জার্মানির বার্লিনে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংগতি দিবস পালন করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা জার্মানির বার্লিনের একটি স্থানীয় হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জার্মানির শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জার্মান বিএনপিসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিতি ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে সিভিল ও মিলিটারি উভয় সেক্টরে যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল তখনও ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শহীদ জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সিপাহী ও জনতার সম্মিলিত বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে জিয়াউর রহমান বন্দীদশা থেকে মুক্ত হোন এবং পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশের নেতৃত্ব দেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন ও ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন।
বক্তারা আরও বলেন, ১৯৯০ সালে দেশের সংকটকালে স্বৈরাচার এরশাদের পতনে ঘটাতে এগিয়ে আসেন বিএনপি চেয়ারপার্সন মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দেশকে নিয়ে গিয়ে ছিলেন উন্নয়নের শিখরে। দেশের উন্নয়নের অগ্রজাত্রাকে স্তব্দ করে দিতে দেশি বিদেশী কুচক্রীমহনের সহায়তায় মইন-ফখর এক এগারো সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে তাবেদারদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এই তাবেদার বাহিনী দেশের মানুষের সকল অধিকারকে পদদলিত করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশে সৃষ্টি করেছিল এক বিভীষিকাময় পরিস্তিতি। দেশের সর্বত্রই ছিল গুম-খুন, হত্যা-লুণ্ঠন আর রাহাজানি। আয়না ঘর সৃষ্টি করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ সমাজের ভিন্নমতের মানুষের জীবনকে করে তুলেছিল দুর্বিষহ। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে ফ্যাসিবাদের সাম্রাজ ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেছে। পালিয়ে গেছে ফাসিস্ট মাফিয়া হাসিনা।
বর্তমানে দেশ ও জাতির জন্য আরেকটি ক্রান্তিকাল চলছে। দেশ ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদের দোসরা আজও সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে।
বক্তারা বিএনপির প্রস্তাবিত ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের আলোকে সাম্য ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সারা বিশ্বের প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার উদাত্ত আহ্বান জানান। অভিলম্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়ার সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক মান্নানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন খোকন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং উত্তর দক্ষিণ আমেরিকা সাংগঠনিক সমন্বয়ক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
এতে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জার্মান বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গনি সরকার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জার্মান বিএনপি সহসভাপতি অপু চৌধুরী, জার্মান বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর আলম বাবলি, জার্মান বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শরীয়ত খান মিঠু, জার্মান বিএনপি প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবিরুল ইসলাম ইমন, জার্মান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদিরসহ বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- জার্মান যুবদলের নেতা আনহার মিয়া, আব্দুল হান্নান রুহেল, একরাম, রেদওয়ান, জার্মান স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শফিকুল ইসলাম সাগর, শোয়েব, সাঈদ, শাফায়াত হোসেন সাব্বির, রফিকুল ইসলাম, সাগর আহমদ, আবু তাহের প্রমুখ।
সভার শেষে বক্তারা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাত করেন।
মন্তব্য করুন