সদ্য কারামুক্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন দলের সিনিয়র নেতারা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উভয় নেতারা বাসায় যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আব্দুল মঈন খান। তারা দুই নেতার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিন নিজানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস কারাভোগের পর গতকাল বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সেদিন বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার কেরাণীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রথমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল এবং ৪ মিনিট পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বেরিয়ে আসেন। তাদের কারাগারের প্রধান ফটকে দলের নেতাকর্মীরা ফুলের মালা ও করতালি দিয়ে বরণ করে নেন।
কর্মীরা নেতাদের ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাইয়ের ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সঙ্গে’, ‘আমীর খসরু ভাই এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সঙ্গে’, মহাসচিবের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি, খসরু ভাইয়ের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি’, ‘জিয়া, খালেদা, তারেক জিন্দাবাদ জিন্দবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
গত ২৯ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এবং ২ নভেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনাটি ছাড়া সব মামলায় তারা বিভিন্ন সময়ে জামিন পান। গত বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনার মামলায় বিএনপি এই দুই শীর্ষ নেতার জামিন মঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে দুই নেতার আইনজীবীরা বিভিন্ন মামলার জামিন আদেশ, প্রোডাকশন ওয়ারেন্টসমূহ প্রত্যাহারের আদেশসমূহ সব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পর গতকাল বিকেলে মুক্তি পান বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। সংঘর্ষকালে পুলিশ বক্স, অ্যাম্বুলেন্স ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করা হয়। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে। দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। সংঘাতে প্রাণ হারান যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লা।
মন্তব্য করুন