বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর নির্মমতা চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে এ কথা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, হৃৎপিণ্ডে ‘পেস মেকার’ বসার পরে খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ রয়েছে। সকাল পর্যন্ত আমি যতটুকু জানি, গতকালকে তাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে… তা করার কথা না। তিনি সিসিইউতে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা এডজাস্ট করতে পারেন না, যে কারণে সিসিইউর ফ্যাসিলিটিজগুলো কেবিনে নিয়ে তাকে শিফট করা হয়েছে। সেখানে তিনি এখন পর্যন্ত স্ট্যাবেল আছেন।
গত রোববার এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার জন্য অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তার হৃৎপিণ্ডে ‘পেস মেকার’ বসানো হয়। খালেদা জিয়ার হৃৎরোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে তিনটি ব্লক থাকায় আগে একটা রিং পরানো হয়েছিল। পরে বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে পেস মেকার বসানো হয়।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের মূল লক্ষ্যটা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। আপনারা জানেন, দুই বছর একটা পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া, সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বারবার চেষ্টা করার পরেও সেখানে ভালো চিকিৎসক পাঠানো হয়নি। পরে যখন তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো সেখানেও তিনি সুষ্ঠু চিকিৎসা পাননি। এরপর যখন তাকে বাসায় (গুলসানের ফিরোজা) নিয়ে যাওয়া হলো সেটাও আবার শর্ত সাপেক্ষে যে, তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে। তখনই তার ধরা পড়ল লিভার সিরোসিস।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমরা কম চেষ্টা করিনি। সরকারের এখানে কোনো কৃতিত্ব নাই। আমরা এখন পর্যন্ত যেটুকু করেছি সেটুকু হচ্ছে তার পরিবার এবং দলের চেষ্টাতেই সেটা হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন হোপকিংস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাক্তারদের নিয়ে এসেছি। তারা যে প্রসিডিউর করেছেন সেই প্রসিডিউরে তিনি এখন পর্যন্ত টিকে আছেন। এটা কোনো সমাধান নয়। একমাত্র সমাধান হচ্ছে তার লিভার ট্রান্সপারেন্ট করা। তার যে অনেক অসুখ আছে সেই অসুখের জন্য তাকে এমন চিকিৎসা সেন্টারে পাঠাতে হবে সেখানে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে অন্যান্য অসুখগুলো কনট্রোল করে…এটাই আমরা বারবার করে বলছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী। সরকার তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে দেশনেত্রীকে হত্যার উদ্দেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
মন্তব্য করুন