কোটা আন্দোলনে সহিংসতার প্রতিবাদে ফ্রান্সে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটিতে অধ্যয়নরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ জুলাই) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রিপাবলিক চত্বরে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ফোরাম এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। আয়োজন থেকে কোটা আন্দোলনে সহিংসতার নিন্দা জানানো হয়। একইসঙ্গে সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি করেন তারা।
জানা গেছে, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানবন্ধনের জন্য গত ২২ জুলাই সন্ধ্যা ৬টায় সময় নির্ধারণ করা হলেও বিকাল ৫টা বাজতেই এলাকাটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রবাসীরা দলে দলে ব্যানার আর ফেস্টুন নিয়ে সেখানে হাজির হন।
এদিকে, ফ্রান্সের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে ধারাবাহিক বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিক্ষোভের প্রথম দিনে স্থানীয় সময় গত ১৮ জুলাই পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলি পার্কে জড়ো হন প্রবাসীরা। এরপর দিন ১৯ জুলাই একই ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষকরা।
একই দিনে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে, পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, বিবিসি কার্যালয়ের সামনে ছাড়াও লুটন, ম্যানচেস্টার, নিউক্যাসল, অক্সফোর্ড, এডিনবরাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেন প্রবাসীরা।
তবে যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় গত ২২ জুলাই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয় ঐতিহাসিক ট্রাফালগার স্কয়ারে। এদিন প্রবাসীরা দেশটির পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনেও বিক্ষোভ করেন।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (২৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।
এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এরপর থেকেই সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেন। কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নানা স্থানে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধীরা। ঢাবি ছাড়াও বিক্ষোভ হয় জাবি, জবি, রাবি, সাত কলেজসহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন কলেজে।
পরবর্তীতে নানা ঘটনার মধ্যদিয়ে এ বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়।
মন্তব্য করুন