বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার তাদের মাথা আগেই বিক্রি করে দিয়েছে। আজকে আমরা দেখছি দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মিয়ানমারের মর্টারশেল বাংলাদেশে এসে পড়ছে। বাংলাদেশের নাগরিক মারা যাচ্ছে কিন্তু সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমরা কাউকে একটা প্রতিবাদও করতে দেখিনি। কারণ তারা তো মাথা আগেই বিক্রি করে দিয়েছে। যারা মাথা বিক্রি করে তারা সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জিয়া পরিষদের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, সরকার ক্ষমতা ছাড়ার ভয়ে আতঙ্কে আছে। এ কারণে বিএনপির শীর্ষ নেতারা কারাগারে। আর উনি (শেখ হাসিনা) তার সোনার হরিণ ধরে রাখতে চাইছেন। গণতন্ত্রকামী জনগণ, সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। কারণ উনি নতজানু, প্রভুদের সাহায্যে জনগণকে তালাক দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে আছেন। অন্য দেশের ছোড়া মর্টার শেলে নাগরিক ও বিজিবি মারা যাবে প্রতিবাদ করতে পারেননি। কারণ আপনি তো ডামি নির্বাচন করেছেন, জনগণের সঙ্গে তামাশা করেছেন। ধিক্কার জানাই আওয়ামী লীগ সরকারকে।
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, দেশের ভেতরে ইন্টার্নাল নিরাপত্তা একটা বাহিনী তৈরি করেছেন তার নাম ছাত্রলীগ। তাদের কোনো আইন নেই। শুধু বিএনপি, যুবদল ছাত্রদলের মিছিল দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা আছে। বেআইনি অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়ে তাদের ধাওয়া দেবে। যার ফল এখন সরকারসহ সাধারণ জনগণ টের পাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে নারী নির্যাতনের আশকারা দিচ্ছে সরকার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পরও প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়েনি। গত বছরের সিলেট এমসি কলেজে নারী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের এখনো কোনো বিচার হয়নি। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভয় পান শেখ হাসিনা। কিন্তু ছাত্রলীগ নারী নির্যাতন করলে তিনি কোনো কথা বলেন না। শেখ হাসিনা নারীর শ্লীলতাহানিকে অবাধ করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের জন্য।
রিজভী আরও বলেন, বিচার হয় শুধু গণতন্ত্রের কথা বললে। আজকে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদসহ বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে বিনা অপরাধে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। এ দেশে সাধারণ মানুষের কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি মানুষের মাঝে ক্ষোভের দাবানল তীব্রতর হচ্ছে, তাদের পতন অতি সন্নিকটে।
শীতার্ত ও গরিব মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণের জন্য জিয়া পরিষদকে ধন্যবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, শুধু বড় বড় প্রজেক্ট করে, টাকা আত্মাসাৎ করে উন্নত দেশে পাচার করছে সরকার। রাজনীতি হচ্ছে মানুষের সুখ-সুবিধা দেখা। যা দেখতে জিয়াউর রহমান মাইলের পর মাইল ঘুরে বেরিয়েছেন। নিজে কোদাল নিয়ে খাল খনন করেছেন। নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করে কীভাবে মানুষের পাশে থাকা যায় তা দেখিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহিল মাসুদের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন জিয়া পরিষদের মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, জাসাসের সাবেক নেতা সিরাজুল ইসলাম, ওলামা দলের সাবেক আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন