দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অপশাসন চলছে উল্লেখ করে মানুষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত বলে দাবি করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, আমরা হয়তো সরকার সরাতে পরিনি, কিন্তু লড়াই জারি আছে। রাষ্ট্রের নির্যাতন এখন এত তীব্র যে, মানুষের পক্ষে রাস্তায় নামাই কঠিন। এটা ঠিক ’৬৯ সালে মানুষ যেভাবে রাস্তায় নেমেছিলেন, একই রকম সাহসিকতার সাথে আজকে আমরা রাস্তায় নামতে পারছি না- কেন পারছি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। বর্তমান সরকারের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেকে নিরাপদে রেখে আন্দোলন করা যাবে না।
’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মান্না।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি আর ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি এক কথা নয়। আজকে রাজনৈতিক লড়াই, রুটি-রুজির লড়াই এবং সার্বভৌমত্বের লড়াই এক ও অভিন্ন হয়ে গেছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গোটা ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সকল পেশাজীবীকে সাথে নিয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষার পথ ধরে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের আহ্বায়ক ফয়জুল হাকিম লালা বলেন, একটা জালিয়াতির নির্বাচন করার জন্য পুরো রাষ্ট্র ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মানুষ এই নির্বাচন বয়কট করে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই নীরবতাকেই সক্রিয়তায় পরিণত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকার এখন লুটেরা ব্যবসায়ীদের রক্ষাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আইয়ুব খানের সময়ে ভয়-ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। আর আজ পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে।
সাকি বলেন, মওলানা ভাসানীর হাট হরতাল, শহীদ আসাদের শার্ট, সার্জেন্ট জহুরুল হক কিংবা রাজশাহীর শামসুজ্জোহার জীবন দানের ভেতর দিয়ে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল এবং স্বাধীনতার বুনিয়াদ তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেন, মানুষ যখন মরিয়া হয়ে একটি স্বপ্নের পেছনে ছোটে, অর্জন করার জন্য জীবন দেয়- তখনই তা সফলতা পায়। এ রকমই একটি লড়াই সকলে মিলে গড়ে তুলতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় এতে জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী টিপু বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন