যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ২৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এ বছর কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়েছে। অসাধারণ একাডেমিক রেকর্ডের ভিত্তিতে নির্বাচিত এই শিক্ষার্থীরা ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদালয়গুলোতে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানালেন যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার সারাহ কুক।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ২০২৪ সালের কমনওয়েলথ বৃত্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের জন্য একটি প্রি-ডিপারচার ব্রিফিং সেশন আয়োজন করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এতে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে জরুরি তথ্য ও নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অসামান্য এ সাফল্য উদযাপন করতে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের চলমান অঙ্গীকারের প্রতিফলন এ বৃত্তি।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালক শ্যানন ওয়েস্ট বলেন, যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক স্বীকৃতি সত্যিই প্রশংসনীয়। এসব বৃত্তিপ্রাপ্তরা যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক ধারায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন এবং ফিরে এসে তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ১৯৬০ সাল থেকে শুরু হওয়া কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট ১,৮৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের (সিএসসি) মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে কমনওয়েলথ বৃত্তি বা ফেলোশিপ লাভ করেছেন। বর্তমানে ১০৫ বাংলাদেশি কমনওয়েলথ বৃত্তির অধীনে অধ্যয়নরত আছেন। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন যাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রায় শেষের দিকে।
এ বছরের স্কলাররা বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন, যার মধ্যে রয়েছে বিহেভিয়োরাল অ্যান্ড ইকোনমিক সায়েন্স, বায়োলজিকাল কেমিস্ট্রি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটেশনাল অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স, ডেটা অ্যান্ড ডিসিশন অ্যানালিটিক্স, এডুকেশন, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমস, গ্লোবাল হেলথ পলিসি, গ্লোবাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড এপিডেমিওলজি, হেলথকেয়ার ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল’ এবং হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স ল’, ম্যানেজমেন্ট, মেডিকেল স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড হেলথ ডাটা সায়েন্স, মিউজিয়াম স্টাডিজ, পাবলিক হেলথ, পাবলিক পলিসি, সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ও টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল।
অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্তরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের ও নেটওয়ার্ক গড়ার সুযোগ পান, যা যুক্তরাজ্যে তাদের একাডেমিক ও ব্যক্তিগত সাফল্যে অবদান রাখবে।
৬৫ বছর ধরে অসাধারণ একাডেমিক রেকর্ড ও নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন প্রার্থীদের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রদান করে আসছে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি)। দেশ ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা স্কলারদের অর্জনগুলোকে প্রতিফলিত করে আগামী বছরগুলোতেও কমনওয়েলথ দেশগুলোতে তাদের পরিবর্তনকারী প্রভাব অব্যাহত রাখতে আশাবাদী সিএসসি।
মন্তব্য করুন