আসন্ন বাজেটে খাদ্য-কাজ-চিকিৎসা-শিক্ষা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ সুনিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়ে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, একই সাথে ওই বরাদ্দের টাকা যাতে সংশ্লিষ্টদের জন্য দুর্নীতি, দলবাজি ও স্বজনপ্রীতি ছাড়াই খরচ হয়; সেই ব্যবস্থাই করতে হবে।
পাশাপাশি পাচারের টাকা ফেরত আনতে বাজেটে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তারা বলেন, শীর্ষ খেলাপিদের নাম প্রকাশ ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হতে পারে।
বুধবার (১৫ মে) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত ‘বাজেট: গণমানুষের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা অংশ নিয়ে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। পুরানা পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
এতে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেছেন, বাজেটের আগে সরকার ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বড়লোকদের সাথে সংলাপ করে। যারা দেশের টাকা পাচার করছে, ব্যাংকের টাকা নিয়ে শোধ করে না তাদের সাথে সংলাপ করে। অথচ দেশের অর্থনীতির চাকা যারা সচল রেখেছে সেই শ্রমজীবী মানুষের সাথে সংলাপ করে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। সূচনা আলোচনা করেন, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ। বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কৃষক আব্দুল বাতেন, শ্রমিক সোমা আক্তার, আব্দুল কুদ্দুস বস্তিবাসী কুলসুম বেগম, খেতমজুর তাজু মিয়া, রাখি ম্রং, প্রজ্ঞা পারমিতা, প্রীতম দাস, শিক্ষক এস এম সুমন, সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি বিমল মজুমদার, ডাক্তার এম এ সাঈদ, ডাক্তার ফারুকী ও বিশিষ্ট লেখক রাজনীতিক মোস্তাক আহমেদ।
অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, বাজেট যেহেতু সরকারের সামষ্টিক আয়-ব্যয়ের হিসাব, সে জন্য বাজেটে অর্থনৈতিক বাস্তবতা, সরকারের শ্রেণিগত পক্ষপাতিত্ব ও উন্নয়ন দর্শনের গতিমুখের একটি প্রতিফলন অনিবার্যভাবে প্রতিফলিত হয়। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে দুটি সংকট প্রধান: বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিকভাবে উঁচু এবং ডলারের ক্রমবর্ধমান মূল্যের সমস্যা।
তিনি বলেন, বর্তমানে ঋণখেলাপি ও টাকা পাচারকারীরা ক্ষমতা কাঠামোয় যে রকম শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে গেছেন, তাতে তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনা না গেলে সরকারি বাজেটের আয় দিয়ে ব্যয় সংকুলান করা যাবে না। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও কি পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে? সম্প্রতি ক্ষমতাসীন সরকারের ঘনিষ্ঠজনই বলতে শুরু করেছেন যে, “বিদেশে অর্থ পাচারের সিংহভাগই (শতকরা ৯০ ভাগ) ঘটছে ব্যাংকিং চ্যানেলে। শুধু ২০২২-২৩ অর্থবছরেই ১৪ হাজার ১০৬টি সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য মিলেছে যা আগের বছরের তুলনায় শতকরা ৬৫ ভাগ বেশি।
মন্তব্য করুন