গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আগামীতে দেশের ‘দিশাহীন’ রাজনীতির নেতৃত্ব দিবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম।
শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের উদ্যোগে এক সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেনি তিনি।
হাসনাত কাইয়ূম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় রয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অচিরেই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করবে এবং একটি জনগণের সরকার ও রাষ্ট্র কায়েম করবে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে সদ্য যোগদানকৃত নেতা-কর্মীদের সম্মানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে যোগদানকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সাবেক সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, রাজনীতিক ও পরিবেশ কর্মী ফরিদুল ইসলাম, রেল, নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি রৌমারী শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম শামসুল আলম, কুড়িগ্রামের রৌমারির শৈলমারি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিনু, নারীনেত্রী মনোয়ারা রহমান, কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম সাজু, নাট্যনির্মাতা নিয়াজ মাহমুদ, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের জামালপুরের অনিছুর রহমান, ঢাকার আওলাদ হোসেন, পাবনার মিল্টন চৌধুরী, বগুড়ার হাবীবুর রহমান অনিক, মো. শাহিন হোসেন ও শিপন আহমেদ, সাতক্ষীরার আলমগীর হোসেন, চট্টগ্রামের সাজিদুর রহমান রিংকু, ২৮ অক্টোবর পুলিশি হামলায় আহত মো. ইয়াকুব হোসেন, শ্রমিক নেত্রী মিলি বেগম প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন হাসনাত কাইয়ূমের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নতুন যোগদানকারী সদস্য হাবিবুর রহমান রিজু বলেন, বাংলাদেশ আজ দিশাহীন। জনগণ আজ হতাশ। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন একমাত্র সংগঠন যারা আশা দেখাচ্ছে, তাদের কোনো কায়েমি স্বার্থ নেই। তাই আমি এই দলে যোগ দিয়েছি। একসঙ্গে কাজ করে আমরা রাষ্ট্র সংস্কার করব ইনশাআল্লাহ।
পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠক এবং নতুন যোগদানকারী ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রাণ-প্রকৃতির সর্বনাশ করছে সরকার। নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। রক্ত দেব, তবু নদী মরতে দেব না। রাষ্ট্র সংস্কারকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
রৌমারির শৈলমারি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিনু বলেন, দলগুলো ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, গোষ্ঠীর সীমানায় আবদ্ধ। ২০ কোটি মানুষকে ধারণ করার মতো গণতান্ত্রিক কোনো দল বাংলাদেশে নেই। দেশে বর্তমানে দুঃশাসন চলছে। এই অবস্থা বেশিদিন চলতে দেব না আমরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আজ ব্যর্থ হতে চলেছে। তাই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে তরুণদের। শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এই সংগ্রামে থাকব।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন বলেন, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ডামি সরকারকে বিদায় করব। জনগণের প্রতিনিধিই দেশ চালাবে। আজকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সেই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের সহ-সভাপতি সোহেল সিকদার, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দীন, জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য রাজশাহী বিভাগের সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ জামাল কাদেরী, চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ মহিউদ্দিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় দলের প্রধান কার্যালয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আগামী ২৯-৩০ নভেম্বর দলের প্রথম জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন