কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:০৫ পিএম
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সর্বনাশের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ : চরমোনাই পীর

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গোলটেবিল বৈঠক করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ছবি : কালবেলা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গোলটেবিল বৈঠক করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ছবি : কালবেলা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, অর্ধশতাব্দী আগে স্বাধীনতা অর্জন করা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ধূর্তামি থেকে দূরে থেকেছে সবসময়। শীতল যুদ্ধকালেও বাংলাদেশ নিরপেক্ষ থেকেছে। ফলে আমরা পরাশক্তির বলি হই নাই। কিন্তু বর্তমান সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে পরাশক্তির আন্তঃরাজনীতির পঙ্কিলতায় প্রবেশ করেছে। আমরা পাকিস্তান ও ইউক্রেনসহ বহু দেশের সর্বনাশ দেখেছি। বর্তমান সরকারও শুধু নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশেকে সেই ঝুঁকিতে ফেলেছে। বাংলাদেশ সর্বনাশের দিকে যাচ্ছে। আসুন আমরা দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সমন্বয়ে ‘নাগরিক মঞ্চ’ গড়ে তুলি।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে ‘জাতীয় বহুমুখী সংকট উদ্ঘাটন ও নিরসনকল্পে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় অন্য বক্তারা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণফোরামের সেক্রেটারি সুব্রত চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ইয়াকুব আলী, ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, আশরাফ আলী আকন, এলডিপির ড. নেয়ামুল বশীর, গণঅধিকার পরিষদের মিয়া মশিউজ্জামান, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, মসজিদ মিশনের ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মাদ নাসরুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী প্রমুখ।

মুফতি রেজাউল করিম বলেন, অসৎ লোভী রাজনৈতিক নেতৃত্ব, দমন-পীড়নমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি, সিন্ডিকেটকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী লুটেরাদের কবলে পড়ে বাংলাদেশ সমস্যার অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। মানুষের যাবতীয় অধিকার গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আক্ষরিক অর্থেই হত্যা করা হয়েছে। রাজনীতিকে সহিংসতা ও নোংরামির চূড়ান্ত স্তরে নিয়ে রাজনীতিকে দূষিত ও বিষাক্ত করা হয়েছে। এখানে চুপ থাকার সুযোগ নাই। আমরা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা ইউক্রেন হতে দিতে পারি না। সেজন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব; কারও সাথে শত্রুতা নয়’ নীতিতে আবারও ফেরত যেতে হবে। কোনো ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সার কারণে আমরা দেশকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বলি হতে দিতে পারি না।

তিনি বলেন, আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। সবধরনের পূর্বাবস্থা ও মতাদর্শিক অবস্থান থেকে ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। কারণ আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশ সর্বনাশের দিকে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় সমাধান হতে পারে মানবতার মুক্তির পথ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাসমুক্ত, সুখী সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্রই সকল শ্রেণি-পেশা ও ধর্মের মানুষের রাজনৈতিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর্থিক খাতকে আইন করে লুটেরাদের হাতে এবং জ্বালানি খাত বর্গীদের হাতে বর্গা দেওয়া হয়েছে। দেশে এক ধরনের স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশে দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে।

শিক্ষানীতির সমালোচনা করে চরমোনাই পীর বলেন, এই সরকার শিক্ষানীতি ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যা করেছে তাকে কেবল নির্মম গণহত্যার সাথেই তুলনা করা যায়। শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পুতুল খেলার অনিশ্চয়তাকেও হার মানিয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে এই অঞ্চলের সাথে ইসলামের হাজার বছরের সম্পর্ককে অস্বীকার করা হয়েছে। মুসলমানদের হানাদার হিসেবে দেখানো হয়েছে। ফিলিস্তিনের ইতিহাস পর্যন্ত মুছে দিয়ে সেখানে বর্বর ইহুদিদের মিথ্যা বয়ানকে সংযুক্ত করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডারের মতো অবৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন জিনিসকে সাধারণীকরণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের সংস্কৃতিকে বাংলাদেশের একমাত্র সংস্কৃতি হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিগত আন্দোলনে আমরা রাজপথে ছিলাম এখনো আছি। ইসলামী আন্দোলনসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর কর্মসূচির সঙ্গে আমাদের মৌলিক পার্থক্য নেই। সবই এক এবং অভিন্ন। কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে অকল্যাণকর সরকারকে হটাতে হবে। তবেই তো কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সেজন্য দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া যাবে না’

বৈষম্যবিরোধীরা রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে : নাছির

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা

কুয়েট উপাচার্য অপসারণের দাবিতে আলটিমেটাম, কাল থেকে আমরণ অনশন

ত্যাগ আর ভালোবাসার গল্প ‘ডক্টর আদনান’

ই-ক্লাব ঈদ রিইউনিয়নে উদ্যোক্তাদের প্রাণের স্পন্দন

গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ফেসবুক

তিন দাবিতে ‘আগামীর ভোলা’র বিক্ষোভ সমাবেশ

রাজনৈতিক পর্যায়ে সার্কের অগ্রগতি হয়নি : নেপালের রাষ্ট্রদূত

দুপুরে অভিযান, সন্ধ্যায় আ.লীগের মিছিল

১০

যুদ্ধবিরোধী ইসরায়েলি জনগণ, যুদ্ধপিয়াসী নেতানিয়াহু

১১

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা, মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

১২

সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি, নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল

১৩

আ.লীগ কার্যালয় এখন বাকরখানির দোকান

১৪

‘প্রমাণ নেই’ বলে গাজার ১৫ স্বাস্থ্যকর্মী হত্যার দায় এড়াল ইসরায়েল

১৫

এনসিসির প্রস্তাবে একমত নই : বিএনপি

১৬

এবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি হেফাজতের

১৭

ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে শহর ঘোরাল ছাত্রদল, ভিডিও ভাইরাল

১৮

সংসদ নেতা এবং পার্টি প্রধান একই ব্যক্তি না হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির বক্তব্য

১৯

জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জাতীয় পার্টির মানববন্ধন

২০
X