বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। আজকে দেশের ব্যাংকগুলো লুট হয়ে গেছে। অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। এসব সংকটের সমাধান করতে হলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
শনিবার (১ জুন) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) একটি মিলনায়তনে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন।
বৈঠকে ‘জাতীয় সংকট : উত্তরণের উপায়’- শীর্ষক একটি লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, ইসলাম বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও, দেশ বাঁচাও- আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসা জুলুমবাজ সরকার পতনের জন্য ময়দানে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। খেলাফত মজলিস আয়োজিত ‘জাতীয় সংকট : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী ও অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, খেলাফত মজলিস নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মাওলানা আবু তাহের জেহাদী, ঢাকা সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, ডেইলি নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, শাইখুল হাদীস পরিষদ সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মুসলিম লীগ মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী একেএম বদরুদ্দোজা, সাবেক সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট শেখ রেজাউল করিম, নেজামে ইসলামী পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
বৈঠকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, লড়াই ছাড়া কোনো কিছু অর্জন হয় না। জালিমের সঙ্গে কোনো আপস হবে না। পাতানো নির্বাচন দিয়ে এই সরকারের পতন হবে না। আন্দোলনের ডাক দিতে হবে। ময়দানে ঐক্য হবে।
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, জাতীয় সংকটের শুরু ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নির্বাচন বানচালের মধ্য দিয়ে। এই সংকট দেশের বাইরে থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করতে বাইরের শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। এই অবস্থা থেকে দেশ ও জাতীকে মুক্ত করতে হবে।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। ব্যাংকগুলোতে আওয়ামী লোক নিয়োগ দেওয়ার কারণে লুট হয়ে গেছে। আমাদের আহ্বানে নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি। এটা বিরোধী শক্তির বড় বিজয়। পরনির্ভরশীল এই সরকারকে এ মুহূর্তে হটাতে হবে।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, কালক্ষেপণ না করে আন্দোলনের যথাযথ কর্মকৌশল ঠিক করে এগোতে হবে। সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব পরিহার করতে হবে।
নুরুল হক নুর বলেন, দেশের প্রধান সংকট রাজনৈতিক। সেখান থেকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিসহ সব সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নৈতিক মূল্যবোধ বিবর্জিত জনগোষ্ঠী সৃষ্টি হচ্ছে। ভারত কখনো বাংলাদেশের ভালো বন্ধু ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। আলেম-উলামাদের পক্ষ থেকে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ডাক আসতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফি, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, মাস্টার আবদুল মজিদ, মাওলানা শেখ মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. রিফাত হোসেন মালিক, প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, ডা. আবদুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জহিরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান, ডা. বোরহান উদ্দিন সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট শায়খুল ইসলাম, মাওলানা মুশাহিদ আলী, অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আহমদ বিলাল, সাইফ উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মাওলানা নেহাল আহমদ, আবুল হোসেন, প্রিন্সিপাল মাওলানা আজিজুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন