হাসপাতালে জরুরি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
এর আগে, লিভার জটিলতায় মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে জরুরি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বুধবার (১ মে) দিবাগত রাতে খালেদা জিয়াকে বসুন্ধরার ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন তখন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘কিছু জরুরি পরীক্ষার জন্য ম্যাডামকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে ওনাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।’
ডা. জাহিদ বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে জানান, বুধবার রাতে ম্যাডামের বেশ কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসাসেবা দেন।
জানা গেছে, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।
সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে সিসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই দফায় তিনদিন হাসপাতালে থাকার পর গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।
গত বছরের অক্টোবরে মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। এরপর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আবারও বিদেশ নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে। তবে আইনে সে সুযোগ না থাকায় এ অনুমোদন দেয়নি সরকার। এ চেষ্টার মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার পাশাপাশি বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনেও তার চিকিৎসা করানো হয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। ওই সময়ে তিনি নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।
মন্তব্য করুন