বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত হয়েছিলেন ৫৭ বাংলাদেশি। পরে তাদের ক্ষমা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। ক্ষমা পাওয়ার পর প্রথম ধাপে সেই ৫৭ জনের ১৪ জন আজ দেশে ফিরছেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জন আজ সন্ধ্যা ৭টায় দেশে ফিরবেন। বাংলাদেশিদের বহনকারী ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৭টায় প্রথমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। পরে একই ফ্লাইট রাত ১০টায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এর আগে, গত ৩ সেপ্টেম্বর দণ্ডিত ৫৭ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। সেদিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল আদালতে এর আগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৫৭ বাংলাদেশিকে আজ (মঙ্গলবার) সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ক্ষমা করেছেন। শিগগিরই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।’
তার আগে, গত ২০ জুলাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করেন। এরপর ৫৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিচারের পর এই প্রবাসীদের মধ্যে কারও ১০ বছর, কারও ১১ বছর এমনকি কারও কারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশিদের ভিসা-সুবিধাও বন্ধ করে দেশটি।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমর্থনে আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় বিক্ষোভ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ওই সময় তারা বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সেখান থেকে তাদের আটক করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে, ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ড. ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমিরকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি ক্ষমা করে দেন।
উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে কোনো ধরনের বিক্ষোভ অবৈধ। সেখানে যে কোনো ধরনের বিক্ষোভ মিছিলের বিরুদ্ধে সবসময় কঠোর অবস্থানে থাকে দেশটি। বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গায় উসকানি ও জড়ো হওয়ার’ অপরাধে মামলা করা হয়েছিল।
অভিযুক্তদের অন্তত তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর ও একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউএএম জানায়, কারাদণ্ড ভোগের পর তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে।
মন্তব্য করুন