সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল অব. আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদসহ ভারতে হত্যাকাণ্ডের শিকার এমপি আনারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাম জোটের নেতারা বলেছেন, এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি ও রাজনীতির চেহারা যতটুকু ফুটে উঠেছে তা ভয়াবহ। বর্তমান সরকারের নীতি ও উপরের মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এ ধরনের ঘটনা একেবারেই অসম্ভব। বুধবার (২৯ মে) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয় বাম জোটের সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, কমিউনিস্ট লীগের আব্দুস সাত্তার, মোশারফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর তসলিমা আক্তার বিউটি উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আজিজ-বেনজীর-আনারসহ এ পর্যন্ত যাদের নামে দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ উঠেছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হয়। সভায় টাকা পাচারের সাথে জড়িত, ঋণখেলাপি ও কালো টাকার তালিকা এবং শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান নেতারা।
সভায়, পাচারের টাকা ও খেলাপি ঋণ উদ্ধারে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয় এর সঙ্গে জড়িত এবং এসব ঘটনার প্রশ্রয়দাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
নেতারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোচনে বর্তমান ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা, কালো টাকা-পাচারের টাকা-খেলাপি ঋণ উদ্ধার, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ করা, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প ও বিলাস দ্রব্য আমদানি বন্ধসহ জনস্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা দেখলাম বাজেটের আগে সরকার সাধারণ মানুষের সাথে, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করল না। তারা ব্যবসায়ী ঐ লুটেরাদের সাথে কথা বলে, তাদের স্বার্থেই বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।
সভায় চলমান কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের অবসান, পাচারের টাকা-খেলাপি ঋণ-কালো টাকা উদ্ধার-দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সারা দেশে রেশন ব্যবস্থা চালুসহ মানুষের চিকিৎসা-শিক্ষা-অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নিশ্চয়তা বিধানের দাবিতে গণআন্দোলন-গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এ ছাড়া দুঃশাসনের অবসান ও জনমনের সংকট মোচনের দাবিতে আগামী ৮ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়েছে বাম জোটের বৈঠক থেকে।
মন্তব্য করুন