ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ও হাইব্রিড দিয়ে পকেট কমিটি করায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব ত্যাগীদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দেওয়ার জন্য পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিলেও গা করছেন না ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার (২৯ মে) গভীর রাতে নগর দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের দীর্ঘ দেড় বছর পর এ কমিটি ঘোষণা করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুগতদের স্থান দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পদবঞ্চিতরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রকাশ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এমনকি অতীতে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও অনেকে পেয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদ।
২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর মেহের আফরোজ চুমকি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন শবনম জাহান শিলা। একই দিন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে শাহেদা তারেক দিপ্তি ও সাধারণ সম্পাদক হাসিনা বারী চৌধুরী এবং দক্ষিণের সভাপতি হিসেবে সাবেরা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পারুল আক্তারের নাম ঘোষণা করা হয়।
মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা কালবেলাকে বলেন, অনিয়মের কথা শুনেছি। আমরা ইতিমধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। এখন দেখি তারা কি ব্যবস্থা নেয়। অনিয়ম ধরা পড়লে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
সূত্র জানায়, নব গঠিত কমিটির সহসভাপতি রুবি খাতুন, শেফালী মল্লিক, রাশিদা পারভিন রুমা, তৌহিদা, শেখ আখতারী বেগম কোনোদিন মহিলা লীগ তথা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক মুসলিমা খাতুন, শাম্মি লিয়াকতও রাজনীতিতে নবাগত। সাংগঠনিক সম্পাদক গীতা এতবর ও সাবেরা রিয়াও রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় নয়। দপ্তর সম্পাদক পদে নুসরাত জাহান সুমিকে দায়িত্ব দেওয়ায় অতীতে মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা না থাকায় এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একই কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা বেগমের ভাগ্নি সারমিন আক্তার শিপ্রাকে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে স্থান দেওয়া হয়েছে। একই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবার মেয়ে সাবরিনা হুমায়ুনও। শিপ্রার বিরুদ্ধে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও শিক্ষা সম্পাদক শাহানাজ পারভিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক দিলারা জামান, কোষাধ্যক্ষ রাহিমা ইসলাম, ধর্ম সম্পাদক নার্সিস আক্তার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক রাহিমা আহমেদ, সদস্য আফসা আহম্মেদ সানু, রুনা বেগম হাইব্রিড বলে অভিযোগ রয়েছে। বীণা আফরোজ ও কোহিনূর বেগমের বিরুদ্ধেও নানান অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিগত কমিটির অন্তত ডজনখানেক ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আক্রশের শিকার হয়েছেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পারুল আক্তার কালবেলাকে বলেন, প্রকাশিত কমিটি বাতিল ও পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ নেই। কেন্দ্র যদি কলেবর বৃদ্ধি করতে বলে, তখন দেখা যাবে। আমরা তো কমিটি কেন্দ্রের অনুমতি নিয়েই দিয়েছি, এখন কেন একথা বলবে? নবীন-প্রবীণ মিলিয়েই কমিটি করা হয়েছে। আর কমিটি দিলে এ জাতীয় অভিযোগ আসেই।
মন্তব্য করুন