পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ১৭ বছর আগে মালয়েশিয়া যান চুয়াডাঙ্গার আব্দুল হান্নান। তবে দীর্ঘ এই সময়ে একবারও দেশে ফেরা হয়নি তার। প্রবাস জীবন শেষে যখন দেশে ফিরলেন তখন তিনি মৃত।
কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে পড়ে থাকা তার নিথর দেহ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দেশে ফিরেছে। বৈধ ভিসা থাকার পরও প্রবাসীদের তোলা চাঁদায় দেশে পাঠানো হয়েছে তার মরদেহ, ব্যয় বহনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তার কোম্পানি।
চুয়াডাঙ্গার আব্দুল হান্নান মালয়েশিয়া যান ২০০৭ সালে। যাওয়ার পর থেকে কাজ করতেন নির্মাণ খাতে। পরিবারের চাহিদা আর অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার মিটিয়ে কোনো সঞ্চয় ছিল না তার। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে টানা ২৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
মৃত্যুর পর মরদেহ দেশে পাঠাতে হাসপাতালের বিলসহ প্রায় ১২ হাজার রিংগিত (প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা) প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। নিয়োগকর্তাও আর্থিক সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
মালয়েশিয়ায় থাকা হান্নানের ছোট ভাই মো. পেল্টু মিয়া অভিযোগ করেন কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে সহযোগিতা চাইলেও কোনো ধরনের সাহায্য মেলেনি।
যদিও বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের দ্বিতীয় সচিব সুমন চন্দ্র দাস জানান, ‘বৈধ প্রবাসী মারা গেলে কোম্পানির মালিকের দায়িত্ব হলো মরদেহ দেশে পাঠানো। আর অবৈধ প্রবাসীর ক্ষেত্রে, পরিবারের সামর্থ্য না থাকলে দূতাবাসে আবেদন করলে বরাদ্দ অনুযায়ী সহায়তা দেওয়া হয়। তবে হান্নানের স্বজনরা দূতাবাসে নিয়মমাফিক আবেদন করেননি।’
এদিকে মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিরা চাঁদা তুলে প্রয়োজনীয় টাকা সংগ্রহ করেন এবং মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। নিহত হান্নান ফুসফুসের সংক্রমণ ও উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে ভুগছিলেন।
হান্নানের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিন্দুরিয়া গ্রামে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী।
মন্তব্য করুন