জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইএমএফ এবং ধনবাদী অলিগার্কদের জয় হয়েছে, হেরে গেছে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ। মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, দুর্বল বিনিয়োগ ও খেলাপি ঋণের কোনো সুরাহা এ বাজেটে হয়নি। এই বাজেট সরকারের ডামি ও চুরি নীতির ধারাবাহিকতা মাত্র।
সোমবার (১০ জুন) এক প্রতিক্রিয়ায় আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির নেতারা এই মন্তব্য করেন। পাশাপাশি আদালতকে ব্যবহার করে কোটা পুনর্বহালের মাধ্যমে সরকার আবারও নোংরা খেলা শুরু করেছে বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দলটি।
দুর্নীতি, কালোটাকা ও ঋণখেলাপিবান্ধব বাজেট প্রত্যাখ্যান ও বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাজধানীর বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য দেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও সহকারী সদস্যসচিব ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির আলতাফ হোসেইন, এম আমজাদ খান, যুবপার্টির শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, হাদিউজ্জামান খোকন, মহানগর উত্তরের সেলিম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছে তাতে দুই তৃতীয়াংশ সরকারের বেতন ও বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে খরচ হয়ে যাবে। এই বাজেটে খরচের সবচেয়ে বড় খাত হলো বৈদেশিক ঋণপরিশোধ খাত। উন্নয়নের যে বাজেট রাখা হয়েছে সেটা পুরাটাই ঋণ নির্ভর। দেখে মনে হচ্ছে সরকার আইএমএফ থেকে তৃতীয় কিস্তি সুরক্ষিত করতে মরিয়া, ডলারের রিজার্ভ এবং পেমেন্টের ভারসাম্যের ওপর চাপ কমাতে সে দিশাহারা। প্রস্তাবিত বাজেট ঋণ ও ঘাটতি ভিত্তিক হওয়ায় এর ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চাওয়া ছাড়া তার আর কোনো বিকল্প নেই। এভাবে ঋণ নির্ভর ঘাটতি বাজেট চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছর পর দেখা যাবে করের সব টাকা দিয়েও ঋণ শোধ করা যাবে না এবং ঋণ করে ঋণের সুদ শোধ করতে হবে। অর্থাৎ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে দেশ দেউলিয়া হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই স্বৈরাচারী শাসনের অবিরাম লুট ও লুণ্ঠন এভাবে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেশকে চিরস্থায়ী ঋণের ফাঁদে ফেলে দিচ্ছে। বক্তারা বলেন, বৈধ আয়কর দাতাদের সর্বোচ্চ কর ৩০ শতাংশ আর অবৈধ কালোটাকার মালিকদের কর ১৫ শতাংশ করা সরকারের কৌশলগত ডামি ও চুরি নীতির ধারাবাহিকতা। নিজস্ব লোককে দিয়ে তারা যেভাবে বিরোধীদল বানিয়েছে তেমনি দলীয় লোকদের দুর্নীতি-লুটপাটের কালো টাকাকে বৈধ করে দেওয়ার এটা একটা নির্লজ্জ পদক্ষেপ। এই বাজেট বাস্তবায়িত হলে মূল্যস্ফীতি কমার বদলে আরও বাড়বে, দরিদ্র পরিবার বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত থাকবে।
নেতারা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর নৃ-গোষ্ঠী ছাড়া অন্য কোনো ধরনের কোটার ব্যবস্থা রাখা হবে সংবিধানের লংঘন ও রাষ্ট্রের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। মুক্তিযুদ্ধের পোষ্য কোটাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকারের অপমাণ এবং স্বাধীনতার মৌলিক অঙ্গীকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
মন্তব্য করুন