জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘ক্ষমতা’ এবং ‘রাষ্ট্র’ কারও ব্যক্তিগত বা নিজস্ব সম্পত্তি হতে পারে না। জালিয়াতিপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের ওপর জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রকে এখন দল বা ব্যক্তির সম্পত্তিতে পরিণত করা হয়েছে। এই আত্মঘাতী রাজনীতির মূল উৎস হচ্ছে আমাদের বর্তমান সংবিধান। সমাজের সব অংশের বিশেষ করে উৎপাদন, উন্নয়ন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে জড়িত মানুষদের রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামের পর আজও শ্রমজীবীসহ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবনধারার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ঐতিহাসিক মে দিবস উপলক্ষে বুধবার (১ মে) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জেএসডির এই সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ইতিহাসের মূল চালিকা শক্তি বা মানব ইতিহাসের প্রকৃত রূপকারকে উপেক্ষা করে কোনো রাষ্ট্র বা সমাজ বিকশিত হতে পারে না। সমাজ বিকাশের ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে কোনো ব্যক্তির ইচ্ছায় নয়, ইতিহাস হলো উৎপাদন ব্যবস্থায় দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের বিকাশের ফলশ্রুতি। শ্রমশক্তি ও মেধা প্রয়োগের মাধ্যমেই জন্ম নেয় সমাজ বিকাশের ধারা।
শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, বিদ্যমান অসাম্য ও দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনে এবং সমাজের সকল অংশের মানুষের অংশগ্রহণভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিক সমাজকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর মাধ্যমেই মে দিবসের তাৎপর্যকে ধারণ করা সম্ভব হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেএসডির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া বলেন, যে মুক্তির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে শ্রমিক কৃষক স্বাধীনতা-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল, সেই লক্ষ্য আজও বাস্তবায়ন হয়নি। জেএসডি শ্রমজীবী কর্মজীবী মানুষের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার দাবি করছে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, শ্রমআইন শ্রমিকদের স্বার্থে করতে হবে, কল-কারখানায় শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন মন্টু দাবি করে বলেন, শ্রমআইন যথাযথ সংশোধন করে কর্মপরিবেশ নিরাপদ করতে হবে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন, জেএসডির দপ্তর সম্পাদক কামরুল আহসান অপু, শ্রমিক জোট কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এম এ আউয়াল, আবুল হোসেন মিয়া, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাবুউদ্দিন, শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক এস এম ওমর ফারুক সেলিম, মহানগর নেতা এস এম মনিরুজ্জামান মনির, মাইনুল আলম রাজু, মোতাহার হোসেন মোল্লা, সাহাবুদ্দিন মল্লিক, সেলিম চৌধুরী, মো. বিল্লাল হোসেন, ছাত্রনেতা মো. রুবেল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে শ্রমিক জোটের পক্ষ থেকে একটি লাল পতাকা শ্রমিক মিছিল প্রেসক্লাব থেকে গুলিস্তান জেএসডি চত্বরে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন