প্রস্তাবিত বাজেটকে সংবিধানবিরোধী আখ্যা দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, এ বাজেট ঘুষ-দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। এ বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়, লুটেরাদের জন্য।
শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক গণবিক্ষোভ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি। আজিজ-বেনজীরসহ দুর্নীতিবাজ-লুটেরা এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, বিএনপি কার্যালয়, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, দুর্নীতি রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে নির্বাচন, ভোট, গণতন্ত্র না থাকায় জবাবদিহিতাহীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সরকারের জবাবদিহিতা না থাকায় দুর্নীতি এখন স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বলতে গেলে দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ বের করতেও ঘুষ দিতে হয়। সরকারি এমন কোনো দপ্তর-অফিস নেই যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি নেই। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে আজিজ-বেনজীরদের তৈরি করেছে। এখন তাদের দায় নিতে চাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজিজ-বেনজীররা তাদের লোক না। অথচ আজিজ-বেনজীরদের তারাই প্রমোশন দিতে দিতে সেনাপ্রধান, পুলিশপ্রধান বানিয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই যে বাজেট দিয়েছে সেখানে বৈধ আয়ে কর দিতে হবে ৩০%, আর লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ আয়ে দিতে হবে ১৫%। এভাবে সরকার লুটেরাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এই বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য নয়- এ বাজেট আজিজ, বেনজীর, সালমান এফ রহমান, এস আলমের মতো লুটেরাদের জন্য। সংবিধানের ২০নং অনুচ্ছেদে আছে অনুপার্জিত আয় কোনো ব্যক্তি ভোগ করতে পারবে না। তাহলে এক কথায় এই বাজেট ঘুষ-দুর্নীতিকে উৎসাহিত করার সংবিধানবিরোধী বাজেট।
তিনি আরও বলেন, ’৫২, ’৬৯ ও ’৭১ এমনকি দেশ স্বাধীনের পর ’৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন; ইতিহাসের সমস্ত আন্দোলন-সংগ্রাম তরুণদের কারণে জয়ী হয়েছে। আজকের এই দুর্নীতিবাজ-লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবকদের জেগে উঠতে হবে। ছাত্র-যুবক-তরুণরা জেগে না উঠলে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের পরিবর্তন হবে না। তাই ছাত্র এবং যুব অধিকার পরিষদকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সারা দেশে জনগণকে সংগঠিত করতে হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, আজিজ-বেনজীর এই সরকারের সৃষ্টি। আজকে কোথায় বেনজীর? দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ক্ষমতা হারালে আওয়ামী লীগের লুটেরারাও এভাবে দেশ ছেড়ে পালাবে।
প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বাজেট ঋণনির্ভর। বিদুৎ, জ্বালানি খাতে ভর্তুকির বদলে উল্টো দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ নেই। এই বাজেট মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। আমরা এই আজিজ-বেনজীরবান্ধব বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হিরনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেনর সঞ্চালনায় গণবিক্ষোভে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব নেতা ওবায়দুল হোসেন শুভ, জাহিদুল ইসলাম আপেল, জিহাদ হোসেন মিঠু, রাজিব শাহ, শেখ মো. মুনায়েম, শফিকুল ইসলাম শোভন, ছাত্রনেতা সম্রাট প্রমুখ।
মন্তব্য করুন