আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে লুটপাট বন্ধ করার জন্য, লুটপাট করতে নয়।
রোববার (৯ জুন) ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগিতা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, কালোটাকা সাদা করেছেন সাইফুর রহমান ও খালেদা জিয়া। তাহলে তারাও কি দুর্বৃত্ত। বিএনপি আমলে লুটপাটকারীদের বিচার হয়নি। আওয়ামী লীগের আমলে কেউ দুর্নীতি করে পার পাবে না। কেউ লুটপাট করছে, দুর্নীতি করছে প্রমাণ পেলে সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আগুন সন্ত্রাসের যে সংস্কৃতি চালু করেছে, এর বিরুদ্ধে জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের অবশ্যই শান্তি সমাবেশ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে। রাজপথে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিরোধীরাও বসে নেই, তারাও কর্মসূচি দেবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যে কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে তা সফল করার জন্য সকল পর্যায়ের নেতাদের অফিসমুখী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাজেটটা করা হয়েছে রাঘববোয়ালদের লুটপাট বন্ধ করার জন্য। বিএনপি আমলে যে লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, তা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লুটপাট করে কেউ এখানে পার পাবে না। নিজের লোকদের শায়েস্তা করার সাহস বিএনপির নেই।
দুর্নীতিবাজদের ধরতে নতুন কোনো আইন দরকার হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আইন আছে, আইন নতুন করে করতে হবে না। নেত্রী যেটা বলেছেন সেটা আমিও বলব। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এতে অনেক রুই-কালতা ধরা পড়বে।
সীমান্ত এলাকায় হত্যার মহোৎসব চলছে বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, বিএনপির আমলে তো এটা আরও বেশি হয়েছিল। কিন্তু এটা যে মহোৎসব বা উৎসব এটা তো বলা যায় না। কোনো ঘটনা ঘটলেই কিন্তু দুই দেশ একসঙ্গে বসছে, আলাপ-আলোচনা করছে। এর পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থাও নিচ্ছে। হত্যার উৎসব বা মহোৎসব এইগুলো বিএনপির আবিষ্কৃত শব্দ। তারা নিজেরা যা চর্চা করেছে এখনো মনে করে তাই হবে।
নিজের লোককে শায়েস্তা করার সাহস বিএনপির নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বুয়েটে সনি হত্যার বিচার কে করেছে? আর আবরার হত্যায় যে কয়েকজন মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে সবাই ছাত্রলীগ বলে পরিচিত। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার কি হয়নি? তারা তাদের সময় তাদের দলীয় কোন নেতার একটা বিচার করেছে? আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, এসপি কোহিনূর এদের বিচার কে করেছে? বেনজীর, আজিজ সাহেবেরা দুর্নীতি করলে ছাড় পাবেন না। তারা আওয়ামী লীগের লোক নন। একজন পুলিশ অফিসার আরেকজন সেনা অফিসার। কথা হচ্ছে দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পেয়েছে কি না? যেটা বিএনপি করেছে। আমরা ইম্পিউনিটি কালচার গড়ে তুলিনি।
এ সময় আমেরিকা ও ইসরায়েলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা সবাই চোখেও দেখি না, কানেও শুনি না। আমরা সবাই যেন বধির হয়ে গেছি। ৯ মাস পরে ৪ জন হোস্টেসকে উদ্ধার করল, তাতে মনে হচ্ছে বিশ্বনেতা যেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল সব মিডিয়া তাকে একজন মহামানব বানিয়েছে। আর বাইডেন সাহেব ফ্রান্সে বসে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। নেতানিয়াহু প্রশংসাজনক কাজ করেছেন সে জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবী সাক্ষী, শেখ হাসিনা ছাড়া একজন রাষ্ট্রনেতা বলবেন না ২১৩ জন সিভিলিয়ান শিশু, নারীসহ হত্যা করে চারজনকে উদ্ধার করেছে। এই ২১৩ জনের কথা বলার কি কেউ নেই? এই শিশুদের কী অপরাধ? এরা কি হামাস? এই সিভিলিয়ান হত্যার বিচার কি হবে না? একটা কথাও বলেন নাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আর আমাদের আরব বিশ্ব মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল জোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
মন্তব্য করুন