফা সুনিক, রোমানা আক্তার ও কার্যকরী সদস্য তানিয়া আহমেদ।
প্রতিযোগিতায় বিচারকদের বিবেচনায় বিজয়ী হন- জুসি আরাফাত, রেখা মারিয়ুম, রোজিনা হোসাইন ও সাফিনা।
গত ছয় বছর ধরে বাংলাদেশি নারীরা সম্মিলিতভাবে দেশটিতে ঋতুভিত্তিক নানা আয়োজন করে আসছেন। প্রায় দুই হাজার নারীদের এই সংগঠন প্রবাসে নতুন প্রজন্মকে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চায় এগিয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এ বিষয়ে লেডিস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা লিজা হোসাইন বলেন, গত পনের বছরে আমিরাতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। অনেক দেখেছি প্রবাসী নারীরা এসব থেকে বঞ্চিত হন। তাই নারীদের সম্মিলিত রাখতে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এই প্লাটফর্ম থেকে ধারাবাহিকভাবে দেশের নানা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রবাসীদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এই সংগঠনে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
সংগঠনের সভাপতি লাবণ্য আদিল বলেন, এটি আমিরাতে বসবাসরত নারীদের বৃহত্তর একটি সংগঠন। আমাদের মূল লক্ষ্য- প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে দেশিয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পৌঁছে দেওয়া। আমরা দেশে প্রতিটি ঋতুর ছোঁয়া পেয়েছি, হেমন্তের ঘ্রাণ পেয়ে বড় হয়েছি কিন্তু প্রবাসে আমাদের সন্তানরা এসব থেকে বঞ্চিত। তাই প্রতিবছরই এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী এই আয়োজন সফল করতে সাদিয়া আবসার, নিশাত নিশু, সাইয়েদা নওরিন, কামরুন নাহার, মহসিনা তানিয়া, ইষিকা পারভিন, শারমিন রাখী, ইষিকা মাযাহার, রোমান বনী, নওরিনসহ কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
প্রবাসীরা বলেছেন- এমন আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাস প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আরও সহজে তুলে ধরা সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন