বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতির সকল অর্জন ও এগিয়ে যাওয়া এখন অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছে। জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের সর্বশেষ চিহ্নকে মুছে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে ডামি আওয়ামী সরকার জনগণের ওপর ফ্যাসিবাদী অত্যাচারের প্রকোপ দিনকে দিন বৃদ্ধি করছে। আর এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে গুম, কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
‘২৬ জুন নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ জুন) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বাণীতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে আমি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নির্যাতিত ব্যক্তি, জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ ও ভাষাগত সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন দেশের স্বৈরশাসক, নিষ্ঠুর একনায়ক এবং একদলীয় শাসনের দ্বারা মানুষ দমনপীড়নের শিকার হচ্ছে এবং এখনো হচ্ছে। বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, মানবমুক্তি প্রগতির আদর্শ দেশে দেশে কোনো না কোনো নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকের দ্বারা ভূলুণ্ঠিত। দুনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে চলছে রক্তক্ষয়ী সংজ্ঞা। স্ফীতকায় ক্ষমতাবানদের দ্বারা গড়ে ওঠা বেআইনি অনৈতিক সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণেও চলছে সমাজে রক্তারক্তি ও হানাহানি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভিন্ন মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করতে অসহিষ্ণু স্বৈরশাসক কিংবা হিংসাকাতর অগণতান্ত্রিক দল চালাচ্ছে নির্দয় অত্যাচার। যেহেতু জনগণের নিকট সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেহেতু গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় দুঃশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে কব্জা করার অপচেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তারা সরকারি জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, পঙ্গু হচ্ছেন, অথবা পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের শিকার অথবা মৃত্যুবরণ করছেন। বাংলাদেশে আমরা এখন এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের অন্ধকারের মধ্যে বাস করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট মামলায় আক্রশমূলকভাবে ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়ে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে। কারাবন্দি অবস্থায় সুচিকিৎসার অভাবে তার জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়েছে। তিনি এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিদ্যমান নৈরাজ্যের বাতাবরণ দূরীভূত করতেই হবে।
তিনি বলেন, আমি নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবসে দেশের গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু বন্ধ করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তাদের নিরাপত্তার সুরক্ষা দিতে হবে। বিদ্যমান দায়হীনতা ও বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য করুন