কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৪, ০২:১২ পিএম
আপডেট : ১৮ মে ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীকে রেখে বিদেশ গিয়ে বসে থাকিনি : সাঈদ খোকন

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ছবি : কালবেলা
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ছবি : কালবেলা

আমি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, আমার সময়ে ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ব্যাপক হারে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। কিন্তু আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালীন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি। আমি অন্তত ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীকে রেখে বিদেশ গিয়ে বসে থাকিনি।

শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সকাল ১০টায় মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

এ সময় তিনি মেয়র থাকাকালে ডিএসসিসি যেসব সফলতা অর্জন করেছে তা ফের নগরবাসী ও গণমাধ্যমে সামনে তুলে ধরেছেন। এ ছাড়া ২০১৯ ও ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বক্তব্যের সঠিক তথ্য তুলে ধরেন এই সংবাদ সম্মেলনে।

এর আগে গত ১৫ মে মালিবাগ মোড় সংলগ্ন উড়ালসেতুর নিচে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ৪২ হাজার কম ছিল।

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। গতবছর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ২০১৯ সালকেও ছাড়িয়ে যাবে। আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমাদের মশককর্মী, যান-যন্ত্রপাতি, মানসম্পন্ন কীটনাশক মজুত ও কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। রোগীদের ঠিকানার ৪০০ গজের মধ্যে বিশেষ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন জায়গা ও স্থাপনায় আমাদের মশককর্মীরা কাজ করেছে। ফলে সফলতার সঙ্গে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলেই ২০২৩ সালে উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার।

সুতরাং, ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। এ বছরও সবার সহযোগিতায় ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব, ইনশাআল্লাহ। বর্তমান মেয়রের এমন বক্তব্যের পরই ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সংবাদ সম্মেলনে এসে তার মেয়র থাকাকালীন উন্নয়েন কার্যক্রম তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ঢাকাসহ সারাদেশে এক লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭৯ জন মারা যান। তারপরও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছি। যদিও ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দেশের ইতিহাসে অতীতের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকাতেই এক লাখ ১০ হাজার আটজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। একই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৯৮০ জন মারা যান।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য এবং সংসদীয় স্থানীয় সরকার বিষয়ক কমিটির সদস্য। সেহেতু সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রের সমালোচনা আমি যত্রতত্র করতে পারি না। যেহেতু বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের সরকারের মনোনীত মেয়র, আমার একটা ফোরাম আছে সেখানে আমি বর্তমান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও তার মেয়রের বিষয় মতামত দিতে পারি। তবে আমি আমার মেয়র থাকার সময়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমার ভূমিকা ও কাজ তুলে ধরতেই পারি জনগণের সামনে।

তিনি আরও বলেন, আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র থাকাকালীন সময়ের হয়তো আহামরি ট্যাক্স ভ্যাট আদায় করতে পারিনি। কিন্তু নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে চেষ্টা করেছি। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনদুর্ভোগ কমানো ছিল আমার মূল দায়িত্ব। রাজস্ব আদায় বা সিটি টোলের নামে রিকশা, সিএনজি, সবজি বহনকারী ট্রাক-লড়ি থেকে চাঁদাবাজি করার কোনো ধরনের ইচ্ছা বা চেষ্টা আমার ছিল না। মেয়র থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এখন জাতীয় সংসদের ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে আমার যতটুকু কথা বলার কথা আমি তা বলেছি বর্তমান সংসদে। আমি সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করার সুপারিশ করেছি, আমি পরিবেশমন্ত্রীকে বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করে আবারও তার স্বাভাবিক চেহারায় ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করার অনুরোধ করেছি। আমি আমার বাবা মেয়র হানিফের দেখানো পথে হাঁটছি ঢাকাবাসী হয়ে কাজ করার জন্য।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি ক্ষমতায় এলে ক্রীড়াঙ্গনে রাজনীতিকরণ হবে না : আমিনুল হক 

আইইউবিএটির ইইই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি ঘোষণা

জেতার সুযোগ সিলেটের, শঙ্কায় চট্টগ্রাম

চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ

টাস্কফোর্সসহ ভোক্তা অধিকারের বাজার তদারকি

ছেলেদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন জ্যোতিরা : হাবিবুল বাশার

হজ এজেন্সিগুলোকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা 

চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে লক্ষ্মীপুরে মিছিল

শাহবাগ থেকে ফিরেই ঋণের লোভ দেখানো সংগঠকের বাড়ি ঘেরাও

‘আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ চালচলনের এক অসাধারণ মানুষ ছিলেন’

১০

ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণা 

১১

চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ

১২

গর্ভধারণের নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণার খেলা

১৩

সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সহিংসতা প্রতিরোধ নিশ্চিত করার আহ্বান

১৪

চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পূজা পরিষদের উদ্বেগ 

১৫

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম আক্রমণের মুখে : নোয়াব

১৬

সমন্বয়কদের বৈঠকে যাচ্ছে না কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ

১৭

আইপিএলে দল পেলেন ১৩ বছরের বৈভব

১৮

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা সেন্ট গ্রেগরি স্কুল 

১৯

ওয়ালটন ডেস্কটপে বিশাল মূল্যহ্রাস, অনলাইন অর্ডারে আরও ১০ শতাংশ ছাড়

২০
X